somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাযহাব অনুসরণ করা ফরয? (দলীল ভিত্তিক ধারাবাহিক --- ৬ষ্ঠ পর্ব)

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শরীয়ত অনুযায়ী মাযহাব পালন করা ফরয কিনা তা এক লাইনে লেখা সম্ভব নয়। দলীল সহ বিস্তারিত লিখা হলে সহজে ‍বুঝা যাবে। তাই অনেকগুলো পর্ব হবে। সবগুলো পর্ব পড়ে মন্তব্য করবেন আশা করি।

৫ম পর্বের পর....................

“মুসাল্লাম” কিতাবে আছে, “যে ব্যক্তি মুজতাহিদ (মতলক্ব) নয় যদিও সে আলিম, তথাপি তার জন্য তাকলীদ অর্থাৎ কোন এক মাযহাবের অনুসরণ করা ফরয ।”

হযরত মুল্লা জিউন রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “সাধারণের জন্য আলিমগণকে এবং আলিমদের জন্য মুজতাহিদগণকে অনুসরণ করা ওয়াজিব ।”

তিনি আরো বলেন, “চার মাযহাবের কোন একটাকে অনুসরণ করা ওয়াজিব ।” (তাফসীরে আহমদিয়াত)

হযরত আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “যারা ইজতিহাদ (মতলক্ব)-এর ক্ষমতা রাখে না, তাদের জন্য কোন একজন ইমামের মাযহাবকে অনুসরণ করা ওয়াজিব ।” (জামউল জাওয়ামে)

হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “কোন এক মাযহাবের অনুসরণ করা ওয়াজিব ।” (ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন)

এছাড়াও হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি “আল মালুমা” কিতাবে, হযরত জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি “যাজিযুল মাযাহিব” কিতাবে, হযরত আল্লামা বাহরুল উলূম রহমতুল্লাহি আলাইহি “তাহরির” কিতাবে, হযরত আল্লামা ইবনে আব্দুন্ নূর রহমতুল্লাহি আলাইহি “হারী” কিতাবে, হযরত শাহ্ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি “ইকদুল জিদ” ও “ইনছাফ” কিতাবে, “তাফসীরে আযীযী” “সিফরুছ সায়াদাত” কিতাবে, “ফয়জুল হারামাইন” কিতাবে কোন এক মাযহাব অনুসারে চলা ওয়াজিব বলা হয়েছে, অন্যথায় গুণাহ্ হবে । ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “কিমিয়ায়ে সায়াদাত” কিতাবে বলেন, কোন এক মাযহাব মান্য না করলে মহাপাপী হবে ।

অতএব, ফতওয়া হচ্ছে প্রত্যেকের জন্য মাযহাব চতুষ্ঠয়ের যে কোন এক মাযহাবের অনুসরণ করা ফরয-ওয়াজিব । অন্যথায় সে ফাসিক ও গোমরাহ হবে । এ ফতওয়ার উপর ইমাম-মুজতাহিদগণ ইজমা করেছেন ।

বর্তমান মিডিলিষ্ট তথা মধ্যপ্রাচ্যের কোন কোন এলাকায় বিশেষ করে সৌদি আরবে যারা সালাফী নামে পরিচিত তারাও মাযহাব স্বীকার করেনা । বরং মাযহাবের বিরোধিতা করে থাকে । যারা মাযহাব মানেনা বা মাযহাবের বিরোধিতা করে তারা বিভিন্ন নামে পরিচিত ।
যেমন, ওহাবী, সালাফী, মুহম্মদী, লা-মাযহাবী, আহলে হাদীছ, রফে ইয়াদাইন ইত্যাদি । তারা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের বিপরীত মত-পথ পোষণ ও প্রচার করে । তারা নিজেরাই নিজেদের মধ্য থেকে ইমাম বানিয়ে তার অনুসরণ-অনুকরণ করে । তাদের ইমামের আক্বীদা-আমল কুরআন-সুন্নাহর খিলাফ হলেও সেটাকেই তারা অনুসরণ করে থাকে । (নাউযুবিল্লাহ)

উল্লেখ্য, যারা মাযহাব মানেনা অর্থাৎ যারা লা-মাযহাবী তারা কয়েক শ্রেনীর-

(১) প্রথম শ্রেনী যারা মুশাব্বিহা ফিরক্বার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করে । তারা বিশ্বাস করে, আমাদের মত আল্লাহ্ পাক-এর হাত, পা, চোখ, কান, যবান ইত্যাদি রয়েছে ।

(২) দ্বিতীয় শ্রেনী যারা বলে, মাযহাব মানা বা গ্রহণ করা শিরক ।

(৩) তৃতীয় শ্রেণী যারা বলে, মাযহাব মানা বিদয়াত ।

(৪) চতুর্থ শ্রেণী যারা মাযহাবকে হক্ব বা সঠিক বলে জানে । তারা যদিও প্রকাশ্যে নিজেদেরকে মাযহাবের অনুসরণকারী বলে দাবী করেনা প্রকৃতপক্ষে তারা চার মাযহাবের কোন একটি মাযহাব অনুযায়ী আমল করে বা তার অনুসারী ।

এ চার শ্রেণীর মধ্যে শুধুমাত্র শেষ শ্রেণী ব্যতীত বাকি তিন শ্রেণীই নাহক্ব । তাদের সম্পর্কে ইমাম-মুজতাহিদগণের ফতওয়া হলো-

প্রথমতঃ যারা বলে ও বিশ্বাস করে যে, মানুষের মত আল্লাহ্ পাক-এর হাত, পা, নাক, চোখ, মুখ ইত্যাদি রয়েছে তারা মুশাক্বিহা ফিরক্বা তথা কাফিরের অন্তর্ভূক্ত । তাই তাদের সাথে বিবাহ-শাদী, নামায-কালাম, লেন-দেন কোনটিই জায়িয নেই । সম্পুর্ণরূপে হারাম।

দ্বিতীয়তঃ যারা বলে, মাযহাব মানা বা গ্রহণ করা শিরক । মূলতঃ তারাই মুশরিক । তাদের সাথেও কোন প্রকার সম্পর্ক রাখা জায়িয নেই ।

তৃতীয়তঃ যারা বলে, মাযহাব মানা বিদয়াত । মাযহাবকে বিদয়াত বলার কারণে তারাই বিদয়াতী হিসেবে সাব্যস্ত হবে । তাই তাদের সাথে বিবাহ-শাদী, লেন-দেন, নামায-কালাম ইত্যাদি সবই মাকরূহ ।
আর
চতুর্থতঃ যারা মাযহাবকে হক্ব বলে জানে, তারা হক্ব এবং তাদের সাথে সবকিছু জায়িয ।
৫ম পর্ব।

৪র্থ পর্ব।

৩য় পর্ব।

২য় পর্ব।

১ম পর্ব।
---------------------------------------(ইনশাআল্লাহ চলবে)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×