‘এখনো নতুন তফসিল ঘোষণা সম্ভব’

দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ‘সুযোগ নেই’- দুই আওয়ামী লীগ নেতার এমন বক্তব্যের পর বিএনপি বলছে, সংলাপের মাধ্যমে নতুনভাবে তফসিল ঘোষণার সময় এখনো পেরিয়ে যায়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2013, 01:57 PM
Updated : 17 Dec 2013, 01:57 PM

মঙ্গলবার বিকালে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম ইসলাম খান বলেন, “যেভাবে সাজানো নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে, তাতে পরিস্থিতি আরো জটিল হচ্ছে। একতরফাভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ফলাফল বাতিল করে এখনো নতুন তফসিল ঘোষণা করা সম্ভব। এটা হতে পারে আলোচনার মাধ্যমেই।”

এর আগে সকালে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, যেহেতু তফসিল হয়ে গেছে, নির্বাচন প্রক্রিয়াও অনেক দূর এগিয়ে গেছে, সেহেতু এখন সমঝোতা হলেও বিএনপির দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই।

সমঝোতা হলেও সেটি পরবর্তী নির্বাচনের জন্য হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অপর এক অনুষ্ঠানে দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও প্রায় একই বক্তব্য দিয়ে বলেন, দশম সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হয়ে গেছে। এখন একাদশ জাতীয় সংসদের জন্য আলোচনা করতে হবে।

ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতার এমন বক্তব্যের পর বিএনপির পক্ষ থেকে ‘সময় পেরিয়ে যায়নি’ বলে দাবি করা হয়।

বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, “আমরা সব সময় বলে আসছি, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাই। এই উদ্যোগ সরকারকেই নিতেই হবে। এটা তাদের দায়িত্ব।”

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ৭২ ঘণ্টার দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনের পরিস্থিতি জানাতে এই ব্রিফিং ডাকা হয়।

এ সময় ওবায়দুল কাদেরর বক্তব্যেরও সমালোচন করেন নজরুল ইসলাম খান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “জাতিসংঘের উদ্যোগে যে সংলাপ চলছে, তা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন কি হবে তা নিয়ে। ওবায়দুল কাদের ছাড়া কেউ একাদশ নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন না, আলোচনাও করছেন না।”

নজরুল জানান, অবরোধের প্রথম দিনে তিন জন নিহত, ২৫১ জন আহত, দেড় শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা দেয়া হয়েছে চার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে।

সরকারের ‘একতরফা’ নির্বাচনের কারণে ৯ কোটি ভোটারের ৫২ শতাংশ ভোটদানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৪টি আসনে একক প্রার্থী থাকায় বাকি ১৪৬ আসনে ব্যালটে ভোট হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সরকার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে পিঠাভাগাভাগির নিলর্জ্জ কৌশল নিয়ে জনমতের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে।

স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের চিরস্থায়ী পথ সুগম করার লক্ষ্যে সরকার দেশে গৃহযুদ্ধের বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

‘পাকিস্তান সংসদে মোল্লা’

এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক বামপন্থী নেতা নজরুল ইসাম খান বলেন, “আমরা বার বার বলে এসেছি বিএনপি যুদ্ধাপরাধীর বিচার চায়। কিন্তু সরকার যুদ্ধাপরাধীর নয়, মানবতাবিরোধীদের বিচার করছে। এই বিচার নিয়ে সারা বিশ্বে আপত্তি রয়েছে।

“আমরা বলে এসেছি- এই বিচার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে হোক। পাকিস্তানের পার্লামেন্টে এ নিয়ে প্রস্তাব উঠেছে। আমরা মনে করেছিলাম সরকার এ নিয়ে প্রতিবাদ জানাবে। এটা সরকারের দায়িত্ব।”

ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদ্জ্জুামান রিপন, সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করীম শাহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।