somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুষার দেশের দিনলিপি

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একক, দশক আর দীর্ঘ শতক



১ । ০ । ১ । ০
হাজার । শতক । দশক । একক

মানুষের চিন্তাধারা যেমন অদ্ভুত, তেমননি ভাবে তাদের আবিস্কারগুলোও বড্ড গোলমেলে। সোজাসাপ্টা কোন নিয়ম যেন এরা রাখতে জানেনা। একটা-দুটা করে দিন পার করতে করতে আনন্দ কেবল ভাবে, প্রকৃতির সব সরল নিয়মগুলোকে একে একে পাল্টে দিয়ে এই জটিল-গরল মারপ্যাচের সংসার তৈরী করার কি দরকার ছিল, এই অতিবুদ্ধিমান মানুষদের?

আনন্দের মাথায় এই সব গোলমেলে চিন্তা আসার একটাই কারন। ছোটবেলার সেই একক-দশক আর শতকের হিসাব। আর আরো গভীরে গেলে পাওয়া যায়, আনন্দের এ্যলেনকে না দেখতে পাওয়া দিনগুলোর হিসাব। এ্যলেনের সাথে আনন্দের দেখা হয়েছিল ৯৯ দিন আগে। আর একটা দিন বাড়লেই তা হয়ে যাবে ১০০ দিন। সংখ্যাটা চলে যাবে শতকের কোঠায়। এই ঘরটা অবশ্য অনেক বড়, এর পর পরিবর্তন হতে সময় নেবে অনেক দিন।

প্রথম সপ্তাহে, কেবল বারের নাম বদল করেই হিসাব রেখেছে। চোখের পলকে যেন চলে গেল প্রথম সপ্তাহটা।এলো পরের সপ্তাহের শনি বার, প্রথম বারের মতো। তারপর এভাবে বেশ দ্রুতই যেন শেষ হলো এককের ঘরের হিসাব।

দশক এলো , চলেও গেল। বদল হলো ঋতুর। শরৎ গেল, শিউলো আছে আজো । শীত এলো, কোথাও তুষারে ঘেরা সান্তাক্লজের কাধে চেপে ,কোথাও বা হালকা ভাপা পিঠার ঘ্রান ছড়িয়ে। এরই মাঝে, আজ থেকে যে শতকের শুরু।

হ্যা, হাজারের কোঠা অনেক দুরে। এর মাঝে হয়তো বদলে যাবে অনেক কিছু। বদলে যাবে বছরের হিসাব,হয়তো জীবনের হিসাব। কিংবা কোন কিছুই বদলাবেনা আনন্দের। থেমে যাবে সব, যেমনি ভাবে থেমে যায় কোন না কোনদিন সবার হিসেবের চাকা।

কেন জানি, আজকাল মাঝে মাঝেই মৃত্যুর ভয় আনন্দকে আকড়ে ধরে। দম যেন বন্ধ হয়ে আসতে চায়। মনে হয় এই বুঝি আর ডেকে বলা হলো না কেওকে- বিদায়। আসলেই কি বিদায় বলাটা জরুরী?

না- ভাবে আনন্দ।
যেতে যখন হবেই, তবে আর এতো আড়ম্বর কেন? হ্যা মজার ব্যাপার এটাই, এই চলে যাওয়া নিয়েই বেশি আয়োজন। ভাবটা এমন যেন খুবই অদ্ভুত কোন ঘটনা ঘটে গেছে। যেন সবচেয়ে বেশি অবিশ্বাস্য কোন ঘটনা।

নিদির্ষ্ট ঘটনা, সবার জানা। এড়াবার কোন উপায় নেই। যে যেমনই হোকনা কেন, যে ধর্ম-বর্ন কিংবা ধনী-গুনী। এই ঘটনার সাথে সাক্ষাৎ অনিবার্য। কিন্তু তাকেই যেন সবার এড়িয়ে চলা, এই পৃথিবীর মাঠে চলার সময়টাতে। ভুলেই যাই সবাই।

কিন্তু আনন্দ যেন এই চিন্তা থেকে বের হতে পারছেনা। নিজেই ভাবে, মৃত্য যখন আসবে, দেখা করবো তার সাথে কিন্তু তাই বলে তো বসে থাকা যাবেনা। চলতে হবে, দেখতে হবে, শুনতে হবে। অসামাজিক হবারও উপায় নেই। সব কিছু ভেবে ভেবে আবারও আনন্দ, নিজের সাথে জড়িয়ে থাকা সমাজের এই বাঁধন কাটবার চেষ্টায় পার করে দেয় সারাটা সময়।

***************************************************



গ্রীষ্মদেশে এখন হালকা শীত পরতে শুরু করেছে। ভোররাতের এই সময়টাতে মৃদু একটা বাতাস বইতে থাকে আর সাথে শিশির। সাদা আর কমলা রংয়ের ফ্রক পড়া শিউলতে ছেয়ে গেছে মফস্বলের অনেক আঙ্গিনা । আর আনন্দ ?

বদ্ধ ঘরের গোমট একটা ভপসা গন্ধ নিয়ে দিন পার করছে। কতগুলো শুকিয়ে যাওয়া শিউলী ফুলসহ একটা ডাল, ডাইরীর ভাজে শুকিয়ে রেখেছিল, কোন একটা সন্ধ্যার স্মৃতিকে ধরে রাখবার জন্য। শিউলী শুকিয়েছে, কিন্তু আনন্দের সেই অদ্ভুত ভালোলাগা শিউলী ফুলের গন্ধটা আজো তাকে ঘিরে আছে।

এ্যলেন আজ অনেক দুরে, কিন্তু অসাধারন সেই সুন্দর সন্ধ্যেটা আজো আনন্দকে প্রতিটা শরৎ এলেই জানিয়ে যায় এ্যলেনের সাথে থাকা কোন এক শরৎ সন্ধ্যার স্মৃতি। সে স্মৃতি, শিউলী আর আগামীতে কোন এক শরৎ সন্ধ্যায়, গ্রীষ্মদেশে এ্যলেনকে নিয়ে হাটবার স্বপ্নে বিভোর এই আনন্দ, মানসিকভাবে খুব বেশি দিশেহারা একাট সময় কাটাচ্ছে আজকাল। সবাই যেন পাশেই তবু সে যেন নিঃসঙ্গ। তবু এই একাকী আনন্দের ব্যক্তিগত বলে কিছু নেই, নেই একান্ত আপন এতটুকু সময়। মানসিক কষ্টের ভয়াবহতায় তাই মাঝে মাঝে নিজেই ভয় পেয়ে যায় আনন্দ।

এ্যলেনকে হারাবার ভয়, স্মৃতি নিয়ে খেলা করার মাঝে এই শরতের শীউলী খুব বেশি এলো মেলো করে দেয় আনন্দকে। কেন এ্যলেন এই শিউলী ফুলের সাথে জড়িয়ে আছে? কেনইবা এই তীব্র ঘ্রান বার বার নগর জীবনের সব বাধা পেড়িয়ে আনন্দকে নাড়া দেয়? দম বন্ধ হয়ে আসতে চায় যেন।

বি:দ্র: ছবিগুলো নেট থেকে সংগ্রহকৃত। নিজের তোলার খুব ইচ্ছে ছিল, কিন্তু বাস্তবতা অনেক বেশিই দুরে সরিয়ে রাখে মানুষকে তার স্বপ্ন গুলো থেকে। তাই অন্যের চোখ দিয়েই নিজের স্বপ্নের কাছাকাছি পৌছাবার চেষ্টা করলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৫
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×