“হাসনাত”
দাতাদের আদেশ,নির্দেশ,অনুরোধ বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধ কিংবা দেশ অচল করে দেবার হুমকি,কোন কিছুই ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন থেকে সদ্য স্বৈরাচার খেতাব প্রাপ্ত দল আওয়ামিলীগকে হটাতে পারেনি ।যতই বাধা আসুক বা বদনামের ভাগদার হতে হোক, নির্বাচন তারা করেই ছারবেন ।ভোটার এবং প্রার্থী বিহীন এই তথাকথিত সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার নির্বাচন থেকে গণতন্ত্র, দেশ-জাতি বা একরোখা আওয়ামিলীগ কতটুকু লাভবান হবে সেটাই দেখার বিষয় ।
জাতিসংঘ,যুক্তরাষ্ট্র,ইইউ এবং চায়না সহ বিশ্বের সকল দাতা গুষ্ঠী ও উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র ও সংস্থা একদলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিপক্ষে ।এ সকল রাষ্ট্র ও সংস্থা সকল দলের অংশ গ্রহনে একটি অবাধ,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় ।জাতিসংঘ মহা সচিব বানকি মুন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরী টেলিফোনে তাদের শংকা ও আশার কথা প্রধান মন্ত্রীকে জানিয়েছেন ।কিন্তু প্রধান মন্ত্রী তাদের শংকা উড়িয়ে দিয়েছেন ।অবশ্য এ ক্ষেত্রে তিনি ভারতকে সাথে পেয়েছেন । অন্য ভাবে বলতে গেলে ভারতের আশ্বাস,আসকারা আর পরামর্শেই তিনি একলা চলতে শুরু করেছেন ।
উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে অযাচিত বারাবারির ফল যা হতে পারে তা এক কথায় ভয়ংকর ।যুক্তরাষ্ট্রের স্থগিত করা জিএসপি সুবিধা বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন না হলে পূনরায় বহাল হবার সম্ভাবনা নেই,বরং ইইউর জিএসপি সুবিধা থেকেও দেশ বঞ্চিত হতে পারে ।আমাদের দেশে ব্যাপক ভিত্তিতে বিনিয়োগকারী দেশ চায়না বর্তমান অবস্থার পরিবর্তনে রাজনৈতিক দল গুলোর আচরনে হতাশা প্রকাশ করেছে ।সরকারের কূটনৈতিক ব্যার্থতা আর বৈশ্যিক মন্দায় মধ্য প্রাচ্যের প্রায় হারানো শ্রম বাজার বন্ধ হয়ে যেতে পারে ।গবেষনা ছাড়াই বলা যায় বর্তমান অচলাবস্থা চলতে থাকলে গার্মেন্টস ব্যাবসা লাটে উঠবে ।
আমাদের ভৌত-অবকাঠামোগত উন্নয়নে জাতিসংঘের ভূমিকা এখনও অদ্বিতীয় ।সরকারের দুর্নিতি ও অসহযোগীতার কারনে ইতিমধ্যে অনেক গুরুত্ব পূর্ন প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে গেছে যার অন্যতম, বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু ।বাংলাদেশ পুলিশ ও সেনা বাহিনী শান্তি মিশনে কাজ করে দেশের জন্য সম্মান এবং বৈদাশিক মুদ্রা দুটোই উপার্জন করেছে ।জাতিসংঘের নির্দেশ অমান্যের কারনে শান্তি মিশনে বাংলাদেশের অংশ গ্রহন সংকোচিত হয়ে যাবে এবং এক পর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য নেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে ।শুধু তাই নয় অর্থনৈতিক ও বানিজ্যিক অবরোধের মুখে পতিত হতে পারে বালাদেশ ।
৫ই জানোয়ারির ভোটার ও প্রার্থী বিহীন নির্বাচন যে কোন ভাবে হয়ে গেলেই প্রধান মন্ত্রী ও তার দল আওয়ামিলীগ আগামী পাঁচ বৎসর দুধে-ভাতে থাকবেন এমনটি আশার কোন কারন নাই ।গণতন্ত্রের মানষ কণ্যা উপাধীটি অচল হবে ।১৫ই ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনের জন্য বিএনপিকে আর কোন টকশো বুদ্ধিজীবি একক ভাবে দায়ী করতে পারবে না,আওয়ামীলীগ গণতন্ত্র ও ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী গণমানুষের একটি দল,এ দাবীটিও অচল হবে ।সর্ব বৃহৎ বিরোধী দল বিএনপির অসহযোগীতা ও জামাতি তান্ডবে তৃণমূল আওয়ামি নেতারা আরও বেশী বেশী শহর মূখী হবে এবং কারও কারও জীবন বিপন্ন হবে ।তবে এত কিছুর পরও শেখ হাসিনা, বেগম জিয়ার মত বলতে পারবে দেখেন বিশ্ববাসি,আমিও তিন বারের প্রধান মন্ত্রী ।
সকল পক্ষের বিরোদ্ধে দাড়িয়ে একমাত্র ভারত বর্তমান সরকারকে সহযোগীতা করে যাচ্ছে ।অবস্থা এমন দাড়িয়েছে শেখ হাসিনা চাইলেও শুধু মাত্র ভারতের কারনে তিনি বিরোধীদলের সাথে আপোষ করতে পারবেন না ।ভারত চায় যে কোন ভাবে একটি নির্বাচন করিয়ে নতুন সরকারের সাথে স্থায়ী ট্রানজিট চুক্তি বাস্তবায়ন করতে ।তাছাড়া ভারত জানে তার পরামর্শে আন্তর্জাতিক সকল পক্ষের সাথে বিরোধে জড়িয়ে সরকার এখন এক ঘড়ে ।এই অবস্থায় ভারত যেভাবে যা চাইবে সরকার তা দিতে বাধ্য হবে, একটি গণতান্ত্রিক জনপ্রিয় সরকারের কাছে পাওয়া যাবেনা ।
প্রধান মন্ত্রী চাইলে এখনও সময় আছে সকল বিরোধী দলকে সাথে নিয়ে একটি অবাধ,নিরপেক্ষ সুষ্ঠূ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে ক্রান্তি লগ্ন থেকে বের করে আনতে পারেন ।এতে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে, আবার বিনয়োগের পরিবেশ ফিড়ে আসবে,গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটবে আর বিদেশে আমাদের ভাব মূর্তি ফিড়ে আসবে ।সবাইকে অবজ্ঞা করে তিনি যদি স্বৈরাচারী প্রধান মন্ত্রী হয়ে ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের কান্ডারী হয়ে পথ চলেন,এই দেশ ও জাতী যেমন ধ্বংস হবে তেমনি ধ্বংস হতে পারেন তিনি নিজেও । এখন সিদ্ধান্ত নেবার দায়িত্ব কেবলই তার।।