শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র হত্যার ঘটনায় নয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে সন্তুষ্ট হতে পারেনি নিহতদের পরিবার।
Published : 19 Dec 2013, 06:02 PM
দুই বছর আগে সহপাঠীদের বাঁচাতে গিয়ে বখাটেদের হামলায় নিহত দীপঙ্কর ঘোষ অনিকের বাবা দীপক ঘোষ ও খায়রুল কবিরের মা শাহিদা আক্তার রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
বৃহস্পতিবার এই মামলার রায়ে নয় আসামির প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
এই নয় জন হলেন- সিলেট সদর উপজেলার নলকট গ্রামের গুলজার মিয়া ওরফে গুলজার মাঝি, একই গ্রামের ছইল মিয়া, শাহিন আহমদ, লাল মিয়া, সাইম মিয়া, জালাল মিয়া, রকিব আহমদ, আবদুল্লাহ ও সেলিম মিয়া।
তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারক দিলীপ কুমার দেবনাথ।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অনিকের বাবা দীপক ঘোষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। আসামিদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত ছিল।
“বাদিপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে প্রমাণ করতে পেরেছেন যে আসামিরা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিল। এছাড়া ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবিন্দিতে আসামি গুলজার মাঝিও বলেছে, কারা জড়িত ছিল।”
ট্রাইব্যুনালের রায়ে হতাশা প্রকাশ করে খায়রুলের মা শাহিদা বেগম বলেন, “আশা ছিল অন্তত দুই-একজনের ফাঁসি হবে। কিন্তু কি কারণে হয়নি ব্যাপারটা বোধগাম্য নয়।”
তিনি বলেন, “নৌকার মাঝি গুলজার ও ছইল মিয়া হত্যায় সরাসরি জড়িত ছিল। অন্তত এই দুই জনের ফাঁসি হবে বলে ধারণা করেছিলাম।”
রায়ের কপি দেখে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে শাহিদা বেগম জানান।
রায়ের পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনিক-খায়রুলের সহপাঠী ও শিক্ষকরাও।
মামলার বাদি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক মো. ইসফাকুল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “অল্প সময়ে মামলার রায় হওয়ায় আমরা খুশি। তবে আসামিদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত ছিল।”
নিজেরা আলোচনা করে উচ্চ আদালতে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইজ্ঞিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছয় শিক্ষার্থীসহ আটজন ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সিলেটের চেঙ্গেরখালে নৌভ্রমণে যান। ওই সময় বখাটেদের হাত থেকে সহপাঠীদের বাঁচাতে গিয়ে নিহত হন দীপঙ্কর ঘোষ অনিক ও খায়রুল কবির।
ওই দিন নৌকায় থাকা জহিদ রহমান জোসেফ বলেন, “আদালতে আমি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছয় জনকে সনাক্ত করে সাক্ষ্য দিয়েছিলাম। আশা ছিল আসামীদের ফাঁসি হবে। কিন্তু তা হলো না।”