somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তারাই প্রগতিশীল, তারাই দেশ প্রেমিক- যারা আওয়ামী লীগ!

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশে শেখ হাসিনার সরকার, রাজপথের সমাবেশে জয়বাংলা শ্লোগান চলছে . . . কোন ধরণের সহিংসতা নেই অথচ সেই শ্লোগানে পুলিশ বর্বরোচিত হামলা! এ দৃশ্য কোনদিন দেখতে হবে তা কখনো চিন্তাও করতে পেরেছেন? জয়বাংলার উপর আঘাত করে কেউ কোনদিন দেশপ্রেমিক হতে পারে? তারপরের আওয়ামী চাটুকারেরা চালিয়ে যাচ্ছেন . . . যার সারমর্ম, তারাই প্রগতিশীল, তারাই দেশ প্রেমিক, যারা আওয়ামী লীগ!

কোথাও পুলিশের অ্যাকশন নেবার আগে যতদূর জানি সভাসমাবেশকে সতর্ক করা হয়। অন্ততঃ সভা-সমাবেশ করতে না দিতে চাইলে ১৪৪ ধারা জারি করাও হয়ে থাকে। অথচ গত বৃহস্পতিবারের কর্মসূচীর আগে কোন ধরণের ১৪৪ ধরাও জারি করা হয়নি। যদি সরকার বৃহস্পতিবারের সমাবেশ না করতে দিতে চাইত তাহলে পাকিস্তান এম্বাসি ঘেরাওয়ের আল্টিমেটামের পরে সরকারের তরফ থেকে একটি বিবৃতি আসতে পারত। এর আগে গণজাগরণ মঞ্চের দাবির প্রেক্ষিতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে আবেগময় ভাষণ দিতে শুনেছি এবং এটি নিয়ে একটি দীর্ঘ দিন আওয়ামী চাটুকারদের গর্বিত হতে দেখেছি। কিন্তু এবার সরকারের কোন পাতি মুখপাত্রকেও গণজাগরণ মঞ্চের দাবির পক্ষে-বিপক্ষে কোন কথা বলতে দেখলাম না। কারণ এখানে তাদের রাজনৈতিক স্বার্থটা হাসিল হয়ে গেছে এবার প্রয়োজন গণজাগরণের কর্মীদের পেটানো, যা যুগে যুগে সকল নোংরা মনোবৃত্তির মানুষরা করে এসেছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট করে বলা আছে:
“জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।“
অথচ দেশের সংবিধান বিনষ্ট করা যাবে না, সংবিধান থেকে একচুলও নড়চড় সম্ভব নয় বলে যে সরকারের পাণ্ডা বলেন, তারা কি একটু হিসেব করে দেখবেন তার কতটুকু নড়ল!
গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের লাঠিপেটার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,“ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে কূটনীতিক এলাকায় মিছিল-মিটিং নিষেধ। এ কারণেই গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে।” আমাদের দেশের পুলিশরা হঠাৎ আন্তর্জাতিক আইনের রক্ষক হয়ে গেল! তারা নিশ্চয় ব্রিটিশ পুলিশের থেকেও ভিয়েনা কনভেনশন বেশি বোঝে! নিচের ছবির লিংকটা লন্ডনের পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভের!
Click This Link

আওয়ামী সরকারের দেউলিয়াত্ত ও অসহায়ত্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে তারা এটা প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে গেছে যে প্রশাসন-পুলিশ তাদের অধীনস্থ আছে। কারণ তারা জামায়েতের সহিংসতা বন্ধের ব্যাপারে পুরোপুরি ব্যর্থ। এতগুলো মানুষ মারা গেল অথচ সহিংসতা বন্ধে তাদের কার্যকর কোন উদ্যোগ নেই। তাদের বক্তব্যে “আমরা কঠোর হলাম, এই কঠোর হব কিন্তু” ইত্যাদি নাটক করতেই দেখা যাচ্ছে। সরকার দলীয় এমপি আসাদুজ্জামান নূরের গাড়ি বহরে যারা নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয় তাদের এ ধরণের হুংকার বেমানান।

এক সময়ে গণজাগরণের নিবেদিত প্রাণ কর্মী বলে নিজেদের জাহির করতে যেসকল সুবিধাবাদীদের প্রায়ই শাহবাগ দেখতাম তারা আজ সরব। তবে তাদের সরবতা গণজাগরণের পক্ষে নয় বিপক্ষে! লেঞ্জা শুধু জামায়াতদের থাকে না আওয়ামী মৌলবাদীদেরও এবার লেঞ্জা দেখা যায়! আওয়ামী চাটুকারদের দেখলাম এর মাঝেই শেখ হাসিনাকে মহান করার চাটুকারিতার রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। তারা সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গণজাগরণ মঞ্চ গেলে তাদেরকে আরো সায়েস্তা করার কথাও বলতে শুরু করেছে!
যত সংবেদনশীল মানুষই হই না কেন, এত নির্যাতন এত নোংরামির মাঝে আমারাও তো বিক্ষুব্ধ হই এবং এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার করার জন্য জ্বালাও-পোড়াও না করি অন্তত বিক্ষুব্ধ হয়ে কথা তো বলতো পারি! কিন্তু একি শেখ হাসিনাকে আমরা শুয়োরের বাচ্চাও বলতে পারি না . . . কারণ আমরা আওয়ামী লীগের মত আচরণ করে জাতির পিতার অবমাননা করতে পারি না। প্রগতিশীল মনোভাবাপন্ন মানুষের শেষ ভরসা শেখ হাসিনা এমটা যারা ভাবছেন তারা নিশ্চয় তাদের এই ভুল অবস্থান থেকে সরে আসবেন।

পুণশ্চঃ পুলিশ গুলশান-২ প্রায় ফাঁকা করে ফেলার পরে আশপাশ থেকে যে দুই একজনকে পাচ্ছিল তাদেরকে অমানুষিকভাবে পেটাচ্ছিল। ১০-১২ জন পুলিশ একজনকে ধরে মারছিল। হঠাৎ এক ভদ্রলোককে চিৎকার করে প্রতিবাদ করতে দেখলাম। তিনি পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলছিলেন বলছিলেন “ আপনারা কেমন পুলিশ? কোন দেশের পুলিশ? এভাবে ১০-১২ জন পুলিশ মিলে একজনকে মারছেন? আমরা জানেন আপনারা কাদের পিটচ্ছেন?” ভদ্রলোক দেখলাম প্রায় কেঁদেই ফেললেন। আর আশপাশের থাকা পুলিশ বেশ মজা পেল এরকম একটি হাসি দিয়ে ধমক দিয়ে বলল এদিক থেকে যান তো!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

বামিঙ্গিয়ান উপাখ্যান

লিখেছেন যুবায়ের আলিফ, ১০ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২০




মাঝ রাতে কড়া একটা ঝাঁকুনি দিয়ে ঘুম ভাঙলো জ্যাকের৷ ঘুমের ঘোরে দেখতে পেল কেউ চোখ ধাঁধানো পোষাক পরে ডাইনিংয়ে একটা চামচ রেখে দরজা গলিয়ে চলে যাচ্ছে৷ গা ও পোষাকের উজ্জ্বলতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×