যোগাযোগমন্ত্রী বিআরটিসির দূরপাল্লার বাস চালানোর নির্দেশ দেয়ার পরদিন বিরোধী দলের অবরোধের মধ্যে নাশকতার লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব এই সড়ক পরিবহন সংস্থাটি।
Published : 23 Dec 2013, 01:54 PM
সোমবার বগুড়া বাস ডিপোতে একটি বাসে আগুন এবং নোয়াখালী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাংচুরের শিকার হয়েছে বিআরটিসির বাস।
দিনাজপুরে অবরোধকারীদের বাধার মুখে পড়ে বিআরটিসি বাস কাউন্টারে ফিরতে বাধ্য হয়েছে।
রোববার বিআরটিএ সদরদপ্তরে পরিবহন মালিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে এক বৈঠকে ওইদিন থেকেই বিআরটিসিকে দূরপাল্লার বাস চালানোর নির্দেশ দেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বগুড়া বাস ডিপোতে সোমবার সকালে জয়পুরহাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতির সময় অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় একটি বাসে আগুন ধরে যায়। তবে এতে কেউ হতাহত হননি।
বিআরটিসি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুভাশিষ পোদ্দার লিটন বলেন, সকাল সোয়া ১০টার দিকে অবরোধকারীরা ডিপোতে পরপর ৩/৪টি ককটেল ও দুটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে।
“এতে একটি বাসে আগুন ধরে যায়। আরেকটি পেট্রোল বোমা পড়ে নিভে যাওয়ায় তা অবিস্ফোরিত থাকে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।”
সদর থানার ওসি ফাইজুর রহমান বলেন, এ ঘটনার পর ডিপোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শহর বাইপাস সড়কের কাউতলি মোড়ে একটি বিআরটিসি বাস ভাংচুর করে অবরোধকারীরা।
কসবার কুটি-চৌমুহনী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বিআরটিসি বাসটি কাউতলী মোড়ে আসা মাত্রই ১০/১২ জন যুবক বাসটি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে বাসটির সামনের দিকের ও দুই পাশের জানালার কাঁচ ভেঙ্গে যায়।
তবে এতে যাত্রীদের কেউ আহত হননি। পুলিশ ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
এ সময় পুলিশ পাহারায় সোনাপুর থেকে ছেড়ে আসা বিআরটিসির একটি বাস মাইজদী বাজার পৌঁছালে পিকেটাররা হামলা ও ভাংচুর চালায়।
এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। শটগানের গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, ছাত্রদল কর্মীরা সরকারি গাড়ি ভাংচুরের পর পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পুলিশ শটগানের গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে আট জনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, সকালে অবরোধকারীদের বাধায় বিআরটিসির রংপুরগামী দুটি বাস কাউন্টারে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
বিআরটিসির দিনাজপুর ডিপোর কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সকালে দিনাজপুর এবং ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুরের উদ্দেশ্যে দুটি বাস পুলিশের পাহারায় রওনা হয়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের রানীরবন্দরে পৌঁছালে বাস দুটি অবরোধকারীদের বাধার মুখে পড়ে।
সড়কে গাছ ও ইট ফেলে লাঠি-সোঠা নিয়ে অবস্থান নেয়া অবরোধকারীদের বাধার মুখে পরে বাসগুলো আবার পুলিশি পাহারায় কাউন্টারে ফিরিয়ে আনা হয়।