শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে আরো এক ব্যাটালিয়ন সৈন্য পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন।
Published : 24 Dec 2013, 09:15 PM
মঙ্গলবার এই টেলিফোন পাওয়ার পর তা বাস্তবায়নে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সন্ধ্যার পর জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে আরো এক ব্যাটেলিয়ন সৈন্য পাঠানোর অনুরোধ করেন। প্রধানমন্ত্রীও তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
“জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সেনবাহিনী যে যোগ্যতা ও প্রশংসা পেয়েছে এই ফোন তারই স্বীকৃতি,” বলেন তিনি।
নির্বাচনকে সামনে রেখে সহিংসতা ও অস্থিরতার মধ্যে শান্তি মিশনে বাংলাদেশে সৈন্য চেয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের ফোন বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল করবে বলে মনে করেন ইকবাল সোবহান।
নতুন সেনা সদস্যরা কোন দেশে শান্তি রক্ষায় কাজ করবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সংস্থাটি যেখানে প্রয়োজন মনে করবে সেখানে পাঠাবে।”
নতুন বাংলাদেশি সৈন্যদের আফ্রিকার দক্ষিণ সুদানে পাঠানো হবে বলে জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি জানিয়েছেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে এ মোমেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ থেকে ১৪৫০ সৈন্য নেয়ার কথা জানিয়েছিল শান্তিরক্ষা মিশন।সেই প্রস্তুতি চলার মধ্যে এখন আরো ১ হাজার সৈন্য চাইল।
আগের চাওয়া ১৪৫০ জনকে মালিতে পাঠানো হবে বলে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের প্রধান মোমেন জানান।
তিনি বলেন, “শান্তি মিশনের জন্যে অস্ত্র এবং সাজ-সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে একটি জাহাজ ইতোমধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছে।”
ফার্নান্দেজ-তারানকোর প্রতিবেদন
বান কি- মুন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনো আলোচনা করেছেন কি না- জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান বলেন, “না, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি।”
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের অবসানে দুই প্রধান দলকে সমঝোতায় রাজি করাতে এই মাসের শুরুতে সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকোকে পাঠিয়েছিলেন বান কি-মুন।
ফার্নান্দেজ-তারানকো দুই দলের নেতাদের একসঙ্গে বৈঠকে বসাতে সক্ষম হলেও সমস্যার জট খুলতে পারেননি। তিনি ইতোমধ্যে তার ঢাকা সফরের প্রতিবেদন জাতিসংঘ মহাসচিবকে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পর এ কে এ মোমেনের সঙ্গেও বান কি-মুনের আলোচনা হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি জানান।
মোমেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফার্নান্দেজ-তারানকোর রিপোর্টে তিনি খুবই সন্তুষ্ট। তবে বিএনপি নির্বাচনে আসতে পারলো না, এটা তাকে ব্যথিত করেছে। তার মনে হয়েছে, ভোটের সময় পিছিয়ে দিলে বিএনপি নির্বাচনে আসত।”
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে খালেদা জিয়া কোনোভাবেই নির্বাচনে যেতে রাজি হননি বলে ফার্নান্দেজ-তারানকোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
“এ ধরনের একগুয়েমি মনোভাব গণতান্ত্রিক পরিবেশ অটুট রাখার সহায়ক নয় বলে মনে করেন জাতিসংঘ মহাসচিব,” বলেন মোমেন।
তিনি বলেন, সমঝোতার মাধ্যমে সবাইকে নিয়ে নির্বাচনে শেখ হাসিনার মনোভাবের প্রশংসা করেছেন বান কি-মুন।