somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তথ্য ভান্ডারের বিকাশ , আমরা কি এগিয়ে যাচ্ছি না পিছিয়ে যাচ্ছি , নাকি নষ্ট করছি ?

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমরা অনেক শুনেছি প্রতিবাদ, আন্দোলনে ইন্টারনেট এর প্রভাব নিয়ে ! আমরা শুনেছি তথ্য বিপ্লবের কথা এবং তা কিভাবে চীন, রাশিয়া , সোভিয়েত ইউনিয়নের কিংবা ইরানের মত দেশ গুলোতে ছড়িয়ে পড়ে !
ধরে নেয়া হতো আসলে ইন্টারনেট খুবই চমৎকার একটি প্রযুক্তি যখন এটি ব্যবহার হয় গনতন্ত্র প্রচারে ! তখনি আসেন Cyber-utopianism এর ভাবধারায় বিশ্বাসী লোকজন ! Cyber-utopianism হলো তারা যারা সচেতন ইন্টারনেট স্বাধীনতার অন্ধকার দিক টা নিয়ে সচেতন! তারা বিশ্বাস করত ইন্টারনেট এর দ্রুত তথ্য প্রবাহ সমাজকে পরির্বতন করবে এবং তা ভাল হবে ! তাদের ই একজন গর্ডন ব্রাঊন বলেন - এতে তথ্য প্রবাহ হবে দ্রুত এবং মানুষের কাছে যাবে ! এবং জনগন নিজস্ব মতামত তৈরি করবে ! ধারণা করা হয় ব্লগ বা সামজিক ওয়েবসাইট গুলো আগেকার দিনের ফ্যাক্স এর দ্রুততম মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে !
এখানে এসে কিছুক্ষণ থমকে থাকতে হচ্ছে , আমাদের তথ্যপ্রবাহ কি আমরা নিজেরাই বাধাগ্রস্থ করছিনা , সম্ভাবনা আর সুযোগের জায়গাটা ব্যাক্তি আমি কিংবা আপনি আসলে কিভাবে ব্যাবহার করছেন ??




বিশ্বব্যাপি ইন্টারনেট এর ব্যবহার প্রাচ্য দেশ গুলোতে ছড়িয়ে দেয়ার যৌক্তিকতা কিছুটা আর্থিক এবং সামরিক ! ইন্টারনেট বিপ্লবের শুরুর দিকে প্রচার করা হয় এতে সবাই "connected" থাকবে। বলা হত এতে গনতন্ত্র হবে অনিবার্য । কিন্তু তার পেছনে অন্য রাজনৈতিক চাল ও ছিল ও বটে !

কি রকম?
দেখা যাক, আমেরিকানরা এজন্য দ্রুত চীন , রাশিয়া, ইরান এর মত দেশ গুলোকে টেকনোলোজি ব্যবহার করতে দেয় এই বলে এতে গনতন্ত্র সুসঙ্ঘত হবে । তারপরের সময়টাকে বলা যায় আইপড এর উদারতা ! প্রাচ্যর রাজনৈতিক নীতি নির্ধারকরা বিশ্বাস করত যদি কারো কাছে আইপড , ল্যাপটপ এর মত জিনিস থাকবে তারা ধীরে ধীরে প্রাচ্য ভাব ধারায় বিশ্বাসী হয়ে উঠবে! ! আমেরিকান লেখক , কলামিষ্ট থমাস ফ্রাইডমেন বলেন " রাশিয়া, চীন, ইরানের মত দেশ গুলো দখল করার জন্য বোমা নয় আইপড ফেলো!!" এতে অতি সুক্ষভাবে মানুষের রাজনৈতিক , সামাজিক , এবং অর্থনৈতিক মানসিকতার পরিবর্তন হবে এবং তা আমেরিকার জন্য ভালো। এটি অনেকটা হিন্দি সিরিয়াল দেখতে দেখতে হিন্দিভাষী হয়ে ঊঠার মত ! ক্রমাগত ভাবে মানুষের মনোজগতে ভাষ্য পৌছে দেয়ার দ্বারা মানুষের ভিতর পরির্বতন নিয়ে আসা!
প্রাচ্যের প্রযুক্তি তাদের কে প্রাচ্য দেশগুলোর গোলামে পরিণত করবে । এতে ঐ সব দেশে নানা ধরনের গোলমাল তৈরি হবে নারী কিংবা খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে !

কিছু রাজনৈতিক নেতা ইন্টারনেট প্রযুক্তিকে ভয় পান ! এতে হয়তো জনগনের মত প্রকাশ দৃশ্যমান হয়ে পড়বে । লিবিয়ান প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফি অন্যতম ! কিছু চাইনিজ ব্লগার সবার আগে ব্লগিং এর দ্বারা সরকারের সমালোচনা শুরু করে ! কিছু দেশে সরকার এতে বাধা তৈরী করে ! উদাহরণ স্বরুপ থাইল্যান্ড এ ২০০৮ সালে ২৪ ঘন্টায় বন্ধ করে দেয়া হয় প্রায় ৩০০০ ওয়েবসাইট! ফেসবুক , টুইটার দ্রুত মানুষের ধারণা পরির্বতনে সাহায্য করছে ! নিঃসন্দেহে যুব সমাজ সামাজিক পরির্বতনের বাহক ! পুর্বপুরুষরা যা ভেবেছেন অনেকেই তা মানেনা ! তরুনরা দেশ ও সরকারের খারাপ কাজের সমালোচনা এবং নিজস্ব মতামত তৈরীর সুযোগ পাচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির যুগে ।এখানেই ভয়টা সবচেয়ে বেশী! সাইবার ক্রাইম ও করছে তরুনরা ! পর্ণোগ্রাফী কিংবা কিছু লোভী ব্যাক্তিত্ব বা গোষ্ঠী যারা প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেছে নেতিবাচক ভাবে উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য , তাদের আদর্শ ঢুকে যেতে পারে নতুন প্রজন্মের ভিতরে এই ইন্টারনেট এর দ্বারা ! নিজস্ব বিশ্বাস টা কতটুকু অন্ধ সেটা আমরা খুব কম মানুষই যাচাই করে দেখি !! যার প্রভাব পড়তে পারে, যখন আপনি থাকবেন না , তখন যে ছেলেটা অনলাইনে রেফারেন্স দেখতে এসে আপনার লিখে যাওয়া
লিখাটাকে সত্য মনে করে বিশ্বাস করবে !

ভাবার সময় এসে পড়েছে কিভাবে প্রযুক্তি সমাজে প্রভাব বিস্তার করে ! কিসে আমাদের জন্য ভালো ! সব প্রযুক্তি মানব কল্যানে তৈরী ভাবলেও তা কিছু টা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক ও ! যা আমরা খোলা চোখে ধরতে পারিনা ! নিজস্ব সংস্কৃতি আর ইতিহাসের প্রতি সুমুন্নত থাকলেই কেবল সকল প্রকার প্রযুক্তির খারাপ দিক গুলো এড়িয়ে লাভটা আদায় করে নেয়া সম্ভব !! আমরা আসলে কতটা সচেতন , জাতি হিসেবে , ব্যাক্তি হিসেবে , সমাজ হিসেবে ??
আমেরিকান প্রখ্যাত লেখক , সমাজবিদ নীল পোষ্টম্যান ১৯৯৮ সালে ক্যলবিন কলেজের ভাষনে সবার কাছে ৬ টি প্রশ্ন করেছিলেন !



তিনি কথা বলেছিলেন সকল ধরনের প্রযুক্তির পেছনের কথা নিয়ে , সে সবের ভালো-মন্দ থেকে কতটা লাভ হয়েছে মানব জাতির , না থাকলে কি হতো ?? উনি উদাহরণ দিয়েছেন দ্রুতগামী বিমানের কথা যেটার বাজেট কয়েক মিলিয়ন ডলার , সরকারী খরচে এ ধরনের বিমানের মেকিং কতটা জরুরী , যেখানে সমাজের ৫% মানুষ এ ধরনের বিমানে ভ্রমণ করার মত যোগ্যতা বা প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন ! আগে পরে অনেক যুক্তি দেখিয়েছিলেন তিনি !














সময় থাকলে ভিডিও গুলো দেখে নিতে পারেন । অনলাইনে অর্থহীন অনেক কাজ বাদ দিয়ে কিছুটা নিজেকে জিজ্ঞেস করার সুযোগ পাবেন !

নীল পোষ্টম্যান বিশ্বব্যাক্তিত্ব হিসেবে প্রশ্ন করেছেন সবার কাছে, যে কোন নতুন প্রযুক্তির (নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের কথা ভাবতে পারেন , ভাবতে পারেন মোবাইলের কথা , ভাবতে পারেন দ্রুতগামী জেট বিমানের কথা , হতে পারে ইন্টারনেট ) আবিস্কারের সময় এ কথাগুলো ভাবার জন্য , লাভ ক্ষতির হিসেব টা কষে নেয়ার জন্য , একটু ভাবার জন্য ! ব্লগার ভাই/ বোনদের জন্য ও থাকলো সে প্রশ্ন গুলো !
1. কি সমস্যার জন্য নতুন এই প্রযুক্তির কথা ভাবা হচ্ছে ??
2. সমস্যা টি আসলে কার / কোন গোষ্টির ??
3.পুরাতন এই সমস্যার সমাধানে নতুন কি সমস্যার আবির্ভাব হতে পারে ??
4. এর কারণে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে ??
5. এই প্রযুক্তিগত কারণে যোগাযোগ বা সম্পর্কের বা ভাষাগত কি সমস্যা তৈরী হবে ??
6. কোন নতুন রাজনৈতিক কিংবা অর্থনৈতিক শক্তির আবির্ভাব হবে কি ???

অপেক্ষায় থাকলাম সুচিন্তিত মতামতের ,
আপাত দৃষ্টিতে আপনার মনে হবে এই ভদ্রলোক সম্ভবত প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকতে বলছে , তা কিন্তু নয় বরং যেখানেই সমস্যা সেখানেই সমাধান !

আর দশটি প্রযুক্তির মত অন্তর্জালের গুরুত্বপুর্ণ উপাদান ব্লগ কিংবা ফেসবুক ও এর বাইরে নয় , মাঝে মাঝেই এর যথেচ্ছ ব্যাবহার শুধু সময় কিংবা জায়গাই নয় এর গ্রহনযোগ্যতা ও প্রশ্নবিদ্ধ করছে !
ব্লগে আপনার উদ্দেশ্য টা কি ?? আপনার যদি দায়িত্বশীলতার সীমাবদ্ধতা থাকে আপনার দায়িত্বশীলতার সীমাবদ্ধতার দায়ভার পরবর্তী প্রজন্ম কেন নিবে ?? আপনি আপনার সময়ের জন্য এখানে কি উপহার রেখে যাচ্ছেন ??

প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির উদ্দেশ্যমূলক ব্যবহার উন্নত দেশগুলোর সাথে অন্য দেশগুলোর ফারাক তৈরী করছে যা অনেকটাই দৃষ্টিসীমার অগোচরে , আমাদের কি করা উচিৎ ?? আমরা কি প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকবো ?? অবশ্যই না , বরং নিজের ইতিহাসকে ভালোবেসে...
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৯
৩৯টি মন্তব্য ৩৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×