কনকনে শীতের মধ্যরাত
বাবা ফিরছেন বড় বুবুর বাড়ি থেকে
ভেতরের আঙিনায় এক অর্ধললগ্ন পাগলিকে
দেখে বাবা এমন খিচিয়ে হুংকার দিলেন,
পাগলী কেঁদে কেঁদে আমাদের বাড়ি থেকে
অন্যত্র চলে গেলো।
পাগলি আমাদের চুলোর উননে উত্তাপ নিচ্ছিলো
আর কনকনে হাড় কাঁপানো শীতের আক্রমণ থেকে রেহাই পেতে।
শুনেছি পাগলি সেদিন কিছু খাইনি
কচি আমের আঁটি খেয়ে ক্ষুধা নিবৃত্তি করেছিলো
গ্রামের কেউই খাবার দেয়নি পাগলিকে।
কয়েকদিন পর একটি সাদা প্রাইভেট কার খুঁজতে আসে পাগলিকে
পেয়ে যায় আমাদের গ্রামে
দামী সাবানের ফেনায় বিধৌত করে তাকে
দামী কাপড় পড়ায়
অবিকল ফুল পরী মনে হলো তাকে।
তার ওয়ারিশরা বললা :
তারা ঢাকা থেকে এসেছেন, পাগলিটি তাদের বোন
এলাকার বখাটেরা তাকে বান মেরেছে
ফলত সে উদ্ভ্রান্ত আর তার মস্তিস্ক বিকৃতি ঘটেছে।
তারপর তারা পাগলিটিকে নিয়ে চলে গেলে।
আজ এত বছর পর কনকনে শীতের ঠাণ্ডায় পাগলিকে মনে হলো
মনে হলো কীভাবে তার চোখের গড়গড় করে পড়েছিলো
আমাদের গ্রামবাসির অত্যেচারে
তখন কিশোর বয়স আমার ,
বুঝিনা অনেককিছু
আজ পাগলীর চোখের জল গড়িয়ে পড়তে দেখে
নিঃশব্দ আমার চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে
বাঁধভাঙা প্রপাতের মতোন।
৩।০১।২০১৩