somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাদের মোল্লার 'রোড ফর ডেমোক্রেসি'

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নরকের সদর দরোজায় গুমরোমুখে পায়চারি করছিলো কাদের মোল্লা। পায়চারির একটা পর্যায়ে একটু এদিক-ওদিক হলেই সীসানির্মিত নোঙরে টান পড়ে। আছড়ে পড়ে তপ্ত মাটিতে। উঠে দাঁড়াতে গিয়ে টের পায় নাক-মুখ দিয়ে তরল জাতীয় কিছু একটা বেরুচ্ছে। হাত দিয়ে পরখের ক্ষণে বুঝতে পারে ওগুলো আসলেরক্ত নয়; পুঁজ! গন্ধে পেটে মোচড় দিয়ে ওঠে। বমি করে ভাসিয়ে দেয় পুরো নরক প্রান্তর। বিরক্ত নরকপ্রহরী এগিয়ে আসেন। লাঠি দিয়ে আঘাত হানেন মাথায়। এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় পুরো মাথা। কয়েক সেকেন্ড পর আপনিতেই জোড়া লাগে আবার। কাদের ওঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করে; ওঠে দাঁড়ায়। প্রহরী আদেশ করেন মাটিতে পড়ে থাকা পুঁজগুলো জিহ্বা দিয়ে পরিষ্কার করার। অনন্যোপায় হয়ে কাদের তাই করতে থাকে। কাদেরের জিহ্বাতে একটা পাথরখন্ড ডুকে যায়। সে চিৎকার দিয়ে ওঠতে গিয়ে মনে পড়ে যায় প্রহরীর হাতে থাকা লাঠির কথা। কাদের চুপ করে সহ্য করে; তাকে সহ্য করে যেতেই হয়!

ওঠে দাঁড়াবার পর কাদের প্রহরীর দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে করুণা প্রার্থনা করে। যতবার সে তাকায় ততবারই প্রহরীর চোখগুলো ক্রোধে লাল হয়ে যায়। আগুন ঠিকরে বেরিয়ে আসে চোখ দিয়ে। প্রবল তাপ অনুভব করে আবারো লুটিয়ে পড়ে কাদের মোল্লা। কিছুক্ষণ পর সম্বিৎ ফিরে পেয়ে অনুভব করে তার অবস্থান; এখন সে প্রহরীর পায়ের কাছে। কোনোমতে ওঠে দাঁড়িয়ে ভয় ভয় কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে- হুজুর, পুর্ব পাকিস্তানের খবর কী? কাদেরের মুখ থেকে পুর্ব পাকিস্তান নাম শুনে থমকে যান প্রহরী। তিনি তার চোখের সামনে ভেসে ওঠা মানচিত্রে একটু চোখ বুলিয়ে নিয়ে বলে ওঠেন- পূর্ব পাকিস্তান কই, সেটা ত একাত্তরেই বাংলাদেশ হয়ে গেছে। কাদের এবার ফিরে এলো বাস্তবে। গোস্তাকি মাফ করুন জনাব, বাংলাদেশের কী অবস্থা, ওখানে কী গণতন্ত্র পাওয়া গেছে?

নরকপ্রহরী ক্রোধান্বিত কণ্ঠে বলে ওঠেন- কসাই তুই ফাঁসির দড়ি গলায় দেবার পরেও কী ভুললে না পাকিস্তানের কথা? এমন সময় একটা বিষধর সাপ রুটিনমাফিক এসে কামড় বসায় কাদের মোল্লার কপালে। ব্যথায় ককিয়ে ওঠে সে। মুহুর্তেই সারা শরীর নীল হয়ে যায়। কাদের বলে হুজুর এভাবে আর কতদিন? প্রহরী বলে- অনন্তকাল! কাদের দুনিয়াতে ফিরে এসে বাগানে মালীর কাজ করতে চাওয়ার অভিপ্রায় জানায়! প্রহরী বলে- এটা ওয়ানওয়ে ট্রাফিক ফিরবার পথ নেই আর!

কাদের মোল্লা বলে ওঠে ম্যাডাম আমাদের জন্যে গণতন্ত্র খুজতেছেন। পাওয়া গেলো? বাকশালি সরকার সব গণতন্ত্র গোপালগঞ্জে রেখে এসেছে। মাঝে মাঝে ফলের ঝুড়িতে করে নিয়ে আসে ঢাকায়। গোপালগঞ্জে যাওয়ার পথ নেই তাই নয়াপল্টনে এসে দেশবাসী খুঁজছে। যারা এসেছে তারা শহীদী কাফেলার সৈনিক। তারা উদ্ধার করতে পেরেছে? প্রহরী নাকমুখ সিটিয়ে ধমক দিয়ে বলে ওঠেন- শালা বদমায়েশ, লুচ্চামি গেলো না! মরার পরেও ম্যাডাম-ম্যাডাম! প্রেসক্লাব-হাইকোর্ট আর নয়াপল্টনে কিছু লোক খুঁজতে গিয়েছিল কিন্তু তারা পায়নি। শেষমেশ একটা ছেলে মরেছে মালিবাগে। কাদের বলে- মারহাবা, মারহাবা! ছেলেটার বয়স কত? দেখতে-শুনতে কেমন? কমবয়েসী, কচি ছেলে, আবিয়াইত্তা?

কাদের মোল্লা ‘কচি ছেলে’ সম্পর্কে অতি উৎসাহী হয়ে যাবার পর প্রহরী তার মনোবাসনা বুঝতে পেরে কষে একটা বাড়ি মারেন মাথায়। এবারো মাথা ফেটে চৌচির হয়ে যায়। এখানে-ওখানে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া মাথার অংশ লুটিয়ে পড়ে। আবারো কিছুক্ষণের মধ্যে স্বস্থানে ফিরে আসে সেটা। অনন্তজীবন সেখানে বলে কাদের মারা যায়নি। কয়েকটা সাপ এসে আবারো ছোবল দেয় কাদের মোল্লার সারা শরীরে। দাত-মুখ খিঁচিয়ে অদ্ভুত স্বরে বিলাপ করতে থাকে কাদের মোল্লা।

তাকে জানানো হয় ‘রোড ফর ডেমোক্রেসি’তে পতাকা রাখার কথা ছিল। কাদের মোল্লা বলে ওঠে- ‘আচ্ছা বাত হ্যায়, পাকিস্তান কা নিশান রাজ করেগা’। ম্যাডাম নিশ্চয়ই পতাকা ধরেছেন। আহ, বুকের পতাকা এতদিন পর মুখে আসলো বলে একগাল হাসার চেষ্টা করে সে। যখন জানানো হলো- পাকিস্তানি পতাকা নয় বাংলাদেশের পতাকা! মুখটা কালো হয়ে গেলো তার। মনে পড়লো এটা পুর্ব পাকিস্তান নয়- বাংলাদেশ। কাদের বলে ওঠে- তাহলে নিশ্চয়ই ম্যাডাম বাম হাতে বাংলাস্তানের পতাকা ধরেছেন। প্রহরী বললেন- হ্যাঁ বাংলাদেশের পতাকা ম্যাডামের বাম হাতেই ছিলো। অট্টহাসি দিয়ে বাতাসে একটা লাফ দেবার চেষ্টা করে কাদের মোল্লা। লাফ দেয় বাতাসে কিন্তু আছড়ে পড়ে যায় তপ্ত আগুনে, পুড়তে থাকে!

কাদের মোল্লা আগুনে পুড়তে পুড়তে নরকের দরোজার দিকে তাকায়। সে দেখতে পায় দরোজার সামনে কয়েকটা ডামি মৃতদেহ সাজানো অবস্থায়ঝুলিয়ে রাখা। কয়েকটাতে অবশ্য খানিকটা জংও ধরেছে। কাদের মোল্লা প্রহরীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে- ওগুলো কী? প্রহরী বলেন- ওগুলো সব যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের জন্যে রাখা। এদের মধ্যে আছে সাঈদী, সাকা, কামারুজ্জামান, মুজাহিদসহ আরো অনেকেই। তুই আসার আগে তোর নামে একটা ঝুলানো ছিল। যার কর্ম্ম সারা তারটা নামিয়ে ফেলা হয়! অনেক দিন হয় আমরা অপেক্ষা করে বসে আছি, তাই খানিকটা জংও ধরেছে ওগুলোর গায়ে।

এরই মধ্যে নরকের বাসিন্দাদের গুণতির সময় চলে আসে। একটা পা এসে লাথি মারে কাদের মোল্লার পাছায়। লাথির চোটে কসাই কাদের গিয়ে দাঁড়ায় গুণতির লাইনে! লাইনে লাইনে অনেক মানুষ। গুণতি চলছে! এক, দুই, তিন...

কাদেরের মাথার ঠিক এক হাত ওপরে জলন্ত সূর্য!

Click This Link
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×