বৃষ্টিভেজা এক সকাল, মনে আনন্দ ছড়িয়ে দিলো।ঈদের আনন্দ যখন ম্লান, সন্ধ্যায় গেলাম বেড়াতে। কতো সময়, কতো মুহূর্ত গেলো কেটে তোমায় না দেখে। ভেবেছিলাম আর কোন দিন পাবো না তোমার দেখা। আঁখি যুগল সিক্ত হবে না; তোমার পথ পানে তাকিয়ে থাকতে হবে না। তোমার আর আমার মাঝের দূরত্বটা খুবই আশ্চর্যজনক, যার ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। তোমার পরিচয়ের মাধ্যমও যে সব সময় আসে না। আচ্ছা! কোন সম্পর্কে? কোন বায়নায় আবদার করবো তোমার সাক্ষাৎ। কি বলেই বা ডাকবো তোমায়? অনেক অন্তরায় তোমার ও আমার মাঝে। তুমি বিনা এক ছন্নছাড়া জীবন কাটাচ্ছি। কারণ, আজও আমি তোমায় বলতে পারিনি, তোমার আমার সম্পর্ক কোন সূত্রে গাঁথা। তুমি যে খুব অল্প সময়ই থাকো। তবে তুমি জানো আর নাই জানো, পৃথিবীর সবচে' নিবিড় সম্পর্ক আমাদের মাঝে। জানি না তোমার ভাবনার নীড় কাকে নিয়ে বুনছো? তোমার ঐ হাসি আমার হৃদয়-মন রাঙিয়ে দেয়। তোমার চোখে আমি আমার আগামি দেখতে পাই। তোমার সাথে ঈদের পরদিন দু'বছর পর বৃষ্টিভেজা সকালে সাক্ষাৎ হওয়াটা কল্পনাতীত। বলতে পারো স্বপ্নীল হল এ ধরণী; আনন্দে নেচে উঠল ধমনী। প্রত্যেকটি শিরা-উপশিরা তোমার সাক্ষাতে নব গতির সঞ্চার করলো। আজও তুমি সেই তুমিই আছো। কালের পরিবর্তন মোটেও আমাদের হাসি মলিন করতে পারেনি। বৃষ্টিস্নাত এমন সাক্ষাৎ প্রত্যাশা করিনি ঠিক, তবে বৃষ্টিতে ভিজতে যখন ছাদে উঠে, দোলনায় দুলছিলাম, অপলক নেত্রে তোমার ছাদপানে তাকিয়ে ছিলাম। চাতক পাখির মত। তখন মন দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করছিল, তুমি আসবে, অবশ্যই আসবে। মনের ডাকে সাড়া দিয়ে সত্যিই তুমি বাড়ির ছাদে ভিজতে আসলে। ভাবলাম, এটা আমার কল্পনা, নির্ঘুম রাতের আলেয়া। তোমার স্বচ্ছ নির্মল হাসি জানান দিলো স্বপ্ন নয় বাস্তব।তুমি কলেজে পড়ো শুনে আনন্দে মনটা নেচে উঠল। মনে হল, পলক ঝাপটাতেই দু'টি বছর কেটে গেছে। কিন্তু না! প্রতিটি প্রহর গুণেছি তোমার সাক্ষাতের প্রত্যাশায়। এরই নাম কি ভালোবাসা! আমার মনে অনেক দ্বিধা সংশয় ছিলো, সৌহার্দপূর্ণ আচরণের পরও বলতে পারিনি, এ মন তোমাকে চায়। তুমি যে আমার কত্তো আপন। আমি দগ্ধ হচ্ছি মনে লুকিয়ে থাকা অব্যক্ত যন্ত্রনায়।আমায় ফিরিয়ে দেওয়ার ভয়ে কখনো বলিনি, তোমায় আমি ভালোবাসি। কারণ, এ যন্ত্রনা বুকে বয়ে সইতে পারব না। তোমার বিচ্ছেদ-বিরহ ব্যাথায় ডুঁকরে কাঁদার ভয়ই আমায় কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। আজ গগণ ফাটা চিৎকার দিয়ে আকাশ, বাতাস, ঝর্ণা নদীকে সাক্ষি রেখে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, 'আমি তোমায় ভালোবাসি।' জমিয়ে রাখলে হয়ত বুক ফেটে মরেও যেতে পারি। অব্যক্ত যন্ত্রনাগুলো ব্যক্ত করবোই বা কি করে? এক ঘণ্টা পর বৃৃষ্টিই বন্ধ হয়ে গেলো। দু'জনার ছাদের দূরত্বটাও তো একটু বেশি।চিৎকার করলে, কেউ শুনে ফেললে যে উভয়ের মহাবিপদ হবে। হঠাৎ চোখের আড়াল হলে, একটাই আর্তি করছিলাম, শেষবারের মত যেনো তোমার সাক্ষাৎ পাই। পূণরায়, তোমার দেখা মিলল। দীর্ঘ সময় আমরা চোখের ভাষায় কথা বললাম। তুমি হাসলে আর তৃপ্তির রেখা ফুটে উঠলো আমার বদনে। এত্তো স্বচ্ছ নির্মল হািস কখনো আমি দেখিনি। আজও তোমায় কিছু বলতে পারলাম না। তোমার দর্শন আমার আনন্দ দিগুণ করে দিলো। ফিরার ইচ্ছা না থাকা সত্বেও বাধ্য হয়ে ফিরতে হল। কারণ, এমন জগতে তোমার সাথে আমার সাক্ষাৎ যেখানে আমার ইচ্ছা অনিচ্ছার কোন মূল্য নেই। মোবাইলে এলারাম বেজে উঠল, ৭.৩০ মি, পরক্ষণেই ঘুম ভেঙ্গে গেল। আর মুখে তৃপ্তির রেখা ফুটে উঠল। স্বপ্ন যে এতটা নিখুত ও সুন্দর হয় আগে কখনো ভাবিনি। তুমি আমার স্বপ্নের রাজ কন্যা, মনের ক্যানভাসে আঁকা ছবি। মনে হয় তুমি অপসরি বা হুর। আমি কি কখনো তোমাকে আমার মনের কথাগুলো বলতে পারব, নাকি স্বপ্নের মত চির তরে তুমি মিলিয়ে যাবে দূর অজানায়
_শক্তি শুধা (সাবেত চৌধুরী)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৪৯