somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঋণগ্রস্থ পশ্চিমা জীবন ও সুদের উপর স্বচ্ছলতার সঙ্গা

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৭:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঋণ নেই এমন মানুষ পাওয়া দুর্লভ । অথচ এত এত ঋণের পরেও তারা স্বচ্ছল, বিনোদন, সাধ-আল্লাদের ঘাটতি-কমতি নেই। জীবনটা বাকির খাতায় চলবে এটা হয়তো দেশে থাকতে ভাবতেই পারতাম না। দেশে সবকিছুই নগদে ঘটে। যথেষ্ঠ সম্পদশালী হলেই হয়ত ব্যাঙ্ক ঋণ মিলে।

পশ্চিমে শত প্রকার বীমা প্রতিষ্ঠান মানুষের ঋণের ভাগ্য প্রকৃতি নির্ধারণ করছে। দুর্ঘটনা, চিকিৎসা, মামলা যেকোনভাবে আপনার উপর চেপে বসতে পারে আরো কঠিনতর ঋণ যেটা মাসের কিস্তিতে দিয়েও সারা জীবনেও পরিশোধযোগ্য না। ঋণ পরিশোধের অপারগতায় আপনাকে তারা জেলে দিবেনা, কিন্তু ভবিষ্যতে ঋণ নেবার অনিবার্য বাস্তবতায় আপনাকে এক ঘরে করে ফেলবে।

ঋণকে ডাল-ভাতের মত বাস্তবতা মনে করে শান্তিতে শেষ নিঃশ্বাস ফেলার মত মানুষের অভাব নেই। আপনি মরে গেছেন, আপনার ঋণ মাফ। মামলা শেষ। কিন্তু পরকালে যাদের অন্ধ বিশ্বাস--তারা কি তৃপ্তি নিয়ে মরতে পারবে? অথবা ঋণের বোঝা ঠেলার জন্য মাসে মাসে যাদের সুদ দেয়া লাগে, আসলের সাথে । ঋণ শোধের আগেই যদি মৃত্যু হয়।

যারা ছাত্র হয়ে আসে তাদের ৬-১২ হাজার ডলার ঋণ জমে যায়। চাকুরি পেলে খরচ আরো বাড়ে, ঘর বাড়ি করার ইচ্ছে জাগে । তারপর সন্তানের পড়ালেখার বিশাল খরচ।এত এত ট্যাক্স দেবার পরে পুরোপুরি ঋণমুক্ত হয়ে ওঠা কি হয় আদৌ? সাথে যদি কোন দুর্ঘটনা যোগ হয়, যার কোন বীমা ছিলনা।


পশ্চিমে অমানুষিক পরিশ্রমের পরে যে উপার্জন, পরিবেশ, পরিস্থিতি, ধর্ম -সংস্কৃতির সাথে বেহিসাবি আপোস করা চলার যে মনোবৃত্তি তৈরি করতে হয় --তার সাথে বোঝাপোড়া প্রায়শই দুরহ। হালাল-হারাম, মদ-পর্ক, নামাযে স্থান-কাল ভুলে গেলে একটা জাগতিক উন্নতির রাস্তা তৈরি হয়--জীবনকে সহজসাধ্য করে নিতে অনেকেই সে পথেই প্রবাস জীবনটা গড়ে নেন। কিন্তু ধর্ম-সঙস্কৃতির কারাগার থেকে মুক্ত হতে না পারলে এই আপোসের টানা পোড়েনটা দুরহ। অথবা ওরা নিজের দেশের যোগ্যতর মানুষ ফেলে আমাকে কেন বৃত্তি, চাকুরি সুবিধা দিবে সেটাই বোধগম্যতার মাঝে আসেনি এই ৫ বছরের প্রবাস জীবনে। এক বা একাধিক ডিগ্রির পরে নিজেকে কেন যথেষ্ট উপার্জনক্ষম মনে করবো, তারও যৌক্তিকতা পাইনা।

নামাযের সময় বিরতি বা স্থান না পেলে নিজেকে নিতান্তই হতভাগ্য মনে হয়। হঠাৎ করে উড়ে এসে জুড়ে বসা ঋণের আতঙ্ক আমাকে স্বস্তি দেয়না। ভিন দেশের নাগরিক হিসেবে একজন এটর্নি জোগাড় করার সামর্থ্য বা বীমা কোম্পানি আইন -আদালতের কঠোর মারপ‌্যাচে আমি জড়োসড়ো হয়ে থাকি। ধর্মের বাধাগুলো সরিয়ে লোকাচারের সাথে মিশে গেলেই উন্নতি --এটা তো মর্ত্যের নিয়ম।

কিন্তু আমি ঋণ নিয়ে মরতে চাইনা, প্রবাসে ৫ বছর পরেও এতটুকু উন্নতি না হবার আক্ষেপ ছাড়াই বাঁচতে চাই, সামর্থ্য অনুযায়ী দু'বেলা রুটি খেয়েই বাঁচতে চাই । সামর্থ্যের বাইরে ক্রেডিট কার্ডের উপর ঋণগ্রস্থ থেকে সুখ-স্বচ্ছলতা চাইনা। আমি চাইনা যে ঋণ শোধের সামর্থ্য নেই, সেই ঋণ নিয়ে সুদের চাকা ঘুরিয়ে পশ্চিমা দেশে সুখি-স্বচ্ছল হতে।
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×