প্রথম গল্প-
আজ সকাল থেকে রসুই ঘরে রান্নার রাজকীয় আয়োজন। সবাই ব্যতিব্যস্ত। বাড়ি জুড়ে রান্নার সুঘ্রাণে মৌ মৌ। আমাদের ঘরে সাধারণত বছরে হাতে গোনা দু-চারবার এমন রান্না হয়। কোন বিশেষ উপলক্ষে রান্নার আয়োজন চলে। আজও এমন একটি উপলক্ষ। ফাঁকিবাজি কলেজ জীবনে আজ না গেলেতো খুব বেশী ক্ষতি হবে না। তার উপর ঘরে আজ রাজকীয় খাবার। সারাটি দিন ঘরের আশপাশ ঘুর ঘুর করতে থাকি। দ্বি-প্রহরের বিদায়ক্ষণে আমি ঘরের পশ্চিম কোনার রূমটার জানালার পাশে দাঁড়ালাম। রূমটা বুবুর। জানালার কপাট আলগোছে লাগানো। আমি খাওয়ার লোভে বুবুকে ডাকতে জানালার কপাট একটু মেললাম। বুবু পায়ের ভাঁজে মুখ লুকিয়ে কাঁদছে। আমি জানালার কপাট মিলিয়ে দিলাম।
আমার মায়াবতী বুবুকে ৭ম বারের মত দেখতে এসে ফিরে গেছে ছেলেপক্ষ। সবারই এক অভিযোগ, মেয়েটি কালো।
=
দ্বিতীয় গল্প-
স্কুলের মাঠে ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত শান্ত। ফিল্ডিং-এ মন প্রাণ। সজীব চিৎকার করে বলল, এই শান্ত তোর বাবা অফিস থেকে ফিরতেছে। স্কুল ঘেঁষা রাস্তায় বাবার দিকে তাকাতেই বাবার চোখে চোখ পড়ে। ডান হতে একটা বাজারের পুটলা আর বাম হাতে অফিস ডায়েরি। ভোঁ দৌড়ে স্কুলের পিলার-এ লুকায় শান্ত। মনে মনে ভাবতে থাকে আজ বিকেলে সন্তোষ স্যারের পড়াতে আশার কথা। বাসায় গেলে আজ একগাদা বকা শুনতে হবে। ভয়ে মন কুঁকড়ে আসে।
সন্ধ্যালগ্নে ভয়ে ভয়ে হাত-পা পুকুরে ধুয়ে চোরের মত ঘরে ঢুকে শান্ত। কাউকে কিছু না বলে পড়ার টেবিলের উপর বসে বই উল্টাতে থাকে। মা নানাবিদ ফল কেটে আর রস মলাই টেবিলে এনে দেয়। হতবাক হয় শান্ত। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পেরে জড়িয়ে ধরে মাকে। আর বলতে থাকে - বাবা আজ বেতন পেয়েছে!!
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৩:১৫