নেকড়ে কর্তৃক নবুওয়্যাতের স্বাক্ষী :ইমাম আহমদ রহ্তুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আবু সাইদ খুদরী রাদ্বিয়া্লাহু তায়ালা আনহু হইতে হাদীস শরীফ রিওয়ায়াত করিয়াছেন।তিনি বর্ননা করিয়াছেন যে,
একদা এক ইহুদী বকরী পালক দেখিতে পাইলেন একটি নেকড়ে বাঘ তাহার বকরী পাল হইতে একটি বকরী তাহার পাঞ্জার মধ্যে নিয়া নেয় কিন্তু বকরী পালক ইহা দেখিতে পাইয়া দৌড়াইয়া আসিয়া বকরীকে উহার পাঞ্জা হইতে ছাড়াইয়া লইল।
অতঃপর ঐ নেকড়ে বাঘ কিছুদুর সরে গিয়ে বসে পড়ে এবং বলে উঠে,"হে রাখাল!তুই আল্লাহকে ভয় করিস না যে , তুই আমার এই রিযিককে ছিনাইয়া লইয়া গেলি যাহাকে আল্লাহ্ তা'আলা আমার মুষ্টির মধ্যে দিয়াছিলেন।"
নেকড়ে বাঘের মুখে মানুষের ভাষায় কথা শুনে রাখাল আশ্চার্য্য বোধ করিল এবং বলিল , "তাজ্জুব ব্যপার! নেকড়ে বাঘ মানুষের ভাষায় কথ বলিতেছে।"
অতঃপর ঐ নেকড়ে বলিয়া উঠিল,"তোকে কি আমি ইহার চাইতেও অধিক আশ্চার্যের কথা বলিব না যে,আখেরী রসুলের এবং সত্য নবী ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) উার আগমন ঘটিয়াছে,তিনি পবিত্র মদীনা শরীফের অধিবাসীগনকে অতীতকালের ঘটনাসমুহ এবং সংবাদসমুহ বর্ননা করিতেছেন এবং মানুষ উনার কথা বিশ্বাস করতেছে না।"
তারপর ঐ রাখাল একথা শুনে বকরীগুলোকে এককোনায় একত্রিত করে রেখে মদীনা শরীফে রসুল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র দরবার শরীফে উপস্হিত হইল এবং সমস্ত ঘটনা উনার কাছে পেশ করলো।ইহা শুনার পর আল্লাহ্পাকের হাবীব রসুল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত লোকদের ডাকানোর নির্দেশ মুবারক দিলেন।অতঃপর রাখালকে সমস্ত ঘটনা তাদের সামনে বর্ননা করিতে বললেন।
অনুরুপভাবে ইমাম বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর রাদ্বিয়া্লাহু তায়ালা আনহু হইতে এবং আবু নুআয়ম রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আনাছ রাদ্বিয়া্লাহু তায়ালা আনহু হইতে বর্ননা করিয়াছেন।আর একই ঘটনা হযরত আবু হুরাইরা রাদ্বিয়া্লাহু তায়ালা আনহু হইতে শুদ্ধ সুত্রের সহিত উলে্লখ করা হইয়াছে যে,যখন নেকড়েটি হইতে তাহার শিকার ছিনাইয়া লওয়া হইল এবং বলে উঠিল,"হে রাখাল!তুই আল্লাহকে ভয় করিস না যে , তুই আমার এই রিযিককে ছিনাইয়া লইয়া গেলি যাহাকে আল্লাহ্ তা'আলা আমা মুষ্টির মধ্যে দিয়াছিলেন।"
নেকড়ে বাঘের মুখে মানুষের ভাষায় কথা শুনে রাখাল আশ্চার্য্য বোধ করিল এবং বলিল , "তাজ্জুব ব্যপার! নেকড়ে বাঘ মানুষের ভাষায় কথ বলিতেছে।"
তখন নেকড়ে বলিলো,ইহার চেয়েও আশ্চর্য হইল এই যে,
"তুই বকরী পালের সহিত দাঁড়াইয়া আছিস এমন একজন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ত্যাগ করিয়া যাহার চেয়েও সুমহান এবং মর্যাদাবান কোন নবী আলাইহিস সালাম আল্লাহ্ তা'আলা ইতিপুর্বে প্রেরন করেন নাই।নিঃসন্দেহে উনার জন্য এবং উনার সন্মানার্থে উনার উম্মতের জন্য বেহেশতের সকল দরজাসমুহ উন্মুক্ত করিয়া দেওয়া হইয়াছে।উনার সন্মানার্থে জান্নাতের সকল অধিবাসী সন্মানীত হইয়াছে।এখন জান্নাত উনার জন্য এবং উনার উম্মতের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।এখন তোর এবং উনার মাঝে এই পাহাড় বা টিলা ছাড়া আর কিছুই নাই।এখন তুই উনার খিদমতে যা এবং ইমান এনে নিজেকে আল্লাহের সৈন্যদের অন্তর্ভুক্ত কর।" তখন রাখাল বললো,"তাহা হইলে এই বকরী গুলো চরাইবে কে?"
নেকড়ে বাঘ বলিল,"আমি তাদের দেখাশোনা করিবো।"
অতঃপর ঐ ইহুদী রাখাল দরবারে নব্বী শরীফে আগমন করিল এবং ইমান গ্রহন করিলো।
অনুরুপ জাতীয় একটি বর্ননা আবু সুফিয়ান ইবনে হারব রাদ্বিয়া্লাহু তায়ালা আনহু এবং সফওয়্যান ইবনে উমাইয়্যা হইতেও রিওয়ায়েত আছে।
[সুত্র : পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বশেষ্ঠ একজন মুহাদ্দিস,পাক-ভারত উপমহাদেশে যিনি সবচেয়ে বেশি হাদিস শরীফ প্রচার-প্রসার করেছেন হযরত আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহ্তুল্লাহি আলাইহি রচিত কিতাব "মাদারিজুন্ নুবুওয়্যাত" এর প্রথম খন্ড-ষষ্ঠ অধ্যায় হইতে লওয়া হইয়াছে।]
আর উনার জমিনে আগমন সকল ইমানদারদের জন্যে সবচেয়ে বড় ও মহান খুশীর ঘটনা।
পবিত্র কুরআন শরীফের সুরা আল আম্বিয়া-এর ১০৭নং আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
০ وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِن
অর্থঃ হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি অবশ্যই আপনাকে সারা আলমের জন্য রহমত স্বরুপ পাঠিয়েছি।
আর উনাকে সৃষ্টি জগতের জন্য মুল রহমত হিসাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।তাই উনাকে যে আমরা পেয়েছি এ জন্য খুশি প্রকাশ করতে হবে।
এই প্রসংগে পবিত্র কুরআন শরীফের সুরা ইউনসু-এ ৫৮ নং আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
قُلْ بِفَضْلِ اللَّـهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ
অর্থাৎঃ(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক উনার ফযল ও রহমত (স্বয়ং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে) পাওয়ার কারণে তোমাদের উচিত ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা।এই খুশি প্রকাশ করাটা সেসব কিছু থেকে উত্তম, যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।”
অর্থাৎ আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীনে তাশরীফ মুবারক উপলক্ষে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা।
যা আসতে আর মাত্র ৯ দিন বাকি।
অর্থ্যাৎ ১৪ই জনুয়ারী'২০১৪ ইসায়ী সন।
মহান আল্লাহপাক আমাদের সে তাওফিক দান করুন।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৫