somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গায়েবি ভোট, ফার্স্ট হয়ে গেলেন হাসিনা (সকালে শূন্য, দুপুরে সামান্য, বিকেলে একদম বোঝাই। এমন বোঝাই হয়ে গেল- নৌকা ডুবে ডুবে ভাব। )

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গায়েবি ভোট। শব্দটা পুরনো। আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম। ১৭ বছর আগের কাহিনী মনে থাকবার কথা নয়। ৫ই জানুয়ারি ভোটে আবার শোনা গেল, ভোটের ইতিহাসে এটা নয়া এক অধ্যায়। নির্বাচন কমিশন লজ্জা পায়নি। শাসকরা উল্লসিত। তবুও তো ভোট হয়েছে। কলঙ্কিত হোক, তাতে কি যায়-আসে। ভোটাররা ভোট না দিলেও যখন ভোট হয় তখন এতো কসরত কেন? এমন ভোটই হয়ে গেল রোববার। গায়েবি ভোটে বোঝাই হয়ে গেল বাক্স। সকালে শূন্য, দুপুরে সামান্য, বিকেলে একদম বোঝাই। এমন বোঝাই হয়ে গেল- নৌকা ডুবে ডুবে ভাব। কোনমতে তীরে পৌঁছালো বটে। তবে নৌকার হাল নেই। আর চলবে না। নয়া নৌকা বানাতে হবে। শেখ হাসিনা হয়তো বলবেন, ভাল লোক নৌকায় ওঠেনি। তাই বলে তো খালি নৌকা চালিয়ে আনা যায় না। ভেজাল তো থাকবেই। খালি মাঠে গোল দেয়ার মতো আর কি? গোলপোস্ট যেখানে নেই সেখানে চারদিকেই মনে হয় গোলপোস্ট। একজন সহকর্মী বললেন, নির্বাচন কমিশন নাকি দিনভর তটস্থ ছিল। কারণ, তারা নাকি ভাল কিছু আশা করেছিল। সেটা আবার কি? কাজী রকিবউদ্দীনের চরিত্রের মধ্যেই ভাল কিছু নেই। বিএনপি’র জমানায় পর্দার আড়াল থেকে কলকাটি নাড়ানো হতো। আওয়ামী জমানায় রাখঢাক কিছু নেই। সব কিছুই প্রকাশ্য। কতভাগ মানুষ ভোট দিলেন- তা কিন্তু রাতে জানা গেল না। কারণ, চাপের মধ্যে রয়েছেন কাজী রকিব। আওয়ামী ইচ্ছা সেটা যেন ৪০-এর ওপরে হয়। সে রকম চেষ্টা চলছে রোববার দুপুর থেকে। রাতেও কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। কেন পারেনি? মিডিয়া সর্বনাশ করে দিয়েছে। সরকার বিরোধী কোন মিডিয়া নয়। হাল জমানায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত টিভিগুলো ভোটের চিত্র যা দেখিয়েছে তাতে দেশবাসী জেনে ফেলেছে ভোটের গোপন রহস্য। বিশ্ববাসীও ধরে ফেলেছে ভোটের যতসব চালাকি। নিরপেক্ষ ভাষ্যকাররা বলছেন, দশ থেকে পনের পার্সেন্ট ভোটারের উপস্থিতি দেখালেও বেশি বলা হবে। রাজধানীর বস্তিবাসীদের কি যে আনন্দ। তিন আসনে ভোট দিয়ে একেকজন হাজার টাকা কামিয়েছে। লাইনে দাঁড়ালেই পয়সা পেয়েছে। আসল কাজটা সেরে ফেলেছে ভোটের কারিগররা। আগে যেমনটা ঘটেনি এবার ঘটেছে। প্রিসাইডিং অফিসার নিজেই যেখানে সিল দিয়েছেন সেখানে ভোটের হিসাব মেলানো কঠিন নয়। পত্রিকায় ছবি দেখে প্রিসাইডিং অফিসার সাময়িক লজ্জা পেলেও তার জন্য প্রমোশন অপেক্ষা করছে। গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য এবার অমোচনীয় কালিরও দরকার হয়নি। প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্টরা নিখুঁতভাবে কাজটা সম্পন্ন করেছেন। কোন কোন অঞ্চলে নাকি রাতেই ভোটরঙ্গ মঞ্চস্থ হয়ে যায়। উপদেষ্টা এইচটি ইমাম খাঁটি কথা বলেছেন। এবারের ভোট নাকি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। উদাহরণ তো বটেই। ভোটে না দাঁড়িয়েও জেতা যায়। হাসপাতালে বসে এরশাদ হাসছেন। এটাও সম্ভব। সব সম্ভবের দেশে ১৫৩ জন যেখানে বিনা লড়াইয়ে জেতে যান সেখানে ভোটের হিসেব নিয়ে মন্তব্য না করাই ভাল। ভোটের ইতিহাসে নয়া ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন ৪১টি কেন্দ্রের সম্মানিত ভোটারেরা। তারা ভোট দিতে যাননি। এমন প্রতিবাদ থেকে শাসকরা বুঝতে পারছেন না তারা কি বার্তা দিয়েছে। স্যালুট জানাই তাদের। আসুন সবাই মিলে তারস্বরে বলিÑ জয় হোক ভোটের, গণতন্ত্রের। মিডিয়ার কি করার আছে? বসে বসে হিসেব মেলাবে। নাকি রেকর্ড রাখবে ভবিষ্যতের কথা ভেবে। একতরফাভাবে গায়েবি ভোটের দৌড়ে হাসিনা এগিয়ে থাকলেন। এরশাদ ছিলেন প্রথম। দ্বিতীয় খালেদা। এবার হাসিনা নয়া রেকর্ড তৈরি করে সবাইকে টেক্কা মারলেন। গায়ে লাগলো ময়লা। তিনিও তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী। খালেদা এখন আর সেটা দাবি করতে পারবেন না। এখন যদি কিছু হয়। অর্থাৎ সমঝোতা। যেহেতু তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছেন শেখ হাসিনা সেখানে সমঝোতা হতে আপত্তি কোথায়? আসলে কি তা হবে? বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। ভোটার বিহীন নির্বাচন করে যারা উল্লাস করছে তাদের কাছে এই প্রত্যাশা আসলে কতটুকু বাস্তবসম্মত! দেশ জ্বলছে। মানুষ মরছে। চারদিকে শুধু নাই আর নেই। ব্যবসা-বাণিজ্য পঙ্গু। দিনমজুরদের মুখের হাসি কেড়ে নেয়া হয়েছে। এবার যদি তারা ঘুরে দাঁড়ায়। আর আমজনতা! তারা মার খাবে দু’দলের। ভোটে না গিয়ে তারা অবশ্য প্রতিবাদ জানিয়েছে। কেউ কেউ বলেন নীরব। আসলে এটা ছিল সরব প্রতিবাদ। জনগণের সম্মিলিত প্রতিবাদ গণতন্ত্রের খোলসটাকে রক্ষা করেছে। শাসকরা যদি এখন এই খোলসটাকেও শেষ করে দিতে চান তাহলে যা হবার তাই হবে। গণতন্ত্র নির্বাসিত হবে। একনায়কতন্ত্রের কাছে বন্দি হবে দেশ। সে পথে হাঁটার জন্য বড্ড তাগিদ। ভোট শেষ হতে না হতেই পাশের বাড়ি থেকে পরামর্শ এসে গেছে, দুনিয়াকে নাকি তারা বোঝাবে দোহাই লাগে এই দেশটির বিরুদ্ধে অবরোধে শামিল হইও না। নির্বাচন কেমন হলো তা বিচার না করে জঙ্গিবাদ বিরোধী কাফেলায় শরিক হওয়াই এই মুহূর্তের জরুরি তাগিদ। মন্দ নয় তাদের এই পরামর্শ। এই পরামর্শ শুনলে শেখ হাসিনার কতটুকু লাভ হবে জানি না- তবে দেশের সমূহ ক্ষতি হবে। শাসককুল জানেন কিনা জানা নেই, তরুণ সমাজ কিন্তু ক্ষেপে রয়েছে। নতুন ভোটারদের প্রতিবাদ আরও কঠিন হতে পারে। সেদিকে হয়তো দেশটা যাচ্ছে। সনাতনী রাজনীতির ধারা থেকে দেশটা যে কোন সময় বেরিয়ে যেতে পারে। এই মন্তব্য প্রতিবেদন যখন লিখছি তখন একজন অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক ফোনে জানতে চাইলেন কি হচ্ছে। বললাম, জানি না। কি আর হবে আমাদের নিয়তি যা তাই তো হবে। এর বাইরে কি? তিনি হাসলেন।

সুত্রঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:১২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×