দশম নির্বাচন বাতিল করে সমঝোতায় আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
Published : 06 Jan 2014, 08:13 PM
দশম সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পরদিন সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান। বিরোধী দলবিহীন নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর এটাই তার প্রথম প্রতিক্রিয়া।
এই বিবৃতি দেয়ার আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সমঝোতার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছেড়ে আসতে খালেদার প্রতি আহ্বান জানান।
রোববারের ভোট জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে দাবি করে খালেদা জিয়া এই নির্বাচন বাতিল করে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।
“নির্দলীয় নিরপেক্ষ একটি সরকারের অধীনে সকলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি,” একইসঙ্গে বলেন তিনি।
খালেদা সমঝোতার কথা বললেও লন্ডনে অবস্থানরত তার ছেলে দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে সমঝোতার সম্ভাবনা নাকচ করে সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
সরকার এবং খোদ প্রধানমন্ত্রী অস্বীকার করলেও খালেদা জিয়া দাবি করেছেন, গুলশানের বাড়িতে তাকে কার্যত গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।
“আমাকে কার্যত গৃহবন্দি এবং জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে, বিরোধী দল ও জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে সমস্যা ও সঙ্কটের সুরাহা হবে না। সন্ত্রাসের পথে অবৈধ ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করার অপচেষ্টাতেও শেষ রক্ষা হবে না।”
“বরং তাতে সঙ্কট আরো জটিল ও গভীর এবং সমাধানের অযোগ্য হয়ে পড়বে,” সরকারকে সতর্ক করেন তিনি।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে দেশের ‘কলঙ্কজনক অধ্যায়’ আখ্যায়িত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “আমি অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশের সচেতন নাগরিকবৃন্দ ও ভোটারদের। তারা ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে কলঙ্কময় প্রহসনকে বর্জন করেছেন।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারকে কেড়ে নিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের শাসন ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে চাইছে। কতটা নির্লজ্জ হলে তারা এরপরও বলতে পারে যে, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে এবং তারা দেশ পরিচালনায় জনগণের ম্যান্ডেট পেয়ে গেছে।”
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ আসনের প্রার্থী নির্বাচিত হওয়াকে ‘সিলেকশন’ আখ্যায়িত করে খালেদা বলেন, “বাকি ১৪৭ আসনেও ভোটারদের সমর্থন তো দূরে থাক, তারা ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের হাজিরই করতে পারেনি।”
“কাজেই এই সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার আর কোনো নৈতিক ও সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। জনগণের অনুমোদন ছাড়া দেশ পরিচালনার এখতিয়ার কারো থাকে না।”
নেতা-কর্মীদের রাজপথে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানিয়ে কেন্দ্র থেকে যখন যে কর্মসূচি ঘোষণা হবে তা পালন এবং স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরো সোচ্চার ও সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন বিরোধীদলীয় নেতা।
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “সারাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সব মিথ্যাচার ও কারসাজিকে মোকাবিলা করে তাদের হৃত অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে অটল থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। অবৈধ সরকার দীর্ঘায়িত হবে না।”