somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুভ জন্মদিন চানাচুর!!!

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ বিশ্ব চানাচুর দিবস! কারণ এই দিনে ব্লগার চানাচুর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাই আজকে সমস্ত বিশ্ববাসির ফ্রি চানাচুর খাওয়ার সুযোগ এবং অধিকার দুটাই আছে !:#P !:#P !:#P

ব্লগার চানাচুর আমার জমজ বোন খুশকির খালাতো ভাই হয়। সে হিসাবে সে টুশকির, মানে আমারও খালাতো ভাই।খুশকির অনেক ইচ্ছা ছিল তার পুরাতন ব্লগ অ্যাকাউন্ট থেকে এ পোস্ট টা দেওয়ার, কিন্তু স্মৃতিশক্তি শেষ মুহূর্তে প্রতারণা করায় এই জনজীর্ণ অ্যাকাউন্ট থেকেই পোস্ট দিতে হচ্ছে। আমাদের অনেক ইচ্ছা ছিলো আমরা একসাথে পাবনা ইউনিভার্সিটিতে পড়বো। কিন্তু সে শখ পূরণ হয়নাই। আমাদের এখনকার নতুন শখটা মাঠে মারা গেছে বলে জাতিকে অবগত করা যাচ্ছেনা।

সে দিনদিন রান্নাবান্নার প্রতি আগ্রহী হয়ে এটা সেটা বানাচ্ছে। সাথে সাথে বিজ্ঞাপণ দিয়ে বলছে "জানিস, খেতে কি মজা হয়েছে, খেলে তুই পাগল হয়ে যাবি"! তবে সত্যি সত্যিই যে মজা হয় সেটা তার বড়ভাই ব্লগার আউলা কর্তৃক স্বীকৃত। তবে সে নিজের সম্পর্কে এ ব্যাপারে খুবই বিনয়ী সেটা আমি নিজেকে দিয়েই বুঝি। ব্লগে নুশেরা আপুর কাছ থেকে পুডিং বানানো শেখার পর থেকে আমি তালগাছে উঠে বসে ছিলাম। নিজের ফুটানির জ্বালায় নিজেই অতিষ্ঠ, এমন ভাব আমি দশ-বারোটা রান্নার বই লেখে ফেলছি :!> । এমনকি ফেসবুকের রান্না-বান্না গ্রুপেও মাঝে মাঝে জ্ঞান বিতরণ করতাম :#> । যেদিন শুনলাম চানাচুর শুঁটকি রান্না করেছে, সেদিন ধপাস করে তালগাছ থেকে পড়ে গেলাম। এখন আমি "প্রায়" ফুটানিমুক্ত।

আগে আমি তার সাথে মাঝেমাঝে মুরুব্বীয়ানা করতাম। সে সাথে সাথে বলত "তুই খবরদার আমার সাথে দাদাগিরি করবিনা"! এখন সে নিজেই আমার সাথে দাদাগিরি করে। অবশ্য যখন আমি দার্শনিক মুডে চলে যাই, তখন যে খালাতো ভাইটাকে সবসময় দাদাগিরি করার জন্য পাওয়া যায় এটা আমার জন্য অনেককিছু। গত কয়েক বছর ফেসবুকে ওকে উইশ করতাম, এবার ওকে নিয়ে আলাদা করে ব্লগে লেখতে ইচ্ছা হল। বড় ধরণের থ্যাংক ইউ অর্থাৎ ধইন্যাপাতা আমার কাছে ওর পাওনা ছিলো।

এত ভালো ভালো কথা বলতে বলতে দম শেষ হয়ে আসতেছে। উপরের কথাগুলো চানাচুর-রচনার ভূমিকা মাত্র! গ্রামীণফোন তৃতীয় মাত্রায় যেমন তর্কাতর্কি, গালাগালি, হাতাহাতি শুরুর আগে উপস্থাপক জিল্লুর রহমান সুন্দর সুন্দর কথা বলে নেন, এখানেও তাই করলাম। তাছাড়া বেশি ভালো ভালো কথা বলে তাকে আকাশে তুলে দেওয়াও ঠিক না। বেশি উপরে উঠলে যেকোন সময় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে সদ্য রিলিজ পাওয়া, "দূরে পলায়া যাই" মনোভাব সম্পন্ন, দ্রুত গতিতে উড়ে আসা সাদা পায়রার সাথে তার কোণাকোণি সংঘর্ষ লেগে যেতে পারে।

চানাচুর আসলে কত্তবড় ফাজিল- এটা নানা গুণীজনের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর নিশ্চিত হয়েছে। নিচে তাদের সাক্ষাৎকারের মূল অংশটুকু দেওয়া হল।

প্রথমেই কথা হয়েছে বিশিষ্ট ব্লগার একরামুল হক শামিমের সাথে। এখানে বলে রাখা ভালো, ব্লগের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, ব্লগারদের বিয়েশাদী, জন্মদিন, দাওয়াত সবখানেই তার উজ্জ্বল উপস্থিতি ও খাওয়ার টেবিলে ততোধিক উজ্জ্বল হাসিমুখের জন্য তিনি খেকু শামিম নামেও পরিচিত। তিনি শুরু থেকেই সাক্ষাৎকার দিতে চাচ্ছিলেন না, তবে জন্মদিনের কথা বলামাত্র তিনি রাজী হয়েছেন, কারণ আমরা জানি যে, জন্মদিনে সাধারণত কেক কাটা হয় /:)

আমি: চানাচুরের অপকীর্তি সম্পর্কে কিছু বলুন।
একরামুল হক শামীম: চানাচুর খুব ভালো। চানাচুর ব্লগে দীর্ঘদিন ছেলে সেজে ব্লগিং করেছিল। তখন খুব মজা করতো। চানাচুরের জন্মদিনে শুভেচ্ছা।

বুঝলাম, তিনি দাওয়াত বাতিলের ঝুঁকি নিতে চান না। তাই সময় নষ্ট না করে চানাচুরের বড়ভাই, খ্যাতিমান "গরীব" স্ক্রিপ্টরাইটার ব্লগার আউলার কাছে গেলাম। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তিনি গড়গড় করে কবিতা আবৃতির মত চানাচুরের বদনাম করে গেলেন। দূর্নীতি যখন জন্মদিনের কেকেও প্রবেশ করেছে, তখন মাননীয় আউলার মত নীর্ভিক সত্যাচারীর সন্ধান পেয়ে আমি সত্যিই আপ্লুত।

আমি: চানাচুর সম্পর্কে একটু বলুন।
আউলা: বড়ই অভিমানী। প্রায়ই ঘোষণা দেয় আমাকে এটা সেটা বানিয়ে খাওয়াবে। কিন্তু আলসেমি করে চা ই বানায় না। পড়ালেখার ব্যাপারে খুবই সংগ্রামী চিন্তা ভাবনার অধিকারিনী সে। তবে সেটা টার্ম শেষে আর নতুন টার্ম শুরুর মাঝে যে ছুটি থাকে ঐ সময়। টার্ম শুরু হলেই তার আর কিছু ভালো লাগেনা। নিজের সম্পর্কে তার ধারণা সে কোনদিনই মোটা হবেনা। খালাতো ভাই খুশকির মত তারও বিরিয়ানী পছন্দ। একটা গান বারবার শুনে। প্রায়ই এর ওর নামে কমপ্লেইন করে, পরে দেখি তারা তার জিগরি দোস্ত।
আমি: চানাচুর কি কখনো খুশকির ব্যাপারেও কমপ্লেইন করেছে?
আউলা: হ্যা.......

কি বিষয়ে সেটা শোনার পর আমি ১ সেকেন্ড সংজ্ঞাহীন ছিলাম তাই বিস্তারিত জানানো সম্ভব হচ্ছেনা।

আমি: আচ্ছা, যা বলছিলেন, বলুন।
আউলা: সে বেকুব টাইপ। একজনের একটা জিনিস অপছন্দ তাকে কড়া ঝাড়ি দিবে সেটা বাসায় পারে, বাইরে গেলে পারেনা। বাচ্চাদের অনেক জ্বালাতন করে, তাদের বকা দিবে, অকারণে শাসন করবে, খেলনা লুকিয়ে রাখবে। উদ্ভট নেলপলিশ পছন্দ। ফোন ধরার ব্যাপারে উদাসীন। মতিচুরের লাড্ডুর গল্পই করলো, কখনো চোখে দেখা হলনা। মাঝে সারাদিন ইউটিউবে বসে রান্না দেখত। কিন্তু কিছুই খাওয়াইলোনা। আর কিছু নাই বলার।

দীর্ঘ সফল সাক্ষাৎকার শেষে সামুর আবাসিক পাগল ব্লগার সাইন্সজোন যিনি বিস্কুট পাগলা নামেও পরিচিত তার কাছে গেলাম।

আমি: চানাচুরের অপ্রকাশিত দূর্নীতি সম্পর্কে কিছু বলুন।
বিস্কুট পাগলা: ও একটা বদ, ওরে নিয়ে আমি কোন কথাই বলতে চাইনা। আমার বিস্কুট আন্দোলনে অলওয়েজ কুৎসা রটায় বাধা দিছে। আমি চাই তার চানাচুর বিজনেসে ধ্বস নামুক তাতে সে একটা ৫00000 কিলোওয়াটের শক খাবে। আর সেই শক তার মাথার সব ছিঁড়া তার জোড়া লাগায় দিবে। কারণ আমার এত ভালো একটা ফ্রেন্ড তারছিঁড়া থাকুক এটা আমি চাইনা। বন্ধু তুমি যেখানেই থাকো সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসো। গেট ওয়েল সুন। আর এক বস্তা তোর জন্য চানাচুর ফ্লেভারের বিস্কুট। তার জন্য একটা মেডেল বরাদ্দ থাকলো।

সবশেষে সাক্ষাৎকার নিতে গেলাম চানাচুরের খালাতো ভাই, আমার জমজ বোন খুশকির কাছে।

আমি: নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে চানাচুর আপনার নামে খালি কমপ্লেইন করে। এ ব্যাপারে আপনার অনুভূতি কি?
খুশকি: আমি মাইন্ড করেচি।
আমি: আর?
খুশকি: আমি দুঃখ পেয়েচি।
আমি: আর?
খুশকি: আমার খিদা লেগেচে।

এরপর সেই যে তিনি কলা খাওয়া শুরু করলেন, আর থামলেনই না। তাই সাক্ষাৎকার এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ রাখতে হল।

আশা করি এই প্রবন্ধটি পড়ার পর সবাই একবাক্যে স্বীকার করবেন- চানাচুর আসলে ঝাল।

এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। সবাইকে বিশ্ব চানাচুর দিবসের শুভেচ্ছা!
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×