আদেল, আমাদের সহকর্মী, বন্ধু। আমরা যারা মিডিয়ার কাজ করছি/করেছি, অনেকেই আদেলকে জানি। বাকিরা হয়তো তাকে এটিএন নিউজ, সময়, একাত্তর এবং চ্যানেল ২৪-এর পর্দায় নিউজ কাভার করতে দেখে থাকবেন।
রিপোর্টিঙের এই সাহসী তরুণটি তার মায়ের ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য একবছরেরও বেশি সময় ধরে জীবন বাস্তবতার বিরুদ্ধে কী কঠিন লড়াই লড়ে যাচ্ছে, হয়তো কেউ কেউ জানেন।
ক্যারিয়ারের উজ্জ্বলতম সময়টিতে ক্যারিয়ার নিয়ে এগিয়ে যাওয়া আর মা কে বাঁচানোর লড়াইয়ের মধ্যে তাকে একরকম বেছে নিতে হয়েছে মা কেই। এই সাহস ক'জনের হয়?
একবছর আগে আদেলের জন্যই আমরা নেমেছিলাম মা কে বাঁচানোর জন্য অর্থ সংগ্রহে। অনেকের অসাধারণ মমতা পেয়েছিলাম সেসময়। এই মমতাই এই মায়ের জরায়ু ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়ে বেঁচে থাকার চেষ্টাকে একবছর পর্যন্ত টিকিয়ে রেখেছে। পরাজিত হননি তিনি। আদেল হাল ছাড়েনি।
কিন্তু ক'জন খবর রাখি, এই একবছরের লড়াই একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারকে কতখানি পঙ্গু করে দেয়? কতটা ক্ষয়ে যায় জীবন?
গত ছ'মাসে আদেলের মা কয়দিন বাসায় থাকতে পেরেছেন, আর কয়দিন হাসপাতালে ছুটতে হয়েছে, আমি দেখেছি।
পাশে থাকার মানে দিন দিন পাল্টে যেতে শুরু করেছে। বিভ্রান্ত লাগে, হতাশ লাগে- আসলেই কী পারছি করতে? কী করলে কিছু করা হয়? আদেলের আম্মা এখনো হাসপাতালে। আদেলের দিকে তাকাতে পারিনা। ওর সঙ্কোচ, অসহায়ত্ব দেখে পালাতে ইচ্ছে করে, কিছু করতে না পারার আক্ষেপে মুখ ঢাকতে ইচ্ছে করে। কিন্তু পালালে কি কিছু সমাধান হয়?
বাস্তবতা হলো, হাসপাতালের, ওষুধের, চিকিৎসার এই বিপুল খরচ তো শুধু পাশে থেকে সাহস জোগালে মেটে না। এর জন্য প্রতিদিন অর্থ প্রয়োজন। সঞ্চয় কতদিন টেকে?
তাই এই অসময়ে, আবারও, সবার কাছে হাত পেতে দিলাম। যাঁরা একবার করেছেন, আরেকবার পাশে দাঁড়ান। আপনাদের ছাড়া যাওয়ার জায়গা যে নেই।
দেশের এই দুঃসময়েও, সত্যি, আদেলের জন্য স্বার্থপরের মতো আমার অনেক বেশি ব্যাথা। কারণ দূরে দেখার আগে আমার পাশের বন্ধুটি আমার চোখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে।
দুটো নম্বর নিয়ে তাই আপনাদের কাছে আমার আরেকবার চাওয়া। আদেলের জন্য, একজন বন্ধু আর একজন মায়ের জন্য, শেষবার হাত বাড়ান।
রাফে সাদনান আদেল, মোবাইল- ০১৭৫৩০৯১২৪৯, বিকাশ-০১৭৫৩০৯১২৪৯