somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একুশ বছর চার দিন

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝে মাঝেই ছেলেটিকে এই পথে হাটতে দেখা যায়।সবসময়ই কেমন যেন আনমনা চলন।আজ যেমন হেটে যাচ্ছে আপনমনে।চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা আর পরনে ধুসর টিশা্র্ট এর সাথে রংচটা জিন্সের প্যান্ট।কিন্তু যে জিনিসটা ছেলেটাকে আর দশটা ছেলে থেকে আলাদা করে দেয় তা হল ওই মোটা ফ্রেমের আড়ালের চোখজোড়া।এক অদ্ভুত দিপ্তি যেন ফুটে ওঠে সেখান থেকে।
ওর একুশতম জন্মবা্র্ষিকির কথা।যেদিনটা ওর কাটানোর কথা অনেক আনন্দে তার বদলে শুরু হয় এক ধাক্কা দিয়ে।এমন একজন যাকে ও নিজের থেকেও বেশি পছন্দ করে ওকে ছেড়ে চলে যায়। জীবন তখন বৃথাই মনে হয়।চারদিন পরের কথা।মনে হয় একজন মানুষ না থাকার মানে জীবন বৃথা হতে পারেনা।জীবনের মানে আরও বড় কিছু।বাস্তবতার ক্যানভাসে স্বপ্নের রঙ তুলির আচরে আকা প্রতিচ্ছবিই তো এই পৃথীবিকে রঙ্গিন করে আছে নিয়ত।তাই ও ঠিক করে জীবনকে দেখার এ দৃ্ষ্টিভঙ্গি আজীবন অম্লান রাখবে।ওর বয়স তাই হবে একুশ বছর চার দিন।এর পর থেকে তাই কেউ যদি জিজ্ঞেস করে ওর বয়স কত নি্র্বিকারে উত্তর দেয় একুশ বছর চার দিন।ওর খুব কাছের বন্ধুটা হয়ত ওকে ওর জন্মবা্র্ষিকির দিনে এই উত্তর পেয়ে বলে “শালা ফাজলামোর আর জায়গা পাসনা।জন্মদিনের দিন বলিস বয়স একুশ বছর চার দিন।“ তখন ও বলে “আমার বয়স হয়ত তেইশ বছর কিন্তু আমার মনের বয়স তো একুশ বছর চার দিন।“
একদিন রেললাইনের পাশ দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় এক মেয়ের কান্না ভেসে আসে ওর কানে।তাকিয়ে দেখে প্রতিদিন রাস্তার পাশে যে পাগল মেয়েটাকে ভিক্ষে করতে দেখা যায়, চার পাচটা ছেলে তাকে টানতে টানতে এক বগীর ভিতরে নিয়ে যাচ্ছে।আর দশটা মানুষের মত ছেলেটাও এই চিন্তে করতে করতে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নেয় যে আমার কি? আমি কেন শুধু শুধু বিপদে পরতে যাব?কিছুদুর যাওয়ার পর ও থমকে দাড়ায়।নিজেকে ধিক্কার দিয়ে ওঠে কি করতেছি আমি?ঘুরে দাঁড়ায় পিছনের পথে।যেই পথে ডুকড়ে ওঠা কান্না ট্রেনের বগীর দেয়ালে ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়।
তখন যদি কেউ ওর চোখের দিকে তাকাত তাহলে ঐ অদ্ভুত দিপ্তিটাই যেন দেখতে পেত।
পরেরদিন কোন এক মফস্বল শহরে দুইটা টোকাই ছেলে একে অপরের সাথে কথা বলছে।“ঐ জানিস আইজকা না ট্রেনের ছাদে এক বেডার লাশ পাইছে।যাবি দেখত?” আরেকজন তখন বলে ল যাই।
যতক্ষনে টোকাই ছেলে দুটো লাশের পাশে যায় তার আগেই পুলিশ এসে হাজির।দু একটা সাংবাদিক ও দেখা যায় আশেপাষে। তারমাঝের একজন পুলিশ অফিসারকে যেয়ে জিজ্ঞেস করে “কি রাঈসুল সাহেব, ছেলেটা কে কোন খোজ বের করতে পারলেন নাকি?” উত্তরে পুলিশ অফিসারটি বলে “না।পকেটে কিছু পাওয়া যায়নি যা দিয়ে ট্রেস করব।দেখেন কোথায় কার সাথে কি করতে গিয়ে মারা গেছে আর নাই ভেজাল আমার মাথায় এসে ফেলে গেছে।“

সাংবাদিকটি তখন লিখতে শুরু করে।
আজ সকালে পারাবত ট্রেনের ছাদে অজ্ঞাতনামা এক ছেলের লাশ পাওয়া গেছে।কে বা কারা ছেলেটিকে হত্যা করেছে তা এখন খোজ পাওয়া যায়নি।ছেলেটির পরনে ছিল ধুসর টিশা্র্ট আর রংচটা জিন্সের প্যান্ট।বয়স আনুমানিক তেইশ বছর..................
কিন্তু আমরা তো জানি ছেলেটির বয়স একুশ বছর চার দিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×