somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইতিহাসে ঐতিহ্যে সিলেট

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সিলেট একটি অত্যন্ত প্রাচীন জনপদ। সিলেটের ভূমির গঠন, তাম্রশাসন, শিলালিপি, চীনা পরিব্রাজক হিউ এন-সাঙ, ইবনে বতুতার ভ্রমন বৃত্তান্ত ইত্যাদি থেকে এর নিদর্শন পাওয়া যায়। কিন্তু এর প্রচীনত্ব কতটুকু তা আজো নিশ্চিত ভাবে নির্ণয় করা যায়নি। সিলেটের ইতিহাস নিয়ে বহু বই-পুস্তক রচিত হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে কোন গবেষণাকর্ম পরিচালিত হয়নি। অধ্যাপক অসাদ্দর আলীর মতে, “এ পর্যন্ত যে সমস্ত তথ্য আবিষ্কৃত হয়েছে সেগুলোর ভিত্তিতে মানব বসতির ব্যাপারে বৃহত্তর সিলেট বা জালালাবাদকে বাংলাদেশের মধ্যে প্রাচীনতম ভূমি হিসেবে গন্য করা হয়।······ উত্তর বঙ্গের ভূমির প্রাচীনত্ব যেখানে লক্ষ বছর সে জায়গায় সিলেট ভূমির প্রাচীনত্ব কোটি বছর বলে স্বীকৃত। সুতরাং উত্তর বঙ্গের চেয়ে নিরান্নব্বই লক্ষ বছরের বেশী পুরাতন হলো প্রাচীনতম সিলেট ভূমি।” (ময়মনসিংহ গীতিকা বনাম সিলেট গীতিকা” মুহাম্মদ আসাদ্দর আলী) অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমদের ভাষায়, “বাংলাদেশের তিন ধরণের ভূ-প্রকৃতির মধ্যে পার্বত্য চট্রগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ী অঞ্চল প্রায় এক কোটি বছর আগে টার শিয়ারী যুগের শেষের দিকে সৃষ্টি হয়।” (বাংলাদেশ আদি থেকে অধুনা” অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমদ)

সিলেট এক সময় কামরূপ রাজ্যের অন্তর্গত ছিল বলে পন্ডিতগণ অনুমান করেন। কামরূপের রাজা ভাস্কর বর্মণ চীনা পর্যটক হিউয়েন সাঙকে দাওয়াত করে নিয়ে আসেন। হিউয়েন সাঙ ৬৪০ খ্রীষ্টাব্দে জাহাজ যোগে ‘শিলিচাতোল’ নামক স্থানে এসে উপস্থিত হন। ঐতিহাসিক ক্যানিংহাম তার এনশিয়েন্ট জিয়োগ্রাফী অব ইন্ডিয়া গ্রন্থে শিলিচাতোলকে সিলেট বলে চিহ্নিত করেছেন। (জালালাবাদের কথাঃ দেওয়ান নুরম্নল আনোয়ার হোসেন চৌধুরী) জনাব শামসুল আলম সি এস পি’র মতে, ভাস্কর বর্মণের কামরূপ রাজ্য করতোয়া নদী থেকে পূর্ব দিকে বিস্তৃত ছিল। মণিপুর, জৈন্তিয়া, কাছাড়, পূর্ব আসাম, ময়মনসিংহ এবং সিলেটের অংশবিশেষ তার রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। হিউয়েন সাঙের শিলিচাতোল ছিল সিলেটের সমুদ্রতীরবর্তী একটি স্থান। (হযরত শায়খ জালালঃ শামসুল আলম সি এস পি)


প্রাক-ইসলাম যুগ থেকে চীনের সাথে আরবদের যোগাযোগ ছিল বলে ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। আরবরা সমুদ্রপথে চীনে যাতায়াত করতো এবং যাওয়া আসার পথে সিলেটকে তারা যাত্রাবিরতির বন্দর হিসেবে ব্যবহার করতো। এ প্রসঙ্গে আল্লামা সৈয়দ সোলায়মান নদভী বলেন, “আরবরা কাসাবাতে আসতো পারস্য উপসাগরের উপকূল ধরে ···· এবং তারপরে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করতো। এখানে তাদের কেন্দ্র ছিল সিলেট - একে তারা বলতো সিলাহাত। তারপর তারা যেতো চট্রগ্রাম, একে তারা বলতো সাদজাম। এখান থেকে শ্যাম হয়ে চীন সাগরে প্রবেশ করতো। (আরব নৌবহরঃ সৈয়দ সোলায়মান নদভী, অনুবাদ - হুমায়ূন খান)

জনাব শামসুল আলম সি এস পি আরো বলেন, “রামায়ন- মহাভারতের বিভিন্ন স্থানে সিলেটের উল্লেখ আছে। রামায়নের যুগেও সিলেটভূমি সম্মানিত ছিল। বাংলাদেশের যে কোন অঞ্চলের চেয়ে সিলেট ধর্মীয় মর্যাদায় অধিকতর উন্নত ছিল। রামায়ন যুগে আর্যরা বাংলাদেশকে বাসের যোগ্য মনে করেননি। তারা বাংলাদেশ অতিক্রম করে সিলেটে বসতি স্থাপন করেন। উত্তর বঙ্গের এক অংশ তখন পুন্ড্র নামে কথিত হতো। ····· আর্যরা পুন্ড্র ভূমিতে বসতি স্থাপন না করে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয় এবং পরবর্তীকালে কামরূপ নামে কথিত রাজ্যে বসতি স্থাপন করে। চন্দ্রবংশীয় রাজা অমুর্তজা সিলেট ভূমিতে প্রাগজ্যোতিষ নামে এক রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।” (হযরত শায়খ জালালঃ শামসুল আলম সি এস পি)

ভারবর্ষে আর্যদের আগমনের পর বৌদ্ধরা সিলেটে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের পিছু পিছু আর্যরাও এসেছেন। পরবর্তী পর্যায়ে এসেছেন পাঠান ও মোঘল। এসেছেন দরবেশ শাহজালাল এবং তাঁর সঙ্গী তিনশ’ ষাট আওলিয়া। দরবেশ শাহ জালালের সাথে অসংখ্য সৈনিকও সিলেট আসেন। দেশ জয়, রাজনৈতিক আশ্রয়, ভাগ্যান্বেষণ বা ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে এ ভাবে সুদূর মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের অসংখ্য মানুষ সিলেটে এসেছেন। কেউ কেউ স্বদেশে বা অন্যত্র চলে গেলেও অধিকাংশই সিলেটের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যান। এ ভাবে সিলেট অঞ্চল এশিয়ার নানা জাতি, ধর্ম ও বর্ণের লোকের সমন্বয়ে গঠিত এক বৈচিত্রময় জনপদে পরিণত হয়েছে।

সিলেট বাংলাদেশের উত্তর পূর্ব কোণে অবস্থিত একটি সীমান্ত অঞ্চল। অঞ্চলটি বর্তমানে সিলেট, মৌলবীবাজার , সুনামগঞ্জ এবং হবিগঞ্জ এ চারটি জেলায় বিভক্ত। সিলেটের উত্তরে খাসিয়া ও জৈন্তিয়া পাহাড়, পূর্বে কাছাড়, দক্ষিণে ত্রিপুরা এবং পশ্চিমে কুমিল্লা ও মোমেনশাহী। এর বর্তমান আয়তন ১২ হাজার ৫শ’ ৯৬ বর্গমাইল। ১৯৯১ সালের আদমশুমারী অনুসারে লোকসংখ্যা ৭১ লড়্গ ৪৭ হাজার। মোট থানা ৩৫টি, ইউনিয়ন পরিষদ ৩২২টি। শিক্ষার হার শতকরা ২৭·৮৫।

এক সময় সিলেট অঞ্চল গৌড়, জৈন্তিয়া, লাউড়, তরপ, বনিয়াচঙ, ইটা, জগন্নাথপুর ইত্যাদি রাজ্যে বিভক্ত ছিল। সুদূর অতীত কাল থেকে এর সীমানা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয়ে আসছে। বৃটিশ আমলে সিলেট জেলার সীমানা আরো বিস্তৃত ছিলো। তখন কুমিল্লা ও মোমনেশাহীর কতিপয় এলাকা এবং ভারতের করিমগঞ্জ মহকুমা সিলেট জেলার অন্তর্ভূক্ত ছিলো।


বৃটিশ শাসনের প্রথম দিকে সিলেট ঢাকা বিভাগের অধীনে ছিল। ১৮৭৪ সালে সিলেটকে আসামের সাথে সংযুক্ত করা হয়। ১৯০৫ সালে পূর্ববঙ্গ নামক স্বতন্ত্র প্রদেশ সৃষ্টি হলে সিলেট পূর্ববঙ্গের সাথে চলে আসে। ১৯১১ সালে পূর্ববঙ্গ প্রদেশ ভেঙে দেয়া হয় এবং সিলেট পূনরায় আসাম প্রদেশের অন্তর্ভূক্ত হয়। ১৯৪৭ সালে গণভোটের মাধ্যমে সিলেট ভারতের আসাম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পাকিস্তানে যোগ দেয়।

সিলেট একটি অভিজাত জনপদ। সিলেটর আভিজাত্য সম্পর্কে দেশে-বিদেশে বহু কাহিনী প্রচলিত আছে। প্রকৃতিগতভাবে সিলেটের লোক শরীফ মেজাজের। প্রাচীনকাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অভিজাত শ্রেনীর লোকদের সাথে সিলেটবাসীর যোগসূত্র রয়েছে। অপর দিকে বৌদ্ধ, হিন্দু এবং মুসলিম সাধকদের পদচারনায় সিলেট অঞ্চল ধন্য হয়েছে। উন্নত শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রভাবে সৃষ্ট এ আভিজাত্য সিলেটবাসীকে এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী করেছে। এ আভিজাত্য অর্থ-বিত্ত দিয়ে অর্জন করা যায়না। অতীতে শিক্ষিত ও মহৎ মানুষের সাহচর্যের মাধ্যমে সিলেটবাসী তা হাসিল করেছে। অবশ্য মক্কায় যেমন গাধা আছে তেমনি সিলেটেও চোর-ডাকাত এবং খারাপ লোক আছে। তবে কিছু অসৎ ও নীচমনা লোকদের কারণে সিলেটের এ আভিজাত্য কলঙ্কিত হয়নি বা বিনষ্ট হয়ে যায়নি। যারা দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সিলেটবাসীর সংস্পর্শে এসেছেন তারা এ সত্য অস্বীকার করতে পারেন না।

রাজনৈতিক দিক দিয়ে সিলেট অঞ্চল স্থানীয় শাসকদের অধীনে শাসিত হয়েছে। অবশ্য কোন কোন কালে এর কিছু অংশ অন্যান্য রাজাদের অধীনে থাকার প্রমাণও রয়েছে। বাংলার স্বাধীন সুলতানদের সময় সিলেট পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিলো। বারো ভূইয়ার সময় সিলেট বিভিন্ন সরদারদের শাসনাধীনে ছিলো। উড়িষ্যা দখলের ৮০ বছর পর সিলেট মোঘলদের দখলে আসে। ১৭৬৫ সালে বাংলাদেশে ইংরাজ রাজত্বের সূচনা হয়। এর মাত্র ১৭ বছরের মধ্যে সিলেটের সৈয়দ হাদী, সৈয়দ মাহদি এবং ইমাম শেখ ফরিদ ইংরাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দিয়ে শাহাদত বরণ করেন। বৃটিশের বিরুদ্ধে পরিচালিত বিভিন্ন পর্যায়ের আন্দোলন ও সংগ্রামে বিশেষ ভাবে ভারত ছাড়ো আন্দোলন, খেলাফত আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন এবং পাকিস্তান আন্দোলনে সিলেটের সংগ্রামী অবদান রয়েছে। সিলেটের দেশ প্রেমিক বিদ্রোহীদের ধরে ধরে বৃটিশ সরকার গাছের ডালে ঝুলিয়ে ফাঁসি দিয়েছে, স্বরাজ ও স্বাধীনতার কথা বলার অপরাধে আমাদের নেতৃবৃন্দ জেল, জুলুম ও নির্যাতন সহ্য করেছেন, কিন্তু মাথা নত করেননি। তাদের মধ্যে অনেকে সর্বভারতীয় নেতৃত্বও প্রদান করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি যুদ্ধে সিলেটের জনগণ এবং বিলাতপ্রবাসী সিলেটবাসীর অবদান অপরিসীম। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানী, চীফ অব ষ্টাফ মেজর জেনারেল এ রব, ডিপুটি চিফ অব ষ্টাফ কর্ণেল এ আর চৌধুরী প্রমুখ সিলেটেরই কৃতিসন্তান। বিলাতে অবস্থানরত সিলেটবাসী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বজনমত গঠনে এবং অর্থ সংগ্রহে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন।

আর্থিক দিক দিয়ে সিলেট প্রাচীনকাল থেকেই একটি সমৃদ্ধ অঞ্চল। বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় সেখানে দিনমজুরের সংখ্যা অনেক কম। ইংরেজ ডিপুটি কমিশনার এলেন তার রিপোর্টে ১৯০৫ সালের সিলেট সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তার বিবরণ থেকে সিলেটের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির আভাস পাওয়া যায়। তিনি লিখেন, “দুর্ভিক্ষের আশংকাযুক্ত ভারতের অন্যান্যস্থানের তুলনায় সিলেটের লোকেরা নিঃসন্দেহে অধিকতর স্বচ্ছল। বাৎসরিক বৃষ্টি কখনো বন্ধ হয়না। যদিও প্রায়ই একটা অতিবন্যা শষ্যের ক্ষতি করে। ফসলের ফলন নিশ্চিত ও প্রচুর। অতিরিক্ত শস্য কোন মধ্যসত্বভোগী ছাড়াই সোজাসুজি প্রতিটি এলাকায় নৌকাযোগে আগত বাংলার অন্যান্য এলাকার ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি হয়।”

সিলেট শহর সম্পর্কে তিনি বলেন, “এখানে বহু রাস্তা-ঘাট রয়েছে। এর অধিকাংশই পাকা এবং পাকা পুল সংযুক্ত। জনবসতি শূণ্য পরিত্যক্ত ঘরবাড়ি এদের অতীত গৌরবের সাক্ষ্য দেয়। প্রত্যেক এলাকায়ই ছোট মসজিদ ও মুসলমান দরবেশদের কবর দেখা যায়।”

বর্তমান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে সিলেট বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে। সিলেটের চা, আনারস, গ্যাস, শুকনামাছ, চুনা, সিমেন্ট প্রভৃতি বিদেশে রফতানী হচ্ছে। অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সিলেট অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ লোক পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে রয়েছেন। বৃটেন, আমেরিকা, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গেলে দেখা যায় এ সকল দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের অধিকাংশই বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল থেকে এসেছেন। তাদের অর্জিত বৈদেশিক মূদ্রা বাংলাদেশে প্রেরণ করে তারা দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা অর্জনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছেন। একই সাথে তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পতাকা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখছেন।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উন্নয়নে সিলেটবাসীর অবদান বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ঈর্ষনীয় পর্যায়ের বললেও অত্যুক্তি হবে না। বাংলা সাহিত্যের অগ্রগতি ও শ্রীবৃদ্ধিতে সিলেটের কবি-সাহিত্যিকগণ যে অবদান রেখেছেন তা আরো দশটি অঞ্চলের মিলিত অবদান থেকেও অনেক বেশী। বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বঙ্গ মিলিয়ে প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে উলেস্নখযোগ্য নিদর্শন হচ্ছে চর্যাপদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন বাংলাবিভাগের প্রধান হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপাল থেকে তা সংগ্রহ করেন। পন্ডিতদের কাছে শুধু বাংলা ভাষা নয় সমগ্র পূর্ব ভারতের নতুন ভাষার ইতিহাসে চর্যাপদ প্রথম গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত। চর্যাপদ আবিষ্কৃত হওয়ার পর এর কবিকুল বাংলাদেশের কোন্‌ অঞ্চলের লোক তা নিয়ে পন্ডিতগণ গবেষণা শুরু করেন। অধ্যাপক আসাদ্দর আলী দীর্ঘদিন থেকে এ বিষয়ে গবেষণা ও লেখালেখি করছেন। ‘সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চায় জালালাবাদ’ এবং ‘চর্যাপদে সিলেটী ভাষা’ - এ দুটি গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন যে চর্যাপদের কবিগণ সিলেট অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি শুধু কথার কথা হিসেবে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করেননি। বরং চর্যাপদের কবিদের ভাষার সাথে কোন্‌ কোন্‌ শব্দের সাথে কি ভাবে সিলেট অঞ্চলে ব্যবহৃত ভাষার মিল রয়েছে তা তিনি যুক্তি-প্রমাণ ও দৃষ্টান্ত দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাঁর এ দু’টি গ্রন্থ প্রকাশের পর বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শন চর্যাপদ নিয়ে অনেক সংশয়ের নিরসন হয়েছে। চর্যাপদের কবিকুল বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার লোক বলে পন্ডিতদের মধ্যে যারা দাবি করছিলেন তারা আসাদ্দর আলীর বলিষ্ঠ যুক্তির সামনে নিশ্চুপ হয়ে গেছেন। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের একটি বলিষ্ঠ শাখা হচ্ছে বৈষ্ণব সাহিত্য। এ সাহিত্যের মূল প্রেরণাদানকারী গুরু হচ্ছেন চৈতন্যদেব এবং তিনি সিলেটের সন্তান। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য সৈয়দ সুলতান, দৌলতকাজী, কোরেশী মাগন ঠাকুর, মোহাম্মদ কবির, মোহাম্মদ ছগির, সাধক কবি শেখ চান্দ প্রমুখ কবির অবদানে সমৃদ্ধি পেয়েছে এবং তাদের নিয়ে সমগ্র বাংলাদেশ গর্ববোধ করে। এ সকল কবি যে সিলেটেরই সন্তান ছিলেন তা নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

লোক সাহিত্য বাংলাসাহিত্যের একটি সমৃদ্ধ শাখা। এ ব্যাপারে সিলেটের অবস্থান বাংলাদেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে। ময়মনসিংহ গীতিকার দশটি গীতিকার মধ্যে কমপক্ষে সাতটি গীতিকা সিলেট অঞ্চলের, যদিও অবস্থার ফেরে এর নাম দেয়া হয়েছে ময়মনসিংহ গীতিকা। এ কথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে, শুধুমাত্র সিলেট অঞ্চলে যতগুলো বারমাসী, গীতিকা, লোকসঙ্গীত, ধাঁ ধাঁ ও প্রবাদ পাওয়া যায় এর পরিমাণ সামষ্টিক ভাবে সমগ্র বাংলাদেশে প্রাপ্ত পরিমানের চেয়ে অনেক বেশী। বাংলাভাষায় মহাভারতের প্রথম অনুবাদক মহাকবি সঞ্জয় সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার অন্তর্গত লাউড় এলাকার লোক বলে সর্বশেষ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। ভারতীয় প্রাদেশিক ভাষার মধ্যে তিনিই সর্ব প্রথম মহাভারত অনুবাদ করেছেন। মঙ্গলকাব্য রচয়িতার মধ্যে নারায়ন দেব এবং ষষ্ঠীবরও সিলেটের কৃতিসন্তান।

বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার কবি সাহিত্যিকগণ যেখানে শুধুমাত্র বাংলাভাষায় সাহিত্য সাধনা করেছেন সেখানে সিলেটের কবি সাহিত্যিকগণ বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজী, নাগরী, সংস্কৃত, সিলেটি নাগরী, আরবী, ফারসী এবং উর্দূ লিপি বা ভাষায় সাহিত্য রচনা করে অনন্য বৈশিষ্টের স্বাক্ষর রেখেছেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রীরবীন্দ্র কুমার সিদ্ধার্থ শাস্ত্রী তার ‘শ্রীভূমির সন্তানদের সংস্কৃত সাধনা’ শীর্ষক প্রবন্ধে ১০১ জন সিলেটবাসীর ৩৫৯ খানা সংস্কৃত গ্রন্থের নাম উলেস্নখ করেছেন। এমনি ভাবে ফারসী, আরবী এবং উর্দূ ভাষায়ও অসংখ্য কবি সাহিত্যিক নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন।

সিলেটের ভাষার সাথে মিল রেখেই তৈরি হয়েছে নাগরী লিপি। প্রাসঙ্গিক ভাবে এ সম্পর্কে প্রশ্ন আসে, সিলেটী ভাষা বলে কি কোন ভাষা আদৌ আছে? সিলেট অঞ্চলের ইতিহাস এ ব্যাপারে কি বলে? এ সম্পর্কে সিলেটের ভাষাবিজ্ঞানীদের অভিমত কি? সিলেটী ভাষা বলে কোন ভাষা আছে কি নেই এ প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে যেতে হবে মানুষের কাছে, পন্ডিতদের কাছে নয়। ভাষা পন্ডিতরা সৃষ্টি করেন না, ভাষা সৃষ্টি হয় মানুষের মুখ থেকে। পন্ডিতরা ভাষার লিখিত ব্যাকরণ তৈরি করেন এবং এর লিখিত রূপ দান করেন। সিলেটী মানুষের কাছে গেলেই বোঝা যায় তারা যে ভাষায় কথা বলেন তা বাংলা নয়। যারা জোর করে বলেন সিলেটী ভাষা বাংলারই কথ্য রূপ বা বিকৃত রূপ তাদের দাবি যুক্তিসঙ্গত নয়। বাংলাদেশের সিলেটের ভাষা এবং কুমিল্লা বা ময়মনসিংহের ভাষার তুলনামূলক আলোচনা করলে এ সত্য দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে যায় যে সিলেটীদের ব্যবহৃত ভাষা বাংলার বিকৃত রূপ নয়, বরং এটা একটা আলাদা ভাষা। বহুভাষাবিদ ড·সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে সিলেটী একটি ভাষা এবং বহু দিক দিয়ে এ ভাষা অনন্য বৈশিষ্ট্যের দাবিদার। সিলেটে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির অষ্টম জাতীয় ইতিহাস সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত ও বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক আসাদ্দর আলী সম্পাদিত স্মারকগ্রন্থ সিলেট দর্পণে এ সম্পর্কে ড· আলীর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা রয়েছে।

সিলেটবাসীর নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষা সিলেটবাসীর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের প্রমাণ এবং সিলেটী নাগরী লিপি সিলেটের এক অমূল্য সম্পদ। গবেষণা করলে দেখা যাবে সিলেটী নাগরী একটি বিজ্ঞান সম্মত লিপি এবং যারা তা উদ্ভাবন করেছেন, এ লিপি তাদের বিরল প্রতিভার সাক্ষ্য বহন করছে। অধ্যাপক শিব প্রসাদ লাহিড়ীর মতে এ লিপি উর্দূ লিপির চেয়ে অনেক প্রাচীন। তিনটি অক্ষর ছাড়া সেখানে কোন যুক্ত অক্ষর নেই এবং সবর্মোট ৩২টি অক্ষর মাত্র।

সিলেট অঞ্চলের কবি-সাহিত্যিকগণ বাংলা সাহিত্যের সেবা করার সাথে সাথে নাগরী লিপির মাধ্যমে সিলেটী ভাষার চর্চাও অব্যাহত রেখেছেন। উল্লেখ্য যে শুধু বাংলা নয়, আরবী, ফার্সী ও উর্দু সাহিত্যও সিলেটবাসীর অবদানে সমৃদ্ধ হয়েছে। নাগরী লিপি সম্পর্কে লিখতে গিয়ে অধ্যাপক আসাদ্দর আলী বলেন, “ডক্টর সুনীতিকুমার চট্রোপাধ্যায় খৃষ্টীয় চতুর্দশ শতাব্দীকে সিলেটে এই লিপির প্রচলনকাল বলে অনুমান করেন। আমাদের বিবেচনায় শুধু চতুর্দশ শতাব্দীতে নয়, চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথমার্ধেই লিপিমালাটি জন্মলাভের পর এর মাধ্যমে মুসলমানদের সাহিত্য সাধনার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে ১৫৪৯ খৃষ্টাব্দে রচিত গোলাম হুছনের ‘তালিব হুছন’ নামের তত্ত্বগ্রন্থ ছাড়া এর আগে রচিত কোন গ্রন্থের নিদর্শন এখন আর পাওয়া যাচ্ছেনা। বেশীর ভাগ মুসলমান ‘সিলটী নাগরী হরফ’ এর সাহায্যে সাহিত্য সাধনা করলেও বাংলা লিপিকে এক দম বাদ দেননি। ভিন্ন ভিন্ন সুত্র থেকে এ পর্যন্ত ‘সিলটী নাগরী হরফ’-এ লেখা ১৪০ খানা গ্রন্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। এটা কম সৌভাগ্যের ব্যাপার নয়। ‘সিলেটী নাগরী” লিপি, ভাষা ও সাহিত্য’ নিয়ে গবেষণার পর জনাব গোলাম কাদির ১৯৮৩ খৃষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। একই বাংলা ভাষায় দুইটি আলাদা আলাদা লিপির মাধ্যমে সাহিত্য সাধনার এমন নিদর্শন নজিরবিহীন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমনটি আর কোথাও নেই।”

সিলেটের সন্তান চর্যাপদের কবিকূল, মধ্যযুগের কবিকুল এবং মরমীকবিদের বাদ দিলে ইতিহাসে বাংলা সাহিত্যের জন্যে গর্ব করার মত তেমন কিছু আর বাকি থাকেনা। সিলেটের আরেক সাহসী সন্তান জনাব আব্দুল হামিদ চৌধুরী ১৯২৭ সালে অর্থাৎ বৃটিশ আমলে আসাম ব্যবস্থাপক সভায় বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করে বাংলা ভাষা আন্দোলনের পথিকৃতের আসন দখল করে আছেন। যে বছর পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয় সে বছরই জনাব মুসলিম চৌধুরী মুসলিম সাহিত্য সংসদের প্লাটফরম থেকে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়ার আওয়াজ তুলেন। কিন্তু আমাদের এ সকল গৌরবময় অবদানের কথা আমরা ভুলে যেতে বসেছি। ওপর দিকে আমরা যখন ইতিহাসে আমাদের যথাযোগ্য সম্মানের কথা বলি, আমাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকারের কথা বলি তখন এক দল লোক সেখানে আঞ্চলিকতার গন্ধ আবিষ্কার করেন। বাংলা আমাদের রাষ্ট্রভাষা, বাংলাদেশ আমাদের দেশ। ভাষার জন্যে এবং দেশের জন্যে সিলেটবাসী যা করেছে তা সোনার হরফে লিখে রাখার মত। কিন্তু তাই বলে কি আমরা আমাদের গৌরবোজ্জল অতীত ইতিহাস আমরা ভুলে যাব? আমাদের ন্যায্য পাওনা এবং অধিকারের কথা আমরা বলবোনা? পাকিস্তান আমলে একই কায়দায় বাঙালিদের ন্যায্য অধিকার দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিহাস সাক্ষী, এর ফলাফল শুভ হয়নি। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া দরকার। সাথে সাথে আমাদের এ কথাও মনে রাখতে হবে, কান্দে ফুতে বুনি খায়। যে ছেলে ক্রন্দন করে মা তার মুখেই স্তন তুলে দেয়। আপনার ইতিহাস আপনাকেই তুলে ধরতে হবে, আপনার অধিকারের কথা আপনাকেই বলতে হবে।

হিউয়েন সাঙ, আলবেরুনী, ইবনে বতুতা প্রমুখের বর্ণনা মতে সিলেট একটি সমৃদ্ধ ও সুন্দর জনপদ ছিলো। হিন্দু পুরাণ মতে সিলেট মহাশক্তির পীঠস্থান রূপে পূণ্যতীর্থ বলে গণ্য।
ভূস্বর্গ হিসেবে পরিচিত কাশ্মীরের রাজধানীকে যেমন শ্রীনগর নাম দেয়া হয়েছে ঠিক তেমনি বাংলার আধ্যাত্মিক রাজধানী সিলেটকে এক সময় শ্রীভূমি বলা হতো। গণমানুষের কবি দিলওয়ার বিশ্বপর্যটক ইবনে বতুতার উক্তি উল্লেখ করে একবার লেখেন, “কাশ্মীর পৃথিবীর সৌন্দর্যের লীলাভূমি এবং সিলেট তার হৃৎপিন্ড।” পল্লীকবি জসীম উদ্দীন সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে বলেন, “সিলেটের প্রাকৃতিক দৃশ্য আমাকে মুগ্ধ করিয়াছে। এখানকার গাছ-গাছড়া, নদ-নদী সবই যেন কবিত্বময়। ইচ্ছা হয় এখানে বসিয়া যুগ যুগ ধরিয়া সাধনা করি। এমন সুরম্য দেশে কবি-সাহিত্যিকের উদ্ভব না হইয়া পারেনা। তাই দেখিতে পাই, সিলেট বাংলা সাহিত্যে এক বিশিষ্ট আসন দখল করিয়া বসিয়া আছে। সিলেটের প্রতিভা অসাধারণ। সাহিত্য ক্ষেত্রে সিলেট জেলা শীর্ষস্থানীয়।”
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×