somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি হেরে গেলাম

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আনমনা ক্লান্তিতে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে বেকার জীবনের কিছু সময় পার করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। এমন সময় শিমা আফার মেয়ে মিতু তার খাতা ও কলম নিয়ে হাজির এবং বলল, মামা, তুমিতো পড়াশুনা শেষ করেছ। তোমার হাতের লেখা নিশ্চই খুব সুন্দর হবে। আমাকে একটু লিখে দাওনা, আমি প্রাকটিস করবো। আমার হাতের লেখা কোন ভাবেই ভাল করতে পারছিনা। মিতুর আম্মা ও আমি ক্লাস ফোরে পড়ি। শিমার হাতের লেখা ছিল সবার ছেয়ে খারাপ। হাতের লেখা প্রতিযোগীতায় আমি বার বার প্রথম হলেও শিমা সেমি ফাইনালের আগেই বাদ পড়ে যেত। একবার পুরষ্কার হাতে বাড়ি পিরছি শিমা শিা আমার জন্য রাস্তায় দাড়িয়ে রইল। কগ্রেসুলেশন জানিয়ে বলল দেখিস একদিন আমার হাতের লেখা হবে সবার সেড়া। তার লেখা সে ছাড়া আর কেউ বুঝতে না পারলে কি? সে ছিল সবার চেয়ে ভাল ছাত্রি। তার কথায়, আচার-আচরন, চাল-চলন সবকিছু সকলকে মুগ্দ করত। তাই স্যারেরা তার লেখা বুঝতে না পারলেও এটুকু নিশ্চই বুঝতেন সে যা লিখেছে ঠিকই লিখেছে তাই তাকে পাশ করিয়ে দিত। স্যারেরা অনেক চেষ্টা করেও তার হাতের লেখা ভাল করতে পারলনা। অবশ্য তাকে সেই সমাজে বেশিদূর পড়াশুনা করতে দেয়া হয়নি। চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্তই হয়েছে। এরপর তার বাবা মা আর স্কুলে আসতে দেয়নি। এর দু’ বছর পর তাকে আমাদের গ্রামের পাশের গ্রামের টিটু ভাইর সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। মা যেমন মেয়ে হয়ত তেমনই হবে, এই ভবনায় খাতা হাতে নিয়ে এক লাইন লিখে দিলাম। মিতু আমার লেখার নিছে একলাইন লিখল। তার লেখা দেখে আমি লজ্জাই মরি। এত ছোট মানুষের হাতের লেখা এত সুন্দর হতে পারে! আমার জিবনে কখনো এত সুন্দর হাতের লেখা দেখিনি। তার হাতের লেখা দেখে মনে হলো সে সুতনি এমজি চৌদ্দ ফন্টে লিখেছে। না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতেই পারবে না এটা কারো হাতের লেখা। মনে হবে কম্পিউটারে কম্পোজ করা হয়েছে। অবাক দৃষ্টিতে তার লেখার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ভাবলাম তার মা থ্রিতে থাকতে একদিন স্কুলের বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগীতায় বক্তব্যে বলেছিল, ‘আমাদের পিতা মাতা জীবনের সবচেয়ে বেশি আমাদের ভালবাসেন। তারা সবচেয়ে ভাল জিনিসটা আমাদের জন্য রাখেন। তারা শৈশবে যা চেষ্টা করে নানান প্রতিকূলতার কারণে পারেননি তা আমাদের মাধ্যমে সফল হওয়ার চেষ্টা করেন। এভাবেই একটি জাতি শিক্ষিত ও দক্ষ হয়ে উঠে।’ আজ মনে হল সে যা ছাত্রজীবনে চেষ্টা করেও সফল হতে পারেননি তা তার মেয়ের মাধ্যমে পেরেছে। মিতুর হাতের লেখার উপর আমার হাতের লেখা এতটাই বিশ্রি দেখাচ্ছে যে শিমা আফার শৈশবের হাতের লেখাকে হার মানিয়েছে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এমপি আনারের মৃত্যু এবং মানুষের উষ্মা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:২৯


সম্প্রতি ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পর আনোয়ারুল আজীম আনার নামে একজন বাংলাদেশি এমপি নিখোঁজ এবং পরবর্তীতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে হাপিত্যেশ করে দেওয়া হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

দোয়া ও ক্রিকেট

লিখেছেন শাহাবুিদ্দন শুভ, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৪


দোয়া যদি আমরাই করি
তোমরা তাইলে করবা কি?
বোর্ডের চেয়ারম্যান, নির্বাচকের
দুইপায়েতে মাখাও ঘি।

খেলা হচ্ছে খেলার জায়গা
দোয়ায় যদি হইত কাম।
সৌদিআরব সব খেলাতে
জিতে দেখাইত তাদের নাম।

শাহাবুদ্দিন শুভ ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে “বাঘ” বলা বন্ধ করুন!!

লিখেছেন অন্তর্জাল পরিব্রাজক, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:২১



দয়া করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে “বাঘ” বলা বন্ধ করুন!! X( এরা ছাগলের দলই ছিল, তাই আছে, তাই থাকবে :-B !! এরা যেমন ধারার খেলা খেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বকুল ফুল

লিখেছেন নীল মনি, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৪

বকুল ফুলের মিষ্টি গন্ধে ভরে থাকে আমার এই ঘর। আমি মাটির ঘরে থাকি। এই ঘরের পেছন দিকটায় মা'য়ের হাতে লাগানো বকুল ফুলের গাছ৷ কী অদ্ভুত স্নিগ্ধতা এই ফুলকে ঘিরে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেট্রোরেল পেয়েছি অথচ হলি আর্টিজানে নিহত জাপানিজদের ভুলে গেছি

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১১

জাপানে লেখাপড়া করেছেন এমন একজনের কাছে গল্পটা শোনা৷ তিনি জাপানে মাস্টার্স করেছিলেন৷ এ কারণে তার অনেক জাপানিজ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়৷ জাপান থেকে চলে আসার পরেও জাপানি বন্ধুদের সাথে তার যোগাযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×