শিশু যৌন নির্যাতনের প্রতিকার : নিজে সতর্ক হই, শিশুটিকে সতর্ক করি - পর্ব এক

সাফিনাজ আরজু এর ছবি
লিখেছেন সাফিনাজ আরজু [অতিথি] (তারিখ: সোম, ১৩/০১/২০১৪ - ১১:৩৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যৌন নির্যাতন আমাদের দেশে এমন একটি ট্যাবু যা নিয়ে আমরা কেউ প্রকাশ্যে কথা বলতে চাইনা, প্রসঙ্গটা সবসময় এড়িয়ে যেতে চাই। আর তা যদি শিশু যৌন নির্যাতন হয় তাহলে তো আর কথায় নেয়... খুব কম পরিবারই রয়েছে যারা নিজ শিশুর যৌন নির্যাতনের কথা জানতে পেরেও নির্যাতকের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করে থাকে। কারন বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই শিশুটি নির্যাতিত হয় তার আশেপাশের আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী চেনা পরিচিত মানুষ দ্বারা। আর এক্ষেত্রে সামাজিকতার বা লোকলজ্জার ভয়েও অনেক সময় অনেক অভিভাবক নির্যাতকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় না।

বিভিন্ন পরিসংখানে উঠে এসেছে যে প্রতি ৪ জন মেয়ে বাচ্চার মধ্যে একজন এবং প্রতি ৬ জন ছেলে শিশুর মধ্যে একজন তাদের ১৮ বছর বয়সের পূর্বে কোন না কোনভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। একে তো যে শিশুটি এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যায় সে নিজেকে দোষ দিতে থাকে, নিজেকে দোষী ভাবতে থাকে, ভাবে বড়দের জানালে তারা বিশ্বাস করবেনা। এই বাঁধা অতক্রম করে কোন শিশু যদিও বা মুখ খুলে অনেক ক্ষেত্রেই অভিভাবকেরা সামাজিক সমস্যা এড়াতে পুরা বিষয়টাই এড়িয়ে যায়।এভাবে কিন্তু আমরাই আমাদের শিশুদেরই একটি ভয়ংকর ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছি প্রতিনিয়ত।

সত্যি কথা বলতে কি যে সকল শিশুরা ছোট বেলায় কোন না কোন ভাবে নির্যাতনের শিকার হয় তারা পরবর্তীকালে নানা রকম সমস্যায় আক্রান্ত হয় ব্যক্তিগত,পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে । দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, আত্মহত্যার প্রবনতা এবং প্রচেষ্টা, রোমান্টিক সম্পর্কে সমস্যা, পরবর্তীকালে বৈবাহিক জীবনে সমস্যা সহ নানা রকম মানসিক সমস্যায় ভুগতে থাকে।

ছোটো শিশুরা যারা ভবিষ্যৎ দিনের নাগরিক তারা যদি জীবনের শুরুতেই এমন নোংরা একটা বিষয়ের মধ্যে দিয়ে যায়,একদম ছোটো থেকেই মানুষকে অবিশ্বাস করতে শিখে... তারা কিভাবে একটি সুন্দর জীবন, সুন্দর ভবিষ্যৎ আর সুন্দর দেশের স্বপ্ন দেখবে??
সচেতনতায় পারে যে কোন সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় দিতে। সুতরাং আমাদের সচেতন হতে হবে তার সাথে সাথে বাচ্চারা একটু বুঝার বয়স হলেই তাদের কিছু জিনিষ বুঝাতে হবে। কিছুটা সচেতন হলে হয়তবা আমরা আমাদের আদরের শিশুটিকে সহজেই নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করে তার নির্মল,সুন্দর, হাসিখুশিতে ভরপুর একটি শৈশব নিশ্চিত করতে পারব।

১) শিশুদের নিজের শরীরের স্পর্শকাতর অংশগুলো বা প্রাইভেট পার্টসগুলো সঠিক নামে চিনতে শিখাতে হবে :

শিশ্ন বা পুং জননেন্দ্রিয়, স্ত্রী যোনি বা ভ্যাজাইনা, স্ত্রীযোনিদ্বার বা ভালভা, স্তন বা ব্রেস্ট, অণ্ডকোষ বা টেস্টিকোল এই শব্দগুলো আমাদের প্রত্যেককেই কমবেশি অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। আমরা বড়রায় যেখানে এই শব্দগুলো এড়াতে চায় সেখানে কোন ছোট বাচ্চার মুখ থেকে এমন শব্দ শুনতে পাওয়া ভীষণ অস্বস্তিকর বা বিব্রতকর ও বটে। আমরা সাধারনত শিশুদের ছোট মনে করে তাদের শরীরের এই অংশগুলো সম্পর্কে তাদের সচেতন করিনা।

কিন্তু একটা শিশু যখন নিজের শরীরের অংশগুলো সঠিক ইংলিশ বা বাংলা (অথবা চলিত বাংলা) নামে চিনে থাকবে এবং উচ্চারণ করতে থাকবে এটি কিন্তু তার আশে পাশের সম্ভাব্য যৌন নির্যাতনকারীকেও একই সাথে অস্বস্তিতে ফেলে দিবে। সেই যৌন নির্যাতনকারী অন্ততপক্ষে বুঝতে পারবে যে এই শিশুটি যখন তার নিজ শরীর সম্পর্কে এত কিছু জানে তখন তার পক্ষে বাবা-মাকে নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়াও খুব সহজ।
এতে কিছুটা হলেও প্রতিরোধ সম্ভব।

তাছাড়া কোন বাবা-মা যদি ছোট থেকে তার সন্তানকে শরীরের গোপন অংশগুলির নাম সঠিক ভাবে শিখিয়ে থাকি এবং কোন একদিন হঠাৎ খেয়াল করে যে তার ছেলেটি/মেয়েটি তার শিশ্ন বা পেনিস বা যৌনাঙ্গ কে সঠিক নামে না বলে ডিং ডং/ সোনা/ বা এই ধরনের কোন অদ্ভুত নামে ডাকছে সেটা কিন্তু এক ধরনের নির্দেশনা যে অন্য কোথাও থেকে শিশুটি এই নামগুলো শিখেছে তার অর্থ অন্য কেউ শিশুটির গোপন অঙ্গের প্রতি আগ্রহী। এই ক্ষেত্রেও বাবা –মা খুব সহজেই শিশুটির কাছ থেকে সেই আগ্রহী ব্যাক্তিটির নাম জানতে পারবে।
এভাবে কিন্তু সহজেই শিশুটিকে আমরা যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে পারি।

সুতরাং আর দেরী কেন? আজ থেকেই শুরু করি-
পেনিস, পেনিস, পেনিস...... ভ্যাজাইনা, ভ্যাজাইনা, ভ্যাজাইনা... উচ্চারণ করতে খুব কি খারাপ লাগছে? উঁহু খারাপ লাগা উচিত নয়, আপনার আদরের শিশুটিকে তার প্রাপ্য সুন্দর, সহজ আর নির্মল শৈশব উপহার দেবার কথা ভাবুন দেখবেন এটি খুব কঠিন লাগবেনা।

২) আপনার বাচ্চাটি অন্য কারো থেকে আদর নিবে কিনা অথবা আদর করবে কিনা তাকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন, কখনও জোর নয় :

”বাবু আমাকে একটা চুমু খাও, লক্ষ্মী সোনা একটা চুমু খাও”

”যাও আঙ্কেল/ আন্টি কে একটু আদর করে আস”

”যাও ভাইয়া কে জড়িয়ে ধরে বল যে তুমি সরি”

একটু খেয়াল করে দেখুন আমরা প্রায় প্রত্যেকেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের এমন নির্দেশ দিয়ে থাকি, অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি বাচ্চাটি চাচ্ছেনা তবুও আমরা জোর করি, কথা না শুনতে চাইলে কখনও কখনও রাগ করি অথবা বিরক্ত হয়।

আমরা বাবা মায়েরা হয়ত ভাবি এই আচরনগুলো দিয়ে আমরা আমাদের বাচ্চাটিকে ভদ্র নম্র অন্য মানুষের প্রতি সহনশীল করে গড়ে তুলছি। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছি যে আমরা যখন কোন শিশু কে চুমু খেতে বা জড়িয়ে ধরতে জোর করতে থাকি সেটা তাকে অন্য কোন মেসেজও দিতে পারে। পুরো বিষয়টিকে সে এভাবেও নিতে পারে যে- ”তার চাওয়া না চাওয়ার ব্যাক্তিগত কোন মূল্য নাই এবং অন্য মানুষ চাইলে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও তার শরীর স্পর্শ করতে পারে এবং এটি দোষের কিছু নয়। ”

আমদের সবার মনে রাখা উচিত যে বাচ্চাদের কিন্তু যে কোন বিষয় নিয়ে নিজস্ব মতামত থাকে। কোন শিশু যদি বারবার এমন ইচ্ছের বিরুদ্ধে আদর করতে অভ্যস্ত হয়ে থাকে তাহলে সত্যিকারের যৌন নির্যাতনকারী কেউ যখন অসৎ উদ্দেশে তার শরীরে হাত দিবে তখন কিন্তু তার খারাপ লাগলেও সে চুপ করে থাকবে। সে তখন ভাবতে পারে প্রতিবাদ করা বা অভিভাবক কে জানালে সে বকা খেতে পারে।

তাই কখনোই কোন শিশুকে অন্য কাউকে আদর করতে জোর করা উচিত না। জোর করে আদর না করে বা আদর না নিয়ে আমরা সবাই এভাবেও বলে দেখতে পারি-

”আমি কি একটি চুমু পেতে পারি?”

”তুমি যদি মনে কর তাহলে আঙ্কেল/ আন্টি কে একটু আদর করে দিতে পার”

”তুমি কি দাদীকে একটু জড়িয়ে ধরে বাই বলবে? ”

যদি শিশুটি নিজ আগ্রহী হয়, খুবই ভাল। আর যদি নাও হয় তাও এটা এমন কোন বড় ব্যাপার নয়। সেক্ষেত্রে আমরা অভিভাবকেরা অন্যদের হাসিমুখে বলতে পারি আজ যখন ও চাচ্ছেনা, অন্য কোনদিন । যে বুঝার সে শিশুটির ইচ্ছে টাকে সম্মান করবে আর যে বুঝার না তাকে অনেক বুঝালেও বুঝবেনা।

আর অভিভাবকদের এই আচরণ থেকে শিশুটিও বুঝতে পারবে তার হ্যাঁ বা না এর গুরুত্ত তার বাবা- মা দিয়ে থাকে।
আর তাছাড়া একটা বাচ্চাকে সবসময় শরীর ছুয়ে ই বা আদর করতে হবে কেন? তার বদলে বাচ্চাদের সাথে হাত মুষ্টি বদ্ধ করে মুষ্টি তে হালকা ঘুষি বা হাই ফাইভ করা অথবা দূর থেকে ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দিয়েও বাচ্চাদের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করা যায়। তবে সম্পর্ক গভীর হলে বাচ্চা যদি নিজ থেকে এসে আদর চায় সেটা অন্য ব্যাপার।

আমি জানি আমরা এমন একটা সমাজে বাস করি যেখানে বাচ্চার এমন আচরণ হয়ত আশেপাশের মানুষ নেতিবাচক হিসেবে দেখবে সেক্ষেত্রে আমরা তাদের বলতে পারি কেন এই পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে সত্যিই শিশুটিকে ভালবাসবে তার জন্য চিন্তা করবে এবং যে সত্যি শিশুটির ভাল চায়, সে কখনই বিষয়টিকে অন্যভাবে নিবেনা।বরং উদ্যোগটির প্রশংসা করবে।
আর তার পরেও যারা নেতিবাচক কথা বলতে থাকবে তাদের অগ্রাহ্য করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখতে হবে কিছু মানুষের উল্টা পাল্টা কথার চাইতেও অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ একটি শিশুর সুন্দর এবং নির্মল শৈশব নিশ্চিত করা।

৩) সবসময় ভাল হয়ে চলবে এমন উপদেশ না দিয়ে অবস্থা ভেদে যেন উপদেশ গুলো পরিবর্তিত হয়:

আমরা প্রত্যেকেই চাই আমাদের শিশুটি নম্র, ভদ্র হোক, সমস্ত নিয়ম কানুন মেনে চলুক, ভাল একটা বাচ্চা হিসেবে বড় হোক। কিন্তু আমরা যদি সবসময় কোন শিশুকে বলতে থাকি”ভাল হয়ে চলবে, বাধ্য হয়ে চলবে” এটা কিন্তু তাকে এমন মেসেজ ও দিতে পারে যে অভিভাবকেরা বাধ্য হয়ে চলাটাকেই বা বড়দের সব কথা শোনাকে সবার চাইতে বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকে। যৌন নির্যাতককারী কিন্তু এমন শিশুই খুঁজে বেড়ায় যে বিনয়ী, এবং পাল্টা প্রতিবাদ করবেনা বা কিছু জিজ্ঞেস করবেনা বরং চুপচাপ সব কিছু মেনে নিবে।

তাই বরং আমরা আমাদের বাচ্চাটিকে সবসময় ভাল হবার উপদেশ না দিয়ে অবস্থাভেদে উপদেশ দেয়, যেমন যখন স্কুলে রেখে আসব তখন বলতে পারি- ”ক্লাসে মনযোগী হও বা ঠিকমত শিখার চেষ্টা কর” বিকালে খেলতে যাবার সময় বলতে পারি- ”বন্ধুদের সাথে মিলে মিশে মজা করে খেলবে” আবার যখন বন্ধুদের সাথে আড্ডা বা কোন উৎসবে যাবে বাচ্চাটি তখন বাবা মা বলতে পারেন-”সময়টা মজা করে কাটাও, সাবধানে থেক” ।

এমন সময় ভেদে অবস্থা ভেদে আমাদের শিশুদের প্রতি আচরণ এবং মেসেজ বদল হলে শিশুটি এটি বুঝবে যে সে যদি বাবা মাকে এমন কিছু বলে যেটা ভাল না তবুও যে কোন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বা অন্য রকম পরিবেশেও তার আচরনের প্রতি তার বাবা-মায়ের বিশ্বাস রয়েছে।

(দ্বিতীয় পর্বে সমাপ্ত...)

সচলায়তনে প্রকাশিত আমার প্রথম লেখাটি ছিল চাইল্ড সেক্স অ্যাবিউজ বা শিশু যৌন নির্যাতন নিয়ে।
সেই লেখাটিতে আমি নিজের জীবনের একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে নিজের অভিজ্ঞতাসহ এর প্রতিকারের উপর হালকা আলোকপাত করেছিলাম। সেদিন ইন্টারনেট ঘাঁটতে ঘাঁটতে বাচ্চাদের নিয়ে লেখা একটি ব্লগে একজন মনঃচিকিৎসবিদের শিশুদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধের উপর চমৎকার এবং গ্রহণযোগ্য কিছু পরামর্শ পড়েছিলাম। সেটি এখানে দুই খণ্ডে বিস্তারিতভাবে লিখার চেষ্টা করলাম।


মন্তব্য

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

এক লহমা এর ছবি

৫ তারা। চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ঈয়াসীন এর ছবি

চলুক , প্রয়োজনীয় পোস্ট। চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

সচেতনতা তৈরি হোক, সবাই আরও সোচ্চার হোক এই বিষয়গুলো নিয়ে। প্রতিটি শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

তিথীডোর এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

এই বিষয়গুলো নিয়ে, এরকম অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে আরো অনেক অ-নেক বেশি সচেতনতা তৈরি হওয়াটা খুবই জরুরি।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

সেই, সবাই সচেতন হোক, সোচ্চার হোক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

আয়নামতি এর ছবি

উত্তম জাঝা!

এই বিষয়গুলো নিয়ে, এরকম অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে আরো অনেক অ-নেক বেশি সচেতনতা তৈরি হওয়াটা খুবই জরুরি।

বালিকার কথার প্রতিধ্বনি তুললাম আমিও।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য। হাসি
আমাদের প্রত্যেকের সচেতনতায় এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

চমৎকার

হাততালি চলুক পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- বাউল ভাই পাশে থাকার জন্য।
বলি আপনার সেই ইউরোট্রিপ কই গেল? সে কি আবার ইউরোপ বেড়াতে গেছে? খাইছে

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ, সুন্দর পোস্টের জন্য। আমার শিশু সন্তানের ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সজাগ থাকতে চেষ্টা করি। তবে আপনার এ পোস্ট আর ভাল ভাবে চোখকান খোলা রাখতে সাহায্য করবে।

বিবর্তনবাদী

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আমার এই লেখাটি যদি আপনার সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে তবেই আমার প্রচেষ্টা সার্থক। পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন। হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আমার মেয়েটা কিশোরী হচ্ছে, চাচ্ছে, "মা বকুক, বাবা তার বেদনা দেখুক"! আহা এই পোষ্টটি তার বেদনাগুলিকে নতুন আঙ্গিকে দেখবার মানসে আমাকে চক্ষুষ্মান করলো! ধন্যবাদ আপনাকে

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

রোমেল ভাই, একটা মেয়ে যখন বালিকা থেকে ধীরে ধীরে কিশোরী হয় সেই সময়টা খুব অন্যরকম। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি সেই সময় হঠাৎ করে সব মেয়েই একটা বড় ধাক্কা খায়। চেনা জানা পৃথিবীটা অন্য রকম হতে দেখে। অনেক অনাকাঙ্খিত নোংরা দৃষ্টি আর নোংরা স্পর্শের মুখোমুখি হতে হয় অনেক সময় যার জন্য সে প্রস্তুত থাকেনা একেবারেই।
দুঃখজনক ব্যাপার হল বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেয় মেয়েটি এই বিষয়গুলো আগে থেকে জানেনা, তাই ধাক্কাটা অনেক তীব্র হয়।
একটি মেয়ে যদি ছোট থেকেই নিজের শরীর এবং কিছু নোংরা মানসিকতার মানুষের কারনে তা থেকে তৈরি হওয়া অহেতুক ঝামেলাগুলো সম্পর্কে জানে সে ক্ষেত্রে মেয়েটির বড় হওয়াটা অনেক সহজ হয়।

ভয় কি, আপনার মত বাবা আপনার মেয়েটির রয়েছে। বন্ধু হয়ে পাশে থাকবেন আপনার আদরের কন্যার, ভরসা আছে। হাসি
পাশে থাকুন যে কোন পরিস্থিতিতে, তাকে এই ভরসা দেন যে কোন সমস্যা যেন আপনাকে সবার আগে বলতে পারে।
আদর রইল ওর জন্য, মানুষের মত মানুষ হোক। হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

তারেক অণু এর ছবি

খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখা । পরের পর্ব আসুক -

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ অনুদা। হাসি
এই বিষয়টি নিয়ে সকলেরই অনেক সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

তানিম এহসান এর ছবি

আশা করবো এটা নিয়ে ধারবাহিকভাবে লিখবেন, খুব দরকার।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

ধন্যবাদ তানিম ভাই পাশে থাকার জন্য। ইচ্ছে আছে আরও লিখার। হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ধুসর জলছবি এর ছবি

চলুক

আর এক্ষেত্রে সামাজিকতার বা লোকলজ্জার ভয়েও অনেক সময় অনেক অভিভাবক নির্যাতকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় না।

খুবই সত্যি। অনেক সময় রুখে দাঁড়ালেও তাদেরকেই হেনস্থা হতে হয়। কিছুদিন আগে ব্র্যাকের একটা লিগাল প্রজেক্টে ভিজিটে গিয়েছিলাম। এক মা তার ৭ বছরের বাচ্চা মেয়েটাকে নিয়ে এসেছে। এই বাচ্চাটার যখন ৬ বছর বয়স তখন তাকে বাসার ৯০ বছরের বাড়িওয়ালা ডেকে নিয়ে গিয়ে রেইপ করে। বাচ্চাটার বাবা নেই। মা অফিসে ছিল। বাসায় এসে সে দেখে তার বাচ্চা অচেতন হয়ে পড়ে আছে, সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত। ডাক্তার দেখানোর পর আর বাচ্চাটার সাথে কথা বলে পরে সব জানে এবং সেই লোকের নামে মামলা করে। সেই মামলা এক বছর ধরে চলছে। ঝামেলা হল ওই লোকের ছেলে মেয়েরা যাদের নিজেদেরও সবার বাচ্চা আছে তারা এই ভদ্রমহিলাকে শাসাচ্ছে, মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য। এমনকি এখন তার নিজের রাস্তায় চলাফেরাও বন্ধ হয়ে গেছে। পাড়ার মাস্তান দিয়ে বাচ্চাগুলোকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। সে তাই ব্র্যাকের অফিসে এসেছে হেল্প চাইতে। এই হল অবস্থা !!!

এটা কিন্তু তাকে এমন মেসেজ ও দিতে পারে যে অভিভাবকেরা বাধ্য হয়ে চলাটাকেই বা বড়দের সব কথা শোনাকে সবার চাইতে বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকে। যৌন নির্যাতককারী কিন্তু এমন শিশুই খুঁজে বেড়ায় যে বিনয়ী, এবং পাল্টা প্রতিবাদ করবেনা বা কিছু জিজ্ঞেস করবেনা বরং চুপচাপ সব কিছু মেনে নিবে।

চলুক চলুক

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

অনেক সময় রুখে দাঁড়ালেও তাদেরকেই হেনস্থা হতে হয়।

এই কথাটাও সত্যি। তবে তোমার উল্লেখিত ঘটনার মত ম্যাক্সিমাম পর্যায়ে গেলেয় অভিভাবকেরা তাও যা ব্যাবস্থা নেয়। ভেবে দেখ যদি এমন হত যে সেই অমানুষ রেইপ না করে শুধু গায়ে হাত দিত বাচ্চা মেয়েটার বা এমন কিছু করত আর বাচ্চাটা বাসায় জানাত তাহলে হয়ত বাবা-মা বাচ্চাটিতে ঐ লোকের চোখের আড়ালে রাখত ঠিকই কিন্তু প্রতিবাদ আর করত না।
আবার সবাই যে চুপ করে মেনে নেয় তাও নয়, কেউ কেউ তো নিশ্চয় করে।

তোমার বর্ণিত ঘটনার মত আমিও কিছু ঘটনা জানি, সব ক্ষেত্রেই দেখা যায় উল্টা ভিক্টিমই ন্যায় বিচার তো পায়না উল্টা সবার কাছ থেকে হেনস্থার স্বীকার হয়। এত কষ্ট হয় জানো, ছোট ছোট সব মানুষ, কিছু বুঝেই না তাকে কি অসম্ভব ভয়াবহ কষ্টের মধ্যে ঠেলে দেওয়া। মন খারাপ
কত মানুষের ভবিষ্যৎ যে এভাবে নষ্ট হয় !!!

সমস্যা হল আমাদের সমাজ ব্যবস্থার, আমাদের মানসিকতার, আমাদের আইন ব্যবস্থার।
ভেবে দেখ এই ঘটনা জানাজানি হবার পরে যদি ঐ লোকটির ছেলে মেয়েরা তাকে বর্জন করত, ছেলে মেয়েরা যদি তাদের নিজেদের সন্তানের সাথে এমন ঘটনা ঘটলে তাদের কেমন লাগত এমনটা ভাবত তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন রকম হত।

আর আমাদের দেশে যৌন নির্যাতন বা শিশু যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে আইন তেমন শক্ত নয়। যদিও আমার জানা নেই ধর্ষণ ছাড়া অন্যসব শারীরিক বা মানসিক লাঞ্ছনার জন্য আইন আদৌ আছে কিনা।
যদি আইনের প্রয়োগ এবং প্রশাসন শক্ত হত, সমাজ যদি অন্যায়কারীর প্রতি কঠোর হত, তাকে সহযোগিতা না করত তাহলে অনেক অন্যায় কমে যেত।

আসলে সচেতনতা আসতে হবে সকল স্তর থেকেই, নাহলে হয়ত অবস্থার পরিবর্তন কখনই হবেনা।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ধুসর জলছবি এর ছবি

ঘটনা জানাজানি হবার পরে যদি ঐ লোকটির ছেলে মেয়েরা তাকে বর্জন করত, ছেলে মেয়েরা যদি তাদের নিজেদের সন্তানের সাথে এমন ঘটনা ঘটলে তাদের কেমন লাগত এমনটা ভাবত তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন রকম হত।

আমি ভয়াবহ অবাক হয়েছি সাথে রাগও হয়েছে যে, একটা বাবা এরকম কাজ করার পর কি করে তাকে ঘৃণা না করে তার সন্তানেরা তাকে এত সাপোর্ট দিতে পারে যেখানে তারা নিজেরাও সন্তানের বাবা মা। বাস্তবতা আসলে এরকমই মনে হয়। নিজের লোক অন্যায় করলে তখন মানুষ সেটাকে অন্যায় ভাবে না। ভয়ঙ্কর !
আমিও জানিনা এ ব্যপারে আদৌ শাস্তির ব্যবস্থা আছে কিনা। তবে আমার মনে হয় সবার আগে বাবা মাকেই সতর্ক হওয়া উচিত। প্রতিবাদি হওয়া এবং হতে শেখানো উচিত। নয়ত শাস্তির ব্যবস্থা থেকেও লাভ নেই যদি না কেউ কমপ্লেইনই না করে।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

বাস্তবতা আসলে এরকমই মনে হয়। নিজের লোক অন্যায় করলে তখন মানুষ সেটাকে অন্যায় ভাবে না।

কথাটা যে কতবেশি সত্যি পদে পদে টের পাই।

তবে আমার মনে হয় সবার আগে বাবা মাকেই সতর্ক হওয়া উচিত। প্রতিবাদি হওয়া এবং হতে শেখানো উচিত। নয়ত শাস্তির ব্যবস্থা থেকেও লাভ নেই যদি না কেউ কমপ্লেইনই না করে।

সেই, বাবা মা সচেতন না হলে আসলেই কোন লাভ নেই।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

গান্ধর্বী এর ছবি

চলুক
শিক্ষণীয় পোস্ট।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

------------------------------------------

'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

হ্যাঁ, অবশ্যই একটা বিশেষ প্রয়োজনীয় বিষয়য়ের উপর লেখা। চলুক।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

সুমাদ্রী এর ছবি

খুব ভাল একটা লেখা আরজু। আমরা অনেকেই কমবেশী শৈশবে এরকম অনভিপ্রেত এবং দুঃখজনক ঘটনার শিকার, এমন একটা ব্যাপার যেটা পরবর্তীতে লজ্জ্বায়, ঘৃণায় কাউকে বলতেও পারি না। এটা অবচেতন মনে রয়ে যায় এবং একটা পাপবোধ, নিজের প্রতি ঘৃণাবোধের অস্বস্তি আমাদের তাড়িয়ে নিয়ে যেতে যেতে মানসিকভাবে অসুস্থ করে দেয়। একটা বাচ্চাকে দেখতে ভাল লাগলেই তাকে যে গায়ে হাত দিয়ে আদর করা যাবে না এটা আমি প্রথম শিখি দেশের বাইরে এসে। ফ্রান্সে আমি যেখানে পড়তাম কয়েকমাসের জন্য তার সামনেই বাচ্চাদের একটা প্রিপারেটরি স্কুল ছিল। আমি প্রতিদিন ভোরবেলা এসে স্কুলের বাচ্চাগুলোকে দেখতাম, তাদের সাথে খেলতাম, দুষ্টুমি করতাম। একদিন স্কুলের এক টিচার এসে আমাকে ওর অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলল, '' কিছু মনে কর না, আমি জানি তোমাদের অঞ্চলে অচেনা বাচ্চাদেরও তোমরা কাছে গিয়ে আদর করতে পার, কেউ কিছু মনে করে না, কিন্তু ইউরোপে এটা অভিভাবকেরা ভাল চোখে দেখেন না। তুমি যে রোজ এখানে এসে বাচ্চাদের সাথে খেলছ, এ ব্যাপারটা নিয়ে ওদের পিতামাতারা উদবিগ্ন। তুমি বাচ্চাদেরকে টাচ না করলেই ওরা খুশি হবেন।'' আমি প্রথমে ভেবেছিলাম, ব্যাপারটা একটা বর্ণবাদী আচরণ। কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবীকে ব্যাপারটা জানাতেই ওরা আমাকে বলল যে আমি সৌভাগ্যবান কারণ এসব ক্ষেত্রে সাধারণত পুলিশকে খবর দেয়া হয় শিশু নির্যাতনের ব্যাপারটা মাথায় রেখে। সেদিনের পর থেকে আমি আর বিদেশী বাচ্চাদের গায়ে হাত দেওয়ার আগে অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে নিই। তবে বাচ্চাদের কাছ থেকে অনুমতি নেয়াটা আরো বেশী জরুরী। পরের পর্ব আসুক।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ সুমাদ্রিদা। আপনার অভিজ্ঞতাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কখনই মনে করিনা বাচ্চাদেরও পছন্দ অপছন্দ, ভাল লাগা, মন্দ লাগা রয়েছে। আসলেই বাচ্চাদের কাছ থেকে অনুমতি নেয়াটা আরো বেশী জরুরী।
পৃথিবীর সব দেশে মানুষ সচেতন হচ্ছে শুধু আমরাই কেমন পিছিয়ে থাকছি।
শৈশবের এই নোংরা অভিজ্ঞতা এমন ভয়ংকর যে না এর মধ্যে দিয়ে গেছে সে কখনই বুঝবেনা। একটি শিশুর মনের জগত পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেবার জন্য অশ্লীল ও নোংরা একটি স্পর্শই যথেস্ট।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

মণিকা রশিদ এর ছবি

আর একটা কথা বলা মনে হয় দরকার। যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে শিশুর অভিযোগকে খুবই গুরুত্বের সাথে নেয়া উচিৎ। এইসব ক্ষেত্রে অধিকাংশ শিশুই(৯৯'৯৯%) মিথ্যে বলে না।

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে শিশুর অভিযোগকে খুবই গুরুত্বের সাথে নেয়া উচিৎ। এইসব ক্ষেত্রে অধিকাংশ শিশুই(৯৯'৯৯%) মিথ্যে বলে না।

চলুক

দারুন বলেছেন মনিকাদি। হাসি
এক্ষেত্রে বিষয়টা এমনই যে একজন শিশুর বানিয়ে বলার আসলে ক্ষমতায় নেই।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

জরুরী বিষয়।

সমস্যা হইল তরীকা। এই বিষয়গুলো নিয়ে সিরিয়াস লেখালেখি হওয়া দরকার। কীভাবে বুঝাইলে একটা বাচ্চা ব্যপারটা কীভাবে নিবে সম্ভবত এইটা ভাইবা অনেক সময় বাবা-মা পিছায়ে যায়। আবার অনেক সময় কমঅন সেন্সে যেটাকে সঠিক তরীকা মনে হয় সেইটা হয়ত বাচ্চার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ভিন্নভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। এইজন্যে এইসব আলোচনা হবার দুইটা দিক থাকা দরকার একটা হইল সচেতনতা আরেকটা হইল জাইনা শুইনা সচেতনতা। এক্সপার্ট লোকেদের এইসব বিষয়ে খবরের কাগজে লিখতে উদবুদ্ধু করা দরকার। কারন অনেক সময় নিয়ত সঠিক থাকলেও ভুল তরীকার কারনে সফলকাম হওয়া যায় না। তাই জাইনা শুইনা বিষয়গুলা নিয়ে লেখালেখি করা জরুরী। আমি নিজে এই বিষয়ে শূন্য ধারণা রাখি তাই এর চেয়ে বেশি কিছু আর বলার নাই।

আশা করছি আরও লিখবেন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

অনেক সময় নিয়ত সঠিক থাকলেও ভুল তরীকার কারনে সফলকাম হওয়া যায় না। তাই জাইনা শুইনা বিষয়গুলা নিয়ে লেখালেখি করা জরুরী।

চলুক

একদম ঠিক বলেছেন।
তবে শিশুদের খুব সহজ ভাবে বুঝালে তারা বুঝে যায়। অনেক সময় প্রশ্ন করে সেটার জবাবটাও একটু গুছিয়ে বললে সমস্যা হবার কথা না। আমার কাজিন ৬ বছর বয়স, ওকে আরও বছর খানেক আগে আমরা খুব নরমালি ওর শরীরের স্পর্শকাতর অংশগুলো চিনিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম এখানে আম্মা আর ডাক্তার ছাড়া আর কেউ হাত দিতে পারবেনা। আর অন্য কেউ যদি কোন দরকারে হাত দিতে চায় তবে আম্মার উপস্থিতিতে দিতে হবে। আর যদি কেউ জোর করে হাত দেয় তাহলে যেন সে বাসায় আম্মা বা আব্বা কে জানিয়ে দেয়। ও কিন্তু পুরো ব্যপারটা খুব সহজ ভাবে নিয়েছিল শুধু প্রশ্ন করেছিল কেন আর কেউ হাত দিতে পারবেনা। আমরা জবাব দিয়েছিলাম কারন এগুলো তোমার সিক্রেট। কার্টুন দেখার সুবাদে সিক্রেট কি ও বুঝে তাই আর কথা বাড়ায়নি। তাই আমার মনে হয় বাচ্চাদের সহজ ভাবে বুঝালে খুব একটা সমস্যা হবার কথা না। হাসি
আর আসলেই এ বিষয়গুলো নিয়ে আরও অনেক লেখালেখি হওয়া দরকার। বিশেষ করে সংবাদপত্রগুলোতে টিভি চ্যানেল গুলোতে কারন এই মাধ্যমগুলো সব শ্রেণীর মানুষের কাছে সহজে পৌছায়।
ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য কবি ভাই। হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আমাদের সমাজে রক্ষণশীলতার কারণে এসব বিষয় স্কুলে তো বটেই এমনকি পরিবারেই শিক্ষা দেয়া হয় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেয়া হয় কন্যা বয়ঃসন্ধিতে পৌছাবার পর। কিন্তু তার আগেই সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে। শিশুকে সচেতন করার পাশাপাশি আরেকটি জরুরী বিষয় হলো শিশুটিকে যেন কোন পুরুষের সাথে একা না থাকতে না হয়। এমনকি কাছের আত্মীয় হলেও। পুরুষ বলতে যুবা পুরুষ না শুধু, বারো তেরো বছর থেকে নব্বই বছর পর্যন্ত হতে পারে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক
খুবই চমৎকার এবং গুরুত্বপূর্ণ কথা নীড়দা। আসলেই বাচ্চা বুঝতে শিখার পর থেকেই ধীরে ধীরে বুঝানো উচিত কেননা অনেক বাচ্চায় বয়ঃসন্ধিতে পৌছাবার অনেক আগেই নির্যাতনের শিকার হয়। আর এটাও খুব ভাল পয়েন্ট যে কোন পুরুষের সাথে একা না থাকতে না হয়। এমনকি কাছের আত্মীয় হলেও। পুরুষ বলতে যুবা পুরুষ না শুধু, বারো তেরো বছর থেকে নব্বই বছর পর্যন্ত হতে পারে।
অনেক ধন্যবাদ।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে দারুন একটা লেখা, আশা করি ধারাবাহিক সিরিজ হয়ে আরো অনেক বিষয়ে আলোকপাত করবেন।

এখনো আমাদের সমাজে পাঁয়ে ধরে সালাম না করলে ভাবে ছেলে/মেয়েটা বেয়াদব হয়ে গেছে, অনেক বড় কিছু হয়ে গেছে মন খারাপ ।এখনো বেশিভাগ মরুব্বিদের কাছে ভদ্রতার মাপকাঠি হলো আসতে যেতে আদাব-সালাম দাও। এগুলোর পরিবর্তন আসা দরকার।

মাসুদ সজীব

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আশা করি ধারাবাহিক সিরিজ হয়ে আরো অনেক বিষয়ে আলোকপাত করবেন।

হাসি ইচ্ছে আছে, আশা করি পাশে পাব আপনাকে।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। জানতে হবে, জানাতে হবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখার জন্য। বিষয় নির্বাচন থেকে শুরু করে লেখার ধরণ পর্যন্ত সব ভালো লাগলো।

____________________________

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

হাসি ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল।
ধন্যবাদ।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

স্যাম এর ছবি

সচলায়তন না পড়া বা কিছুই পড়তে না পারাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারা যায় কিভাবে এ লেখাটি ? সিরিজ চলতে চলতে এ নিয়েও একটা পরিকল্পনা হতে পারে না?

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

অবশ্যই পারে স্যামদা। আমিও ভাবছি কি করা যায়, আপনার কোন আইডিয়া থাকলে জানান প্লিজ। হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

শাব্দিক এর ছবি

প্রয়োজনীয় লেখা। চলুক

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।