রাতের আকাশের শুকতারা
ডিসেম্বর আর জানুয়ারী মাস মানেই হল বেড়াত যাওয়া তাই সকল ব্যস্ততার পাঠ চুকিয়ে মায়ার টানে চলে গেলাম গ্রামে। যাওয়ার আগেই যাবতীয় & প্রয়োজনীয় সকল জিনিস পত্র নিয়ে উঠলাম গাড়িতে। বাড়িতে যখন পৌছালাম তখন যোহরের ওয়াক্ত যাই যাই করছে। তাই অযুটা সেরে যোহরের নামাযটা আদায় করে একাই খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম কারণ আমি পৌছানোর আগেই সবার খাওয়া দাওয়া শেষ। খাওয়া দাওয়া করে একটু বিশ্রাম নিয়ে উঠার পরে বাবা শুধালেন শীতের কথা যদিও তখন আমি শুধু মাত্র একটি T-Shirt পড়ে ছিলাম। বলেলন শীত দমাতে কী কী ব্যবস্থা নিয়ে এসেছি। যাহোক রাত অবদি খুব একটা সমস্যা হল না । রাতের খাওয়া দাওয়া সেরে যখন শোবার ঘরে গেলাম দেখি মা অনেক আগেই সব Ready করে রেখেছেন। শুতে গিয়ে দেখলাম সবার আগে কম্বল তার উপরে বড় বড় দুটি কাঁথা । কোন প্রকার ডুকলাম সে গুলোর মধ্যে স্বাভাবিক ভাবেই একাই থাকতে হয়েছে যেহেতু...............(বুঝে নিবেন)। শোবার পড়ে দেখলাম এদিকে ফিরলে অন্য দিক ঠান্ডা হয়ে যায়।মনে পড়ল সেই পিথের মানুষ গুলোর কথা যারা নিচে বিছানোর জন্যে তো দুরের কথা গায়ে দেওয়ার জন্যেও একটা নরমাল কম্বল পায়না সে মানুষ গুলো কিভাবে রাত কাটায় । যা হোক কোন ক্রমে ঠান্ডার সাথে যুদ্ধ করে রাত কাটাতে লাগলাম হঠাৎ মোবাইল দুটি দুদিক থেকে এক সাথে অস্থির হয়ে ডাকতে শুরু করেছে। বুঝতে পারলাম First semester শেষ। মহান আরশের মালিক মুয়াজ্জিনের মাধ্যমে ডাকছে। উঠতে গিয়ে দেখলাম উপরের কাথা গুলো ঠান্ডা হয়ে আছে। দরজা খুলে বাহিরে বের হতেই দেখলাম উঠানের উপর অনেক পানি জমে আছে মনে হচ্ছে এইমাত্র এক পশলা বৃষ্টি ধুয়ে দিয়ে গেল। কুয়াশায় অন্ধকার হয়ে আছে সামনে খুব একটা দেখা যায় না। অযু করতে নলকুপে গেলাম। নলকপের হাতলটা ধরতেই মনেহল শক খেয়েছি এতটা ঠান্ডা।অযু করে মসজিদে গিয়ে নামায পড়ে বেড় হতেই মনে হল গত রাতের কথা বাবা বলেছিলেন সকালে দোকানে বসতে হবে কারন বাবার মসজিদ থেকে বের হতে দেরি হবে। Second semester এর মুখে ছাই পড়েছে। বাসায় গিয়ে কুরআন তেলওয়াত করা শেষ হতে না হতেই চা খাওয়ার জন্যে ডাক পড়েছে। চা খেয়ে দোকানে এসে বসলাম মনে হচ্ছে ফিনকি দিয়ে ঠান্ডা সব আমার দিকে তেড়ে এসছে। কোন মতে চাদর গায়ে দিয়ে ঠান্ডা রোধ করলাম But রোদের দেখা মিলছে না । রোদের দেখা পাওয়ার জন্যে আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে সাড়ে এগারটা পযর্ন্ত চিন্তা করছিলাম শহরে সত্যিই কত ভাল আছি। কত কম শীত এখানে।মনে হল গ্রামের মানুষ গুলোকে আল্লাহ বেশি সাওয়াব দিবেন কারন এ ঠান্ডার মধ্যে তারা ঠান্ডা পানি দিয়ে অযু করে নামাযের জন্যে মসজিদে আসে।
আর গ্রামে চুলার পাশে বসে হরেক রকম শীতের পিঠা খাওয়ার মজা কেমন সে কথা না হয় অন্যদিন বলব।