ভোটের পর নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে গেলেও সংলাপের উদ্যোগ নিতেও সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
Published : 15 Jan 2014, 07:12 PM
বিএনপির বর্জনের মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর বুধবার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এসে এই আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে বলেছেন, বিএনপি যদি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ এবং ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি ছাড়তে পারে, তাহলে তাদের সঙ্গে সংলাপে সমঝোতা হলে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেয়া হবে।
গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে খালেদা বলেন, “আমরা সহিংসতা ও হানাহানিতে বিশ্বাস করি না। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পন্থায় আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।
“এই সংগ্রামের পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট নিরসনে আমাদের আহ্বান অব্যাহত রয়েছে। আমি আজ আবারো সেই লক্ষ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
সংলাপের কোনো প্রস্তাব পেয়েছেন কি না- প্রশ্ন করা হলে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “আমরা সংলাপবিরোধী ছিলাম না, এখনো নেই। তবে এখনো সংলাপের কোনো প্রস্তাব আমাদের কাছে আসেনি।”
খালেদার বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ এবং ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি ছাড়ার ঘোষণা দিতে হবে বিএনপি চেয়ারপারসনকে।
অন্যদিকে খালেদা সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে পূর্বশর্ত হিসেবে পাঁচটি দাবি জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে-আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি, গ্রেপ্তার-নির্যাতন বন্ধ, বিরোধী জোটের কার্যালয় খুলে দেয়া, রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দেয়া, বন্ধ সব গণমাধ্যম খুলে দেয়া।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “দেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। এই সংসদ জনপ্রতিনিধিত্বহীন। কাজেই এই সরকারও বৈধ সরকার নয়।
“তাই অনতিবিলম্বে বিপজ্জনক এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে পুনরায় সমঝোতা ও সংলাপের আহ্বান জানাচ্ছি।”
নির্বাচন বর্জনের ফলে দশম সংসদে বিরোধী দলের আসন হারানো বিএনপির নেত্রী ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে কী করবেন, তাও লিখিত বক্তব্যে তুলে ধরেন।
“নির্ভেজাল গণতন্ত্রই হবে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার পদ্ধতি। সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি স্থায়ী রূপরেখা নির্ণয় করা হবে।”
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমন, দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি বন্ধ, সুশাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন খালেদা। এই ধরনের ২০টি বিষয়ের একটি ফিরিস্তি দেন তিনি।
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আন্তরিকতার কথা জানিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা বলেন, “সকল দেশ বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব আরো জোরদার করা হবে।”
বক্তব্যে মুহাম্মদ ইউনূসের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, “একমাত্র নোবেলবিজয়ী বাংলাদেশি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে যথাযথ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা হবে। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত থাকবে।”