somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অগ্নিকান্ড..

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওরা শেষ পর্যন্ত আমার বাড়িতে আগুন দিতে পারলো!
পুড়িয়ে ছাই করে দিল আমার পৈতৃক নিবাস, আমার আশ্রয়স্থল! কোন কিছুই অবশিস্ট রাখলো না আর!
পুড়াতে কার্পন্য করেনি কোন কিছুই। বিবেক বিবেচনা খাটায়-নি ছাইয়ের স্তুপ গড়তে।
একটিবারে জন্য ভাবেনি কি হবে আমাদের?
কিসের ছায়াতলে গিয়ে দাড়াবো আমরা ৪জনের ছোট্ট পরিবারটি?
চৌচালা কোন ঘরটির দিকে আঙুল তাক করে বুক ফুলিয়ে বলবো ‘এই দেখ আমার বাবা আমার জন্য রাজ প্রাসাদ তৈরী করে গেছেন’?
কোথায় খুজবো আমি আমার শেষ আশ্রয়স্থল?
পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তুপের সামনে দাড়িয়ে এসব প্রশ্নই ঘুরপাক করছে আমার চিন্তায়। শোকে পাথর হয়ে গেছি আমি,বুক ফেটে যাচ্ছে আর্তনাদে কান্নায় কিন্তু চিৎকার করে কাঁদতেও পারছি না।

না, এটি কোন স্বাভাবিক দুর্ঘটনা নয়।
কোন বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বা মোমবাতির শিখা থেকে এ আগুনের সুত্রপাত ঘটেনি।
কিংবা কোন মশার কয়েল থেকেও এ আগুন লাগেনি।
পৃথিবীর চোখে এটি দুর্ঘটনা হতে পারে হয়তো।
আমার কোন ব্যক্তিগত সহিংস শত্রুও নেই।
আমাদের পরিবারেরও কারোও সাথে কোন বিরোধ বা ঝগড়া-বিবাদ হয়নি কখনো। আমাদের গ্রামে অনেকের চোখে আমার পরিবারটি অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় একটি সুশৃঙ্খল পরিবার।

আজকের এ ঘটনার পর আগামীকাল হয়তো ক্ষমতাসীন দল,বিরোধীদল, প্রগতিশীল জোট প্রতিবাদ সভা করবে, দলে দলে দেখতে আসবে আমার পুড়ে যাওয়া আশ্রয়স্থলটুকু। সান্ত্বনা দেবে।
প্রশাসন আসবে।
স্বচ্ছ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দেবে।
এলাকার সংসদ সদস্য আসবে, কাধে হাত রেখে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেবে।
হয়তো তাৎক্ষনিক সহায়তাও দেবে।
অতঃপর আমি সেই ঘরপোড়াই রয়ে যাবো।
আমি জানি এমন সহানুভূতি শুধুই ক্ষনিকের, কারন আমার মতো এরকম সহিংসতার স্বীকার বাংলাদেশে অহরহ হচ্ছে আর তাতে এরা একাজগুলোই করে আসছে।
আমার ঘটনা বিরল নয় যে এরা দীর্ঘ সময় আমার পাশে থাকবে ।

ছাই থেকে এখনও ধোয়া উড়ছে। চারিদিকে শুধু আগুনে পোড়ার গন্ধ।
ঘরের গোছানো আসবাবপত্রগুলা পুড়ে এলোমেলো হয়ে ছিন্ন-ভিন্ন অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চারিদিকে। পুড়ে গেছে আমার বাবার পরম প্রিয় বইগুলো।

ডেল কার্নেগী আর লুৎফুর রহমানের বইগুলোর কয়েকটি পাতা আধ:পোড়া অবস্থায় এদিক সেদিক পড়ে আছে। বাবা, তার অবসর সময়ের বেশিরভাগ সময় কাটাতেন বইয়ের সাথে। আমি সেই বইগুলা যত্ন করে তুলে রেখেছি আমার পৈতৃক সম্পতি ভেবে। পুড়ে যাওয়া সেই বইগুলা দেখে অন্তরে আমার শুধুই কান্না পাচ্ছে।
জানি আমার হৃদয়ের সেই আর্তনাদ কারোও দৃষ্টিগোচর হবে না।

এই বইয়ের পাতাগুলো পুলিশের কাছে যাবে তদন্তের আলামত হিসেবে।
তদন্ত হবে। সাংবাদিকরা আসবে, অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে।
তারপর আমার কাছথেকে পাওয়া উত্তর এবং প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশিত হবে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়।

কনকনে শীতের রাত । আমার চারদিক ধোয়া। আমার চোখের সামনে শুধুমাত্র পুড়েযাওয়া স্মৃতিগুলো। এই ঘরটিতে একটা খাট, একটা আলনায় কিছু কাপড়চোপড়, টেবিল-চেয়ার, বুকসেলফে বইগুলো, একটা গীটার, দেয়াল ঘড়ি, তিনটি পোস্টার কাজী নজরুল, রবীন্দ্রনাথ আর লালনের, গত বছরের ক্যালেন্ডার, হারমোনিয়াম আর কম্পিউটার এগুলোর ধ্বংসাবশেষ আমার দিকে মায়াভরা চোখে তাকিয়ে আছে। তাদের সাথে আমার বেশ ক’বছরের বন্ধুত্ব। এই ঘরটাতেই আমার কৈশরের সব স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ঢাকায় আসার আগে শেষ ক’টি মুহূর্ত আমি এই ঘরটাতে আমার এইসব সঙ্গীদের সাথেই কাটিয়েছিলাম।

শেষ মুহূর্তগুলোতে আমার সঙ্গী ছিল আমার খাট। তার ওপর শুয়ে পায়ের উপর পা তুলে, পা নাড়িয়ে-নাড়িয়ে শুনছিলাম ক্লান্তিহীনভাবে আমার ল্যাপটপের গানের তালিকা থেকে বেজে ওঠা রবীন্দ্রসংগীত ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে’।
আমি তন্ময় হয়ে শুনছিলাম। আর ভাবছিলাম,
এখন থেকে ঢাকায় থাকতে হবে! ভেবে তখন জমাট বরফের মত বুকে চেপে থাকা দুঃখবোধ সুরের উষ্ণতায় গলে জল, সেই জল জোয়ারে পরিণত, তখন মাঝে মাঝে পেন্ড্রুলাম হয়ে তা ঘা দিচ্ছিলো হৃদপিন্ডে। বায়োস্কোপের ছবির মতো অতীত ভেসে উঠেছিলো চোখের সামনে, আবার সিলিং ফ্যানের ঘূর্ণায়মান পাখার সাথে শূন্যে মিলিয়ে যাচ্ছিলো। আবার ঢাকার নি:সঙ্গতার কথা কল্পনা করে মাঝে মাঝে নিউরণ বেয়ে হিমশীতল কোনো অনুভূতি তরঙ্গ বয়ে যাচ্ছিলো শরীরের প্রতিটি কোষে।

এখন
হঠাৎ বেরসিকের মতো বেজে উঠলো মোবাইল। কল করেছে এঞ্জেল রায়হান। ফোনটা কেটে দিলাম। মোবাইলের পাওয়ার সুইচটা জোরে চেপে ধরলাম আর সাথে সাথে বুকটা খা খা করে উঠল। আর কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে না এঞ্জেলের সাথে। শুনতে ইচ্ছে হচ্ছে না ওর আধভাঙা ইংলিশ ‘হ্যালো মিষ্টার পারফেক্ট. হাওয়ার ইউ?’ ওর ভবিষ্যতের স্বপ্নের উষ্ণ প্রতিশ্রুতিতে আমার শরীরের প্রতিটি রোমকূপে আর শিহরণ জাগাতে ইচ্ছে করছে না।

এই পুড়ে যাওয়া ভষ্মস্তুপের সামনে দাড়িয়ে এঞ্জেল’দের শুধু ঘৃনা ছাড়া আর কিছু করতে ইচ্ছে করে না। আমাকে তোরাই এই পরিষ্থিতিতে ঠেলে দিয়েছিস । আমি পরিষ্থিতির স্বীকার। আর কিছু সময়ের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলে যাবে। অনেক ধৈয্য নিয়ে আমাকেই স্বান্তনা দিতে হবে বাবাকে। জানি কিছুই ঠিক হবার নয়, তবুও বলতে হবে ‘সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বাবা’।

না, এটা ১৯৭১ নয়, পাকিস্তানের কোন মেলেটারি আমার ঘরে আগুন দেয় নি।
এই কল্যান জানে নিজের দেশের শত্রুর চেয়ে বড় শত্রু আর নেই। নিজের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতির চেয়ে সত্য কোন স্বাক্ষী নেই। কল্যানের ঘরে আগুন, কল্যানের এলাকার লোক ছাড়া অন্য কেউ এসে দেয় নি। কয়েকদফা হুমকি-ধামকির পর এই আগুন দেয়া হয়েছে। আগুনের খবর পেয়ে ঢাকা থেকে ফেরার সময় গাড়িতে বসে বসে অনেক ভেবেছি, যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন হয়েছে অনেক। অতঃপর নিশ্চিত হয়েছি এই কাজটি কারা করেছে।

আমার অপরাধ শুধু এই নয় যে, আমি নীরব থাকতে পারছি না আজকাল। এমনও নয় আমার সরবতার অপরাধে আমার ঘরে এই অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমার পরিবার সবগুলো ভোট আমাদের গ্রামের প্রার্থীর স্বপক্ষে দিয়েও তাকে জয়ী করতে পারি নি, এ কারনেও আমার ঘরে আগুন দেয়া হয় নি। আমার ঘরে আগুন দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র এদশে হিন্দু হয়ে জন্মাবার অপরাধে।

আমি মুসলমান নই, আমার ঘরটি কোন মুসলমানের ঘর নয় এজন্য পুড়িয়ে দেয় হয়েছে। একথা আমি ছাড়া কেউ জানে না।
একজন অমুসলিমের জন্য বাংলাদেশে এটিই-ই হয়তো উপযুক্ত শাস্তি!
মানবাধিকার সংস্থারা যতই প্যানপ্যানানি করুক, একটি নিরীহ পরিবারকে আশ্রয়হীন করা মানে অযুত নিযুত নিরীহ পরিবারের জন্যও হুমকি । যারা ঠান্ডা মাথায় এই ধ্বংস টেনে আনতে পারে তারা মানবসভ্যতার জন্য হুমকি। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তাতে কারোরই কিচ্ছু হবে না, তা আমার জানা আছে ।

এঞ্জেল কেন ফোন করতে গেল? ওতো রাত বারোটার পর ফোন দেয় না। এঞ্জেল, প্রতিবার যখন আমি তোর ওপর বিরক্ত হই অথবা তোকে ঝাড়ি দিই, তুই শুধু গম্ভীর মুখে আমাকে বলিস, ‘সরি,ভুল হয়ে গেছে। এবারের মতো মাফ করলে হয় না?’
এঞ্জেল, তোর জন্যই আমার ঐ-সম্প্রদায়কে ঢালাওভাবে দোষারপ করতে কষ্ট হবে।
আমি জানি, এই ঘটনা সম্পর্কে তুই কিছুই জানিস না বা তোর কোন প্রত্যক্ষ মদদ নেই, তবু ভাবতে ইচ্ছে করছে যে তুই বারবার আমাকে বলছিস, ‘সরি,ভুল হয়ে গেছে। এবারের মতো মাফ করলে হয় না?’ এঞ্জেল তোকে আমি কখনোই দোষী ভাবতে পারি না। আমার এই কথাগুলোতে তুই কষ্ট পাবি জানি, তবু প্লিজ নিজেকে ভুলেও অপরাধী ভাবিস না। কিন্তু তোদের নির্দোষ ভাবতে যে ভীষণ ইচ্ছে করছে। শুধু তোদের জন্যই আমি আমার অভিযুক্তদের তালিকা সংশোধন করবো। এখনি বসাবো আমার হৃদয়ের আদালত।

বসে পড়লাম মাটিতে। চোখ বন্ধ করলাম।
সাংবাদিক,পুলিশরা আসার আগেই হৃদয়ের আদালতে সংশোধনের কাজ শেষ করতে হবে। মুহূর্তেই বসে গেল আদালত। এঞ্জেলদের অভিযুক্তের তালিকায় রাখার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করছে বাদীপক্ষের মানবতাবাদী-যুক্তিবাদী উকিল। বিবাদীপক্ষে সাফাই দিচ্ছে আমার আবেগী মন। বিচারকের আসনে বিবেক, কাঠগড়ায় এঞ্জেল’রা, সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়।

আমার এই আদালত পৃথিবীর অন্যান্য আদালতের নিয়ম মানে না।
এর কোনো লিখিত আইন নেই। বিবেক-এর কথাই আইন। বিবেকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
বাদীপক্ষের উকিল বলা শুরু করলেন,
মাননীয় আদালত, অভিযুক্তদের কয়েকজনকে এই তালিকা থেকে অব্যহতি দেওয়া এই বিচারে অনভিপ্রেত। মি. কল্যানের মত মানুষের কাছ থেকে হুট করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া তার মানসিক ভারসাম্যহীনতারই প্রমাণ।

বিবাদীপক্ষ Ñ অবজেকশন ইয়োর অনার, এটিকে মানসিক ভারসাম্যহীনতা বলার কিছু নেই। আমার মক্কেল প্রকৃত অপরাধীদের অভিযুক্তের তালিকায় নাম এসেছে কি না তা নিশ্চিত হবার অধিকার তার আছে।
আদালত- অবজেকশন ওভাররুলড। বাদীপক্ষ আপনি অগ্নিকান্ডেরর ঘটনা সম্পর্কে আপনার অবজারভেশন বলুন, তারপর বিবাদীপক্ষ তার যুক্তি উপস্থাপন করবেন।
বাদীপক্ষ- ধন্যবাদ ইয়োর অনার। ইতোমধ্যেই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়েছে অভিযুক্ত সম্পদায়ের সকলই প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে মি. কল্যানের বাড়িতে অগ্নিকান্ডের জন্য দায়ী। তার বাড়িতে আগুন দেওয়ার মোটিভও অত্যন্ত স্পষ্ট। আসামীরা এবং কল্যানের ঘড় একই এলাকায় অবস্থিত। উভয়েই ভালো প্রতিবেশী এবং উভয়েই পরষ্পরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়া আসা করতেন। উভপক্ষের খাদ্যতালিকায় একই মাটিতে ফলানো ফসল, একই দেশের বাতাসে বুকভরে নিশ্বাস নেন উভয়পক্ষ।


স্বাধীন বাংলাদেশের চেতনা তাদের উভয়কেই উদ্দীপ্ত করে। মি. কল্যান নিজেই স্বীকার করেছেন, ১০ম সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। তখন তার প্রবল ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও তার এলাকায় একাধিক প্রার্থী না থাকায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে আসেন নি। বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় তার এলাকায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে যায়। এর আক্ষেপ স্বরুপ তিনি অনলাইনে লেখালেখি করেন। তার এই কার্যক্রম সেসময় শাসকশ্রেণী, মৌলবাদী ও তাদের দোসর কিছু লোকের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছিল। অতীতে অনেকেই কল্যানকে মহাজোট পন্থী বলে মনে করলেও সেসময় কল্যানের আচার-আচরন কথা-বার্তা জোট-মহাজোটের বিরুদ্ধেই যাওয়া শুরু করলো। অভিযুক্ত কল্যানের এলাকাবাসীরা তখন ফেসবুকে, ব্লগে,বাস্তবে মি. কল্যানের মতামতের বিরুদ্ধে ফুলে-ফেপে ওঠতে থাকেন। সেসময় মি. কল্যানের অসাম্প্রদায়িকতার কারনে তার আপন প্রতিবেশীরাও সাম্প্রদায়িক হয়ে ওঠতে থাকেন। মি. কল্যানের নৈতিক অবস্থানের কারণে তাদের মধ্যে একধরণের সাম্প্রদায়িক সহিংস মনোভাব গড়ে ওঠে।
ক্রমশ তারা কল্যানের পরিবারের প্রতি ঈর্ষাকাতর হয়ে ওঠেন।

৫ তারিখ যখন ক্ষমতাসীন দল সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে নির্বাচন সম্পন্ন করলো। তার আগে নির্বাচন প্রতিহতের নামে বিরোধী জোট বিভিন্ন স্কুল যেগুলাতে ভোট কেন্দ্র পড়েছে সেগুলাতে আগুন দেয়। তাছাড়া গত কয়েকমাস ধরে পেট্রোলবোমা হামলায় অনেক মানুষ নিহত এবং আহত হয়। সেগুলার প্রতিবাদে ব্যক্তিগত অভিমতস্বরুপ মি. কল্যান ক্রমাগত পোষ্ট করে যাচ্ছিলো। ৫তারিখের নির্বাচনের আগে-পরেও আমার মক্কেল কল্যান তার অনুভূতি পোষ্টের মাধ্যমে ব্যক্ত করেন। মি. কল্যানের এই সচেতন অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের জন্য একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী তার বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে,গানপাউডার ছিটিয়ে এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডটি ঘটায়। অভিযুক্তরা সকলেই এমনটা যে ঘটবে তা জানতো এবং যখন কতিপয় লোক অগ্নিসংযোগ করছে সেটা দেখেও ঐ দুষ্কৃতিকারী মৌলবাদীদের বাঁধা দেয় নি কিংবা প্রতিহত হরেনি। আগুন ছড়িয়ে পড়ার প্রায় পনের/বিশ মিনিট পর কেউ একজন ফায়ার সার্ভিসে ফোন করেন। ইতোমধ্যে তার ঘরের প্রায় ৩৫ ভাগ পুড়ে যায় এবং ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট পৌছাতে পৌছাতে তার ঘরটি ভষ্মীভুত হয়ে যায়। শেষে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রনেস আনে।

অভিযুক্তরা সময়মতো অগ্নিসংযোগকারীদের প্রতিহত করলে হয়তো তার আশ্রয়স্থলটুকু রক্ষা করা সম্ভব হতো। তাই আমি বলতে চাই, এই অগ্নিকান্ডের ব্যাপারে অভিযুক্তরা কোনোভাবেই তাদের দায়দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। উপরন্তু তারা পুলিশ ও মিডিয়াকে মিথ্যে বলেছেন, যা এই আদালত ছাড়া কেউ জানে না।
তারা বলেছে, মি. কল্যানের বাসায় আগুন লাগার আগে তারা টের পাননি, আগুন ছড়িয়ে পড়ার পর টের পেয়েছেন। কিন্তু বিবেকের এই মহান আদালতে সত্য গোপন থাকে না। তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই সেদিন মি. কল্যানের বাসায় আগুন প্রতিহত না করে প্রকারান্তরে অগ্নিসংযোগে সহায়তা করেছেন। এর পেছনে তাদের ঈর্ষাবোধ এবং সাম্প্রদায়িক মনোভাব কাজ করেছে। তাই তাদের এই অভিযুক্তের তালিকায় বহাল রাখা হোক।
আদালত- ধন্যবাদ। এবারে বিবাদীপক্ষ আপনার যুক্তি উপস্থাপন করুন।
বিবাদী- ইয়োর অনার।

বাদীপক্ষের কথা থেকেই স্পষ্ট, আগুন লাগার সময়েও অভিযুক্তরা সকলেই জানতেন না যে মি. কল্যান’এর ঘরে অগ্নিসংযোগ হতে যাচ্ছে এবং তাতে তার বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ঘটতে পারে। যদিও আমার মক্কেল স্বীকার করেছেন যে, তিনি তার ঘর পুড়ে যাওয়ায় অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি মনে কিছুটা ক্ষোভ বহন করছিলেন, তবু তাতে এটা প্রমাণিত হয় না যে তিনি অভিযুক্তরা সকলেই মি. কল্যান’এর ঘরে আগুন লাগিয়েছিলেন ।
আমার মক্কেলের মানসিক অবস্থাটুকুও আপনি বিবেচনায় আনবেন মাননীয় আদালত।
ঐ ঘটনার আকস্মিকতায় তার হতবিহ্বল হয়ে পড়ারই কথা। তাছাড়া তিনি তার নিজের নিরাপত্তা নিয়েও শংকিত ছিলেন। তাছাড়া আগুন লাগার পরই অভিযুক্তদের অনেকেই মি. কল্যানের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন, তার পাশে ছুটে গিয়েছেন। তারা তার প্রতি অন্যায়ের নিন্দা জানিয়েছেন, এ ঘটনার সুষ্টু বিচার দাবি করেছেন, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর ঘটনার আকস্মিকতায় তার যদি কোন ভুল হয়েও থাকে তার জন্য তিনি যথেষ্ট অনুতপ্ত। এই বিবেচনায়ও অভিযুক্তের তালিকা পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে। আশা করি বিবেকের আদালত তার প্রতি নমনীয় হবেন।

আদালত- মি. কল্যান, আপনার কিছু বলার আছে?
আমাদের হাতে বেশি সময় নেই, স্বল্প সময়ের মধ্যেই রায় দিতে হবে।
মি. কল্যান - মাননীয় আদালত, ওরা দোষী নয়। ঘটনার কয়েকদিন আগ থেকেই আমি ভীষন মানসিক যন্ত্রনায় ছিলাম। উগ্র-মৌলবাদীরা যেহেতু সংখ্যাগুরু সমাপ্রদায়ের ছিল তাই সংখ্যাগুরুদের প্রতি আমার ক্ষোভের কারনে এদের অভিযুক্তের তালিকায় উঠাতে হয়েছিল, কারন ওরা আমাকে আক্রান্ত হবার হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেনি। ওরা আন্দাজ করতে পেরেছিল আমার সাথে এমনটা হবে। আন্দাজ করতে পেরেও আমার ওপর যারা এই সহিংসতা করেছে তাদের প্রতিহত করে নি, তাই ক্ষুদ্ধ হয়ে আমি ওদের তালিকায় এনেছিলাম। ওরা আমার বন্ধু-বান্ধব,পাড়া-প্রতিবেশী। ওদের সাথে আমার সাক্ষতা সেই ছোটবেলা থেকে। আমার নৈতিক অবস্থান হয়তো তাদের চেতনায় আঘাত করেছিল, আমার বেশ কিছু মতামত তাদের বিপক্ষে গিয়েছিল, হয়তো তাই তারা নীরবতা পালন করেছে।

আমি ধর্মনিরপেক্ষ একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চাই, উগ্র-মৌলবাদীদের ঘৃনা করি, ধর্ম নিয়ে রাজনীতির অবসান চাই। আর এ কারনে এরা আমাকে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে কোনঠাসা করে রাখতো । হেফাজতের ন্যাক্কারজনক দাবির পরও যখন রাষ্ট্র তাকে প্রথমদিকে তোয়াজ করছিল, বিরোধীদল যখন ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের সাথে হাত মিলিয়ে তাদের স্বপক্ষে জোরগলায় কথা বলে যাচ্ছিল তখন আমি আরো হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠি এবং ধীরে ধীরে জন-সম্পৃক্ততা কমিয়ে দেই। এদিকে এরা তখন আমাকে চুপচাপ থাকতে উপদেশ দেয়। আমি জানি, এরা যতই নিন্দা করুক আমি অনৈতিক কিছু দাবী করছিলাম না। সহিংস হবার ক্ষমতা আমার আছে, তবু আমি হই নি, হতে পারি নি। আমার তাতে দুঃখ ছিলো না।
কিন্তু মাননীয় আদালত,
ওদের প্রতি আমার ঈর্ষা,ক্ষোভ বাড়তে থাকলো যখন আমি দেখলাম ওরা সবসময় আমার অন্য কাজগুলোকেও নিন্দা করছে শুধু ঐ বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নিয়ে।
আমার সাথে কথা বলবার সময়েও সে শুধু ঐ বিষয়গুলাই টেনে আনতো। ওদের সাথে আমার দুরত্ব বাড়লো। বাড়ারই কথা। আমিও অবস্থান হতে সরতাম না, উল্টো প্রাসঙ্গিক কারণে ওদের সাথে তর্কযুদ্ধে অবতীর্ন হতাম।

ধর্মান্ধতা আমি সহ্য করতে পারতাম না এটা সত্যি যদিও মুখে তা খুব একটা প্রকাশ করতাম না। ওরা ঠিকই বুঝতো। ওরা নিজেরাও একধরণের অপরাধবোধে ভোগা শুরু করলো।
আমি স্বীকার করছি মাননীয় আদালত,
আমি যৌক্তিক আচরণ করতে পারি নি। আমি তাদেরকে বিষয়গুলা পরিষ্কার করতে গিয়ে সম্পর্ক আরোও বেশি ঘোলাটে করে ফেলছিলাম।
কিন্তু মাননীয় আদালত,
কীযে যন্ত্রণা হতো, আমি বোঝাতে পারবো না। রাতের পর রাত আমি ঘুমোতে পারি নি, পড়তে পারি নি, লিখতে পারি নি।
লজ্জার সাথে স্বীকার করছি, আমি আরো একবার হেরে গিয়েছিলাম নিজের কাছেই।
আমি বা ওরা কেউই সহজ হতে পারছিলাম না পরষ্পরের সাথে। এদিকে ওদের সাথে যোগাযোগ একরকম বন্ধ হয়ে গেল। আমিও একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম।
ওদের কেউ কেউ মাঝে মাঝে যোগাযোগ করতো। আমিই এভয়েড করতাম।
কিন্তু বিশ্বাস করুন মাননীয় আদালত,
আমি জানতাম ওরা ওদের অন্ধত্ব কাটিয়ে, অন্ধকার মোহ কাটিয়ে অসাম্প্রদায়িকতার আলোতে আমার কাছেই ফিরে আসবে, আর আমিও একসময় ঠিকই ঘুরে দাড়িয়ে আমার কাজগুলো করতে পারবো, আবার লিখতে পারবো।
ওদের সাথে দেখা হলে আমি একধরণের অস্বস্তিতে পড়তাম। আমার অনুভুতিগুলো লুকানোর চেষ্টা আপ্রাণ করলেও পুরোটা হয়তো লুকাতে পারতাম না। আর এর মাঝেই তিলে তিলে আমি পরাজিত হতাম-আর ওরা হতো বিজয়ী।
ওদের আমি দোষ দেই না, মাননীয় আদালত। আমি ওদের চিনি।
হ্যাঁ, মাননীয় আদালত,
এরপর থেকে ওদের প্রতি একধরণের জান্তব ক্ষোভ হতো আমার মাঝে মাঝে, বিনা কারনেই। এর পেছনে কোনো যুক্তি আমি পাই না, ওদের সবকিছুকেই মাঝে মাঝে অসহ্য লাগতো। তবে, তাই বলে আমি কখনো ওদের উগ্র-মৌলবাদীর তালিকায় ফেলতে চাই নি মাননীয় আদালত। ওদের সাথে আমার অসংখ্য ভালো মুহূর্ত কেটেছে।
ওদের সাথে আমি কতদিন-কতরাত একসাথে কাটিয়েছি, ওদেরকে আমি একদিকে ভালোও বাসি, অপরদিকে ওদের প্রতি আমার তীব্র ক্ষোভ, হয়তো সেটা ঈর্ষাজাত।

ঘটনার দিন হঠাৎ বাড়ি থেকে ফোন এল, বাড়ির-এরা ভাল নেই তাই বাড়ি যেতে হবে। তড়িঘরি করে ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে ফার্মগেট থেকে সায়দাবাদের বাসে ওঠলাম।
সায়দাবাদ নেমে বাস কাউন্টারে গিয়ে আউশকান্দি’র ১ট টিকিট নিয়ে বাসে উঠলাম।
বাসে ওঠা মাত্র আরেকটা ফোন পেলাম, রিসিভ করতেই শুনলাম
‘আমাদের সবকিছু শেষ বাবা’ আমার মায়ের গলা।
আমি শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলাম্, মোবাইলটা হাতে ধরে রাখার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছিলাম। তার পরক্ষনেই কেন জানি ওদের প্রতি আরোও ক্ষোভ জমে ওঠেছিল।
মনে হলো, সত্যি বলছি আদালত,
এক মুহূর্তেও জন্য মনে হল, শালার সবগুলা উগ্র-মৌলবাদী, বিকৃত মস্তিষ্কের তালেবান। তারপরই ভাবলাম এটা কি ভাবছি।
আবার ভাবলাম, কী দরকার ওদের অভিযোগের বাইরে রাখার ?
ওরাতো আমার বাড়িতে আগুন দেওয়া ঠেকাতে পারেনি!
বরং ওদের নিরবতার কারনে ওদেরকেও অভিযুক্তের তালিকায় ঢুকিয়ে দিই।
ওদের অভিযুক্ত করলাম।
পুলিশের কাছে, মিডিয়াতে ক্ষোভে কথা বলেছি।

কিন্তু মাননীয় আদালত, আপনার কাছে তো লুকোতে পারি নি।
আমার চিন্তায় কয়েকটা প্রশ্ন ঘুরপাক করছিলো, ওরা আমার ঘরে এভাবে আগুন লাগতেতে দিল? পারলো ওরা?
ভেবেছিলাম লিখেই পাল্টে দেব সমাজ, অথচ এই সমাজটাই না পাল্টে দিয়েছে আমায় ...আমাকে অমানুষ করে তুলেছে ধীরে ধীরে..

মাননীয় আদালত, আমি পারলাম না হিংসাপরায়ন হতে, পারলাম প্রতিক্রিয়শীল হতে।


পেছন থেকে কে যেন আমার কাধে হাত রাখলো ।
আমি সম্বিত ফিরে পেলাম। চোখটা কেমন জ্বালা করছে। আদালতের রায়ও পেয়ে গেছি।
রায়: অভিযুক্তের তালিকা বহাল।
রায়ে বলা হচ্ছে, হে নীরব সংখ্যাগুরুরা, আপনারা আপনাদের দ্বায়িত্ব পালন করেন নি। আপনারা গুটিকয়েক মৌলবাদীদের আপনাদের থেকে অবাঞ্চিত করতে পারেন নি। আপনাদের নীরবতায় আজকেও এই স্বাধীন দেশে কল্যানদের ওপর সহিংসতা করতে গুটিকয়েক উগ্র-মৌলবাদীরা সাহস দেখায়।
ধর্মান্ধতা আপনাদের ভেতরের স্বত্ত্বার, আপনাদের ভেতরের সৃজনশীল, মননশীল, পরার্থপর মনুষত্ত্বের মৃত্যু ঘটিয়েছে।
আপনাদের ঈর্ষা, ব্যক্তিগত ক্ষোভ আর স্বার্থপরতা একজন সংখ্যালঘু মানুষের বাস্তুহারা হবার জন্য দায়ী, যে কিনা লড়াই করছিল সমাজ-প্রগতির সংগ্রামে।
আপনারা অভিযুক্ত হয়েছেন অনেক আগেই, এই উগ্র-মৌলবাদীদের গর্ভে বিলীন হওয়া আরো আরো বেশি নষ্ট হয়ে যাবার আগে আপনার শাস্তি কাম্য।

ছাই থেকে ধোঁয়া উড়ছে তখনো।
আমি সোজা হয়ে উঠে দাড়ালাম। মোবাইলে একটা কল আসছে।
এঞ্জেলের কল বোধহয়!!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×