somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

অবরুদ্ধ ভালোবাসা।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই একটা কথা বলি
হু
শোন
হু
কী শুনছো না তো?
হ্যাঁ শুনছি বলো,
আমি কিন্তু তিন বার বলেছি তোমাকে কথাটা। বলোতো কি বলেছি।
হুম কী বলেছো আবার বলো?
এবার মনিকা উঠে আসে তিতাসের কাছে। গভীর নিষ্ঠায় কম্পিউটারের আটকে থাকা চোখসহ মুখ টাকে দু হাতে টেনে নেয় নিজের দিকে।
আহ্ কি করছো মনি লাগছে, বিরক্তি ঝরে তিতাসের কণ্ঠে
অনেক হয়েছে সেই সন্ধ্যায় এসে এখানে বসেছো, চোখ আটকে আছে কম্পিউটারের স্ক্রিনে। ভাতের প্লেটের দিকেও দেখলেনা কি খাচ্ছো। খাবার নিয়ে এখানে এসে বসলে। সারাদিন এই কম্পিউটারেই কাজ করো। বাসায় আবার এই কম্পিউটারের সাথে লেগে আছো এভাবে। তুমি কি দেখেছো আজ আমি কি পরে আছি?
কী আবার সেলোয়ার কামিজ
উঠো এখান থেকে উঠো, তাকাও ভালো করে দেখো আমাকে কি পরেছি সেলোয়ার কামিজ?
ওমা তুমি শাড়ি পরেছো আজ?
শাড়িকে তোমার সেলোয়ার কামিজ মনে হয়েছিল?
অনেক সময় ওড়নাটা বড় হয় শাড়ির মতন মনে হয়
হয়েছে আর দোষ ঢাকার চেষ্টা করো না। বোঝ কতটা খেয়াল তোমার আমার দিকে। যদি জানতে চাই কি দিয়ে ভাত খেলে তাও বলতে পারবে না। খেয়েছো শুধু ক্ষুদা নিবৃত্তির জন্য। আমার এতো আগ্রহ ভালোবাসার মিশেল তোমার সব প্রিয় রান্না কিছুই তোমাকে আকৃষ্ট করল না।
এভাবে বলো না গো আমি তো তোমারই আছি

এবার একটু সরাসরি হও বোঝার চেষ্টা করো। আমি একটা মানুষ যন্ত্র নই। যন্ত্র নিয়ে এতো ব্যাস্ত থাকো মানুষের জন্য একটু ব্যস্ত হও।
তিতাস মনিকার কোমর জড়িয়ে ওকে কাছে টানে। ওর মশৃণ পেটে মুখ রেখে বলে। তুমি কি পরে আছো সে তো বড় নয়। তুমি মনের মধ্যে আছো একদম তোমার নিজস্ব আদলে।
হুম মন ভুলানো কথা খুব ভালো পারো। কিন্তু তুমি কি জানো এই কথা আমি কতটা মিস করি।
অবাক চোখ বড় করে চেয়ে তিতাস জানতে চায় কেমন করে।
এক ঘরে এক বিছানায় শুয়ে আমরা দিনের পর দিন কেমন একলা কথা না বলে কাটিয়ে দিচ্ছি। শুধু ব্যস্ততা, শুধু প্রয়োজনের জন্য ছুটছি। কাজ আর কাজ। আমাদের কি আর কোন অনুভব নেই? আবেশে, মুগ্ধতায় মগ্ন হওয়ার। অকারণ কথার ফুলঝুড়িতে মালা গাঁথার।
অকারণ কথা!! আহ কি বলছো তুমি?
কেন বিয়ের আগের সময়গুলো আমরা কি বিরতিহীন কথা বলে যেতাম না। তোমার কথা ফুরাতো না কখনও। ক্লাস শেষে সন্ধ্যা গড়িয়ে যেত। আমি বাড়ি যাওয়ার জন্য উঠে পরতাম। তুমি বায়না করতে আর দশটি মিনিট বেশী বসে থাকার জন্য। দশ মিনিট পেরিয়ে কত ঘন্টা কত মাস কথার প্লাবনে আমরা ভেসে যেতাম। কত বাধা অতিক্রম করে আমরা কথার পাহাড় ডিঙ্গাতাম। রাতে মুঠো ফোনে জেগে থাকতাম পাশাপাশি। কথার সমুদ্রে কখন ভোর হয়ে যেতো। অপেক্ষায় অস্থির ছিলাম ক্লাস শেষে কখন আবার কথা হবে আমাদের।
তুমি কি ভুলে গেছো সে সব দিন তিতাস?
কি নিরালায় নিঃশব্দ দিন আমার। মাঝে মাঝে এই নৈঃশব্দ আমাকে ভ্যানগগ অনুভূতিতে জ্বলিয়ে মারে তিতাস।
মনিকা কি বলছ এসব তুমি? পুরানো দিন পুরানো সময় ভেবে কেন কষ্ট পাচ্ছো। আমি তোমার কাছে আছি। আমি তো তোমারই।
না তিতাস, যখন তুমি কাছে ছিলে না তখন যেন তুমি আমার অনেক হৃদয়ের পাশে ছিলে। এখন তুমি পাশে থেকেও অনেক দূরের মানুষ। আমি তোমার অতল খুঁজে পাইনা।
তিতাস চেয়ার ছেড়ে উঠে এবার জড়িয়ে নেয় মনিকাকে বুকের মাঝে, ওর ঘাড়ে চুমু খেয়ে ওর চুল এলোমেলো করতে করতে বলে , কেন ভাবছো এমন কথা মনিকা। এই তো আমরা এ তো কাছে একে অপরের উত্তাপে। চলো আজ সারারাত তোমাকে কথার বেলুনে উড়িয়ে দিবো। কথার খই ফুটতে থাকবে রাতের তারার মতন অজস্র আজ এই ঘরে।
মনিকার দেহ বুকে জড়িয়ে চোখের পাতায় চোখ রেখে তিতাসের মন কম্পিউটারের খোলা আর্টিকেলের শেষ অংশ জানার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে।
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×