তুমি-আমি আবারও মুখোমুখি,
দীর্ঘক্ষণ চোখাচোখি,
তবু আমাদের দেখা হয়নি :
হারিয়ে গিয়েছি মাছ হয়ে জলাশয়ের মাঝে।
পরিচিত করিডোর, ক্লাসরুম, লাইব্রেরি,
আমাদের বিচরণে-ব্যবহারে ক্ষয়ে গেছে কত;
পৃষ্ঠা ছিড়ে গেছে পুরানো বই-এর।
আমরা পাশাপাশি মৌচাকের
মৌমাছি হয়ে-- অজ্ঞাতে, অপরিচিতে;
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার ঘরে।
কি আশ্চর্য ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে
তাকিয়েছি মলচত্বর, ফুলার রোড,
চারুকলার এই রাঁধাচূড়া, শিমুল,
তেতুল, শিরিষ, শিশু, আর সেগুনের
দিকে; পৃথক শ্রবণেন্দ্রিয় দিয়ে শুনেছি
পাখিদের কলতান আমতলায় বা
কদম-ছাতিম-উলটকম্বলের সারিতে;
মধুর ক্যান্টিনে বা হাকিমচত্বরে একই
চা’য়ে কি ভিন্ন স্বাদ পেয়েছি আমরা;
একই চিলের ঝাঁকের ঘূর্ণায়মান উড়ো-উড়ি,
একই বাদুড়ের ডানার ঝাপ্টা সন্ধ্যায়
সবুজ গাছের হাইওয়ের উপর
বিয়োগান্তক প্রতিক্রিয়া আনে আমাদের মাঝে।
আলাদা-আলাদা ঘাসের উপর বসেছি কার্জন হলে,
তার জোড়া-লাল হোস্টেলের মাঝে স্থির পানির
পুকুরে মেঘেদের কি ব্যতিক্রম প্রতিবিম্ব
তোমার-আমার মনে, সলিমুল্লাহ হলের
সাদা গম্বুজে দেখিছি রোদের
কেমন উল্টো আপতন।
তবে এইখানেই শেষ হোক সব—
টিএসসি বা ডা. মিলনের স্মৃতিসৌধে
আনি কবরের নীরবতা, হাই কোর্ট
মাজারে আনি নতুন দেহ কোনো।
এইখানেই সাঙ্গ হোক জীবনের আলোচনা।
কত দূরে যেতে চাও?
ক-ত-খা-নি দূরে, বন্ধু বলো?
আমেরিকা না ওসেনিয়া?
আমি নিজে উড়োজাহাজ চালিয়ে
দিয়ে আসবো তোমায়,
চিন্তা করো না একটুও।
০৮/০৯/১২