বাংলাদেশের সঙ্গে কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের কোনো ভাবনা তাদের নেই।
Published : 19 Jan 2014, 03:04 PM
তবে তাদের পক্ষ থেকে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সংলাপের আহ্বান চালিয়ে যাওয়া হবে বলে রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবাসিক প্রতিনিধি উইলিয়াম হানা জানিয়েছেন।
সকালে নিজ দপ্তরে কয়েকজন সাংবাদিককে হানা বলেন, “আগের মতোই উন্নয়ন সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এই মুহূর্তে আমরা কোনো পরিবর্তনের কথা ভাবছি না।
“আমরা সব সময় নির্বাচন নিয়ে বলেছি যে, তা স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে।”
এর সঙ্গে বাণিজ্য, জিএসপি ও উন্নয়ন সহযোগিতার কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি।
গত ৫ জানুয়ারির বিরোধী দলহীন নির্বাচন ‘স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য’ হয়নি বলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিক্রিয়া জানানোর পর তারা বাংলাদেশি পণ্য থেকে জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
সম্প্রতি এ বিষয়ে কয়েকটি সংবাদপত্রে প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়।
এর মধ্যেই বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক অব্যাহত রাখার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ প্রতিনিধির বক্তব্য এলো।
বাংলাদেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন। গত অর্থবছরে মোট দুই হাজার ৭০০ কোটি ডলার রপ্তানি হয়, এর অর্ধেকই যায় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের প্রতিহতের ডাকে সহিংসতায় প্রাণহানির মধ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টোন বাংলাদেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সহিংসতা থেকে বিরত থেকে ‘ফলপ্রসু’ সংলাপে বসতে সব দলের প্রতি আহ্বান জানান।
‘দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং একটি সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ’ বের করতে সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এর মধ্যে গত ১৬ জানুয়ারি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস হয়, যাতে বাংলাদেশে বিবদমান দুই পক্ষকে সমঝোতায় এসে সঙ্কট সমাধানের আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া বিরোধী দল দমনের পথ থেকে সরকারকে সরে আসতে বলার পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলাম থেকে দূরে থাকতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানানো হয় ওই প্রস্তাবে।
এসবের কোনো কিছুই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত নয় বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম হানা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক রয়েছে এবং গত কয়েক বছরে এ সম্পর্কের মূলে ‘অনুদানের’ জায়গায় বাণিজ্য স্থান করে নিয়েছে।
নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমাদের সমালোচনার মধ্যেই ভারত, রাশিয়া ও চীনসহ অনেকগুলো দেশ নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিনন্দন বার্তা পাঠানো হয়নি।
এ বিষয়ে হানা বলেন, “মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত ছিলাম। সেখানে সবাইকে আমি স্বাগত জানিয়েছিলাম। আমরা কাজ চালিয়ে যাবো।”
পাশাপাশি রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আলোচনায় বসতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান তিনি।
এক্ষেত্রে অগ্রগতি আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন উইলিয়াম হানা।