দ্বাদশ শ্রেণিতে থাকতে একদা খুবই গম্ভীর গলায় আমাকে এক মেয়ে প্রশ্ন করলঃ
-অ্যাই, তুমি রোলার কোস্টারে কয়বার উঠছ?
জী না এক বারও উঠি নাই।
- সান্তা মারিয়মে?
জী না।
-জায়ান্ট ফ্লুমে অথবা নাগরদোলাটায়?
মাফ চাই। কিন্তু আমি ফ্যান্টাসি কিংডমে যতবার গেছি শুধুমাত্র ওয়াটার কিংডমে গেছি। পানির মধ্যে গা (ভুঁড়ি) এলাইয়া বসে থাকতে। এইসব রাইডে চড়তে আমার ভয় লাগে। হার্ট এটাক করে শহীদ হইয়া যাব বলে মনে হয়। তাই চড়ি নাই।
-নাহ! তোমার সাথে তো কথা বলে জমল না! আমার তো এইসব রাইড জোশ লাগে। রোলার কোস্টার যদি দুইটা লাইন বাদ দিয়া একটা লাইন দিয়া চলত আরও ভাল লাগত। মেয়েদের মত ভয় দিয়া তোমারে আল্লাহ যে ক্যান বানাইছে আর ছেলেদের মত সাহস দিয়া আমারে যে আল্লাহ ক্যান বানাইছে বুঝলাম না। বিষয়টা হইল না তো!!
আমি মনে মনে কইলাম জনাবা, ভয়ের আবার ছেলে টাইপ/মেয়ে টাইপ আছে? ভয় তো ভয় ই এত্ত কারন খুঁজেন ক্যান?
আমার আসলে এইরকম বিভাজন পছন্দ না! এখন তো বাসে উঠলেই দেখা যায়, 'মহিলা/শিশু/প্রতিবন্ধি সংরক্ষিত ৯টি সিট।' বিষয়টা আমার ভাল লাগে না। বাসের সব সিট সবার জন্যে। কিন্তু একজন মহিলা আসলে তাদেরকে সম্মান করে যদি নিজের সিট টা না ছেড়ে দিতে পারি, তবে আমরা এখনও অশিক্ষিত। সবকিছু তো আর বাসা থেকে শিখে আসা সম্ভব না! কিছু ব্যাপার যদি আমাদের মাথায় কাজ না করে তাহলে হাজার হাজার নিয়ম করেও কোন লাভ নাই। বিভাজনটা আসলে জেন্ডার, আচরণ, বর্ণ, গোত্র দিয়ে হয় না। বিভাজনটা আসলে হয় নিজের সুবিধা আদায়ের জন্য। বাসে বাকি সিটে আমি বসব তাই ৯টা সিট মহিলাদের! এর বেশি মহিলা উঠলে মুড়ি খাক গিয়া, কার কি? একই রকম এক হিন্দুধর্মালম্বির বাড়ি পুড়ল! পুড়ুক গিয়া, ওরা তো সঙ্খ্যালঘু! আসলে নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্যই এত্ত নাম/পরিচয়। নাহলে সঙ্খ্যালঘু বলে নিজেদের থেকে কাউকে আলাদা করে দেয়ার কোন মানে নাই। আল্লাহর দুনিয়ায় সবাই সমান। একই রকমভাবে সবাইকে বানাইছেন, শুধু বুঝব্যাবস্থা আলাদা দিছেন।