দশম জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন গত সংসদের হুইপ পটুয়াখালীর সাংসদ আ স ম ফিরোজ।
Published : 24 Jan 2014, 11:17 AM
তার সঙ্গে হুইপ হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন শেরপুরের সাংসদ আতিউর রহমান আতিক, দিনাজপুরের ইকবালুর রহিম, মৌলভীবাজারের মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, চুয়াডাঙ্গার সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন) ও নওগাঁর শহীদুজ্জামান সরকার।
সংসদ সচিবালয়ের জনসংযোগ শাখার উপ পরিচালক নাজমুল হুদা জানান, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে শুক্রবার প্রধান হুইপ ও হুইপ নিয়োগের এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
নবম সংসদে যারা হুইপ ছিলেন, তাদের মধ্যে একমাত্র ফিরোজই এই দায়িত্বে ফিরেছেন। বাকি হুইপরা সবাই গত সংসদে সাংসদ থাকলেও হুইপের দায়িত্বে এসেছেন এবারই প্রথম।
মোট পাঁচবার পটুয়াখালী-২ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হওয়া আ স ম ফিরোজ রাজনীতিতে আছেন কলেজ জীবন থেকেই। তিনি প্রথমবার সংসদে আসেন ১৯৭৯ সালে, জিয়াউর রহমানের বিএনপি সরকার তখন ক্ষমতায়।
১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বিজয়ী হলেও পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন ফিরোজ। পঞ্চম, সপ্তম ও নবম সংসদেও তিনি সদস্য নির্বাচিত হন।
আ স ম ফিরোজ নবম সংসদে হুইপের দায়িত্বে থাকার পাশাপাশি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিসহ দুটি কমিটিতে সদস্য ছিলেন।
১৯৫৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেয়া ফিরোজ ইতিহাসে মাস্টার্স করেন বরিশাল বিএম কলেজ থেকে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা এই রাজনীতিক দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা।
১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, আতিক তখন নবম শ্রেণির ছাত্র। ওই বয়সেই ১১ নম্বর সেক্টরের অধীনে শেরপুর, তওয়াকুচা, নক্সী ও হালুয়াঘাটে সম্মুখ সমরে অংশ নেন তিনি।
১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে শেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন আতিক। ১৯৯০ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে তিনি শেরপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
৫৭ বছর বয়সী এই আওয়ামী লীগ নেতা প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালে, সপ্তম সংসদে। অষ্টম ও নবম সংসদেও তিনি সাংসদ ছিলেন।
আতিউর রহমান আতিক গত সংসদে সংসদ কমিটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এবং খাদ্য ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
আতিকের স্ত্রী ইসরাত জাহান শান্তা একজন স্কুল শিক্ষক। তাদের দুটি মেয়ে।
১৯৯২ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা ইকবালুর রহিম দিনাজপুর-৩ আসন থেকে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন নবম সংসদে।
ওই সংসদে তিনি বেসরকারি সদস্যদের বিল এবং বেসরকারি সদস্যদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৬৫ সালের ১৬ আগস্ট জন্ম নেয়া এই আওয়ামী লীগ নেতার বাবা এম আবদুর রহিমও ছিলেন একজন সাংসদ এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রিধারী ইকবাল পেশায় ব্যবসায়ী। তার দুটি মেয়ে ও একটি ছেলে।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহাব উদ্দিন প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালে, সপ্তম সংসদে।
নবম সংসদে মৌলভী বাজার-১ আসনের এই সাংসদ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
৬০ বছর বয়সী এই আওয়ামী লীগ নেতার পেশা ব্যবসা। তার দুটি ছেলে, দুটি মেয়ে।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাংসদ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন) জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৬ সালের ১৫ মার্চ। নবম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো সাংসদে আসেন তিনি।
নবম সংসদে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
জাতীয় সংসদ থেকে প্রকাশিত সাংসদদের জীবনবৃত্তান্ত অনুযায়ী, সোলায়মান জোয়ার্দ্দার লেখাপড়া করেছেন এসএসসি পর্যন্ত। তার পেশা ব্যবসা।
নওগাঁ-২ আসনের সাংসদ শহীদুজ্জামান সরকারের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরি দিয়ে। ১৯৮৬ সালে সহকারী জজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি আইন পেশায় নাম লেখান এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
শহীদুজ্জামান প্রথমবারের মতো সংসদে আসেন ১৯৯১ সালে, পঞ্চম সংসদে। ওই সময় তিনি ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে নবম সংসদে শ্রম ও কর্মসংস্থান মনস্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্যের দায়িত্বও পালন করেন শহীদুজ্জামান।
৫৯ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ দুই পুত্র সন্তানের জনক।