দশম সংসদ নির্বাচনে এসে গ্রহণযোগ্য ভোটের ধারায় ছেদ ঘটেছে বলে মনে করেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা।
Published : 25 Jan 2014, 04:19 PM
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সিইসির দায়িত্ব পালনকারী শামসুল হুদা শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম আয়োজিত এক আলোচন সভায় এই মত প্রকাশ করেন।
নির্বাচনের পর বাংলাদেশ কোন পথে যাচ্ছে- তার বিশ্লেষণে এই আয়োজনে রাজনীতিক, বিশ্লেষক, নারীনেত্রীদের সঙ্গে সাবেক সিইসিও আলোচনায় অংশ নেন।
শামসুল হুদা নিজের দায়িত্ব পালনের সময়ে ইসিতে ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, “দশম সংসদ নির্বাচনে ব্যালট পেপারে স্ট্যাফিং হয়েছে, সেই সঙ্গে নজিরবিহীন যেটা ঘটেছে সেটা হলো একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। এটি এর আগে কখনো ঘটেনি।
“ভালো নির্বাচনের পথে এটা ব্যত্যয়। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার ওপর হামলা মানে রাষ্ট্রের ওপর হামলা। এটা খারাপ নজির হয়ে থাকল।”
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের ভোট ঠেকানোর হুমকির মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি সংঘাত-সহিংসতার মধ্যে সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়।
১৯৯৬ সালের পর প্রতিটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হলেও সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের পর এবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাবস্থায়ই নির্বাচন হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “এ নির্বাচন রাজনীতিকভাবে সিদ্ধ হয়নি। কোনোভাবেই তা জনপ্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন নয়।”
অনুষ্ঠানে অধিকাংশ আলোচক গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের পদ্ধতি বের করতে রাজনৈতিক সমঝোতার আহ্বান জানান। শামসুল হুদাও ভোট সফলে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার ওপর জোর দেন।
যে ধরনের সরকার থাকুক না কেন, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন সাবেক সিইসি। তবে ইসি শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে কমিশনারদের সংখ্যা বৃদ্ধি সমস্যা আরো বাড়িয়ে তোলে বলে তার অভিমত।
“সুন্দর নির্বাচনের জন্য ইসিকে শক্তিশালী করলেই হবে না, রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত হতে হবে। রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে শক্তিশালী ইসি দিয়েও কাজ হবে না।”
এই আলোচনায় রাজনীতিকদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমও ছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলামও আলোচনা করেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন নারীনেত্রী আয়েশা খানম, খুশি কবির, সাবেক কূটনীতিক নাসিম ফেরদৌস, সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীর ও মোজাম্মেল বাবু।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানটি ওয়েবসাইটে সরাসরি দেখানো হয়। সরাসরি সম্প্রচার করা হয় একাত্তর টেলিভিশনেও।