somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মিজানুর রহমান মিলন
আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

এক নজরে ঘটনাবহুল বিশ্ব-২০১২

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১২। জীবন থেকে হারিয়ে গেল আরো পুরো একটি বছর। এখন শুধু স্মৃতির পাতায়। এভাবে পাই পাই করে এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর বয়স সঙ্গে আমাদেরও আর এভাবে হারিয়ে যাব আমরাও একদিন। রেখে যাব কিছু স্মৃতি। হয়তো আমাদের নিয়ে কেউ স্মৃতি চারন করবে সেটা ভাল হোক আর মন্দ হোক।কেউ কেউ হয়তো থাকবেন ইতিহাসের পাতায়। সদ্য বিগত ২০১২ সালটিও বিশ্ব ইতিহাসের একটি ঘটনাবহুল বছর হিসাবেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আসুন, আবার জেনে নেই ২০১২ সালের বিশ্বপরিস্থিতি কেমন ছিল । আমাদের জানা কিছু ঘটনা নিয়ে আয়োজন ”ঘটনাবহুল বিশ্ব ২০১২।”

বাংলাদেশ ২০১২ সালের বিশ্ব ঘটনাবহুল থেকে বিন্দুমাত্র পিছিয়ে নেই । বাংলাদেশ-ভারত সাইবার যুদ্ধ, মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধে সমুদ্রসীমা মামলার রায়, সাংবাদিক দম্পতি হত্যা, ইলিয়াস আলী গুম, মন্ত্রী সুরন্জিতের টাকার গাড়ি, পদ্মাসেতুর দুনীর্তি, আবুল উপাখ্যান, জনপ্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের মুত্যু, হল মার্ক কেলেঙ্কারী, শেয়ার মার্কেট, আশুলিয়ায় গার্মেন্স সেক্টরে আগুন, সর্বোপরি বিশ্বজিতের অনাকাঙ্খীত মৃত্যু বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আর এই ঘটনাগুলো নিয়ে বাংলাদেশ পত্রিকা, ফেসবুক, ব্লগে প্রচুর আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছে ।

আমি শুধু এখানে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ২০১২ এর কিছু গুরুত্বপুর্ন ঘটনা যেগুলো সবচেয়ে বেশি সমালোচিত ও আলোচিত হয়েছে তার কিছু বর্ণনা অতি সংক্ষেপে তুলে ধরতেছি।


শুরুটাই ছিল ইরান নিয়ে : ২০১১ তে আরব বসন্তের শুরু এবং কয়েকজন স্বৈরশাসকের পতনে সবাই আশা করেছিল হয়তো ২০১২ সালটি ভালই ভালই কেটে যাবে কিন্তু ২০১২’র শুরুতেই বিশ্বপরিস্থিতি উত্তপ্ত হয় ইরানের পরমানু ইস্যু নিয়ে।ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ভূক্ত দেশগুলি ২০১২’র জানিুয়ারীর ২৩ তারিখে ইরানের উপর তেল নিষেধাজ্ঞা আরোপে একমত হয় এবং তা কার্যকরী হয় ১ জুলাই এবং পরবর্তীতে ইরানের ব্যাংক সেক্টরেও নিষেধাজ্ঞা আরো পরিস্থিতিকে জটিল করেছে মাত্র। আর ইসরায়েলের হুমকি ধামকিতে সারা বছর জুড়ে জল্পনা কল্পনা ছিল যে কোন মুহুর্তে ইসরায়েল ইরান আক্রমন করতে পারে কিন্তু তা বাস্তবে ঘটেনি।অন্যদিকে থেমে থেমে ইরানের নতুন নতুন সমরাস্ত্রের পরীক্ষা ও সামরিক মহড়া আতংকগ্রস্থ করেছে ইহুদবাদী ইসরায়েলকে ।

তুরস্ক: জানুয়ারীর ১৩ তারিখেই গ্রেফতার হয়েছেন তুরস্কের সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল ইলকার বাসবাগ আর এর পরবর্তীতে আরো ৫০ জন জেনারেল ও অ্যডমিরালকে বরখাস্ত করা ছিল তুরস্কের ইতিহাসে গুরুত্বপুর্ন ঘটনা। গুরুত্বপুর্ন এই কারনে যে তুরস্কে সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষমতা। দেশীয় ও আন্তজার্তিক বিভিন্ন ইস্যুতে তুরস্কের সেনাবাহিনীর মতামতই চুড়ান্ত আর সরকারের সাথে কোন ইস্যুতে মতবিরোধ হলে তুরস্কে মিলিটারী ক্যু যেন ছিল একটা নিত্তনৈমত্তিক ব্যাপার কিন্তু এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা ধীরে ধীরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছেই ফিরে যাচ্ছে তা প্রকাশ হয়ে পড়ে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছিল ২০১২ সালের জন্য একটি গুরুত্বপুর্ন ঘটনা। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পুতিন আবার ক্রেমলিনে ফিরে আসেন যদিও যুক্তরাস্ট্রের নেতুত্বাধীন পশ্চিমাবিশ্ব পুতিনের ফিরে আসাতে খুশি হতে পারেনি কারন পুতিন নিজেকে সোভিয়েতের উত্তরাধীকারীই মনে করে আর এর মুল কারন হল ঘুমন্ত রাশিয়াকে আবার জাগ্রত করেছেন পুতিন।পুতিন পরপর দু্ই মেয়োদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। পরপর দুই মেয়োদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করলে রাশিয়ার সংবিধান অনুসারে কেউ তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে পারেন না তাই পুতিন ২০০৮ সালে তার অনুগত মেদভেদকে প্রেসিডেন্ট করে নিজে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন ৪ বছর। ২০১২’র ৪ মার্চ নির্বাচনে ৬৩ শতাংশ ভোট পেয়ে পুতিন নির্বাচিত হলেন পুর্নবার কিন্তু বিরোধীপক্ষ ভোট কাচুপির অভিযোগ এনেছিলেন পুতিনের বিরুদ্ধে।

গৃহযুদ্ধে সিরিয়া: ২১ মাস ধরে চলা গৃহযুদ্ধে সিরিয়া যেন এক ফুটন্ত কড়াই । সহিংসতায় এ পর্যন্ত সিরিয়ায় প্রায় ৪৪ হাজারের মত মানুষ নিহত হয়েছে সরকার ও সরকার বিরোধী স্বশস্ত্র মিলিশিয়াদের হাতে। সিরিয়া হয়েছে পরাশক্তি ও আঞ্চলিক পরাশক্তিদের এক যুদ্ধক্ষেত্র।একদিকে যুক্তরাস্ট্র, ইউ, তুরস্ক, সৌদি, কাতার মিলিশিয়াদের পক্ষে ও অন্যদিকে রাশিয়া, ইরান ও চীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ যার পরিণতিতে অঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ মানুষ।সিরিয়ার শেষ পরিণতি কোথায় এখনো কেউ জানেন না তবে আশংকা করা হচ্ছে রক্তপাত শীঘ্রই বন্ধ না হলে সিরিয়া হয়তো হবে নতুন একটা সোমালিয়া।

অসম প্রেম কাহিনী :বিলওয়াল-হিনার প্রেম গুজবে মেতেছিল সারাবিশ্ব। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার ও পিপিপির প্রেসিডেন্ট বিলাওয়াল ভুট্টোর সঙ্গে মন দেয়া-নেওয়া চলছে। প্রেসিডেন্ট ভবনে হিনা ও বিলাওয়ালকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখতে পান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। এর পরই প্রেমের ব্যাপারটি জানাজানি হয়ে যায়। বিলাওয়ালের জন্মদিনে হিনা একটি বার্তাসহ কার্ড পাঠান। কার্ডে হিনা নিজ হাতে লেখেন, ‘আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর এবং শিগগিরই আমরা এক হতে যাচ্ছি।’


মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রোহিঙ্গাদের দুর্দশা।

রোহিঙ্গা: বছরের মাঝাখানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মুসলিম রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইনদের মধ্যে গোষ্ঠীগত সহিংসতা ছিল একটি উল্লেখযোগ্য আলোচিত ও সমালোচিত ঘটনা। মিয়ানমার সরকারের প্রচ্ছন্ন সমর্থনে রাখাইন বৌদ্ধরা হত্যা করে শত শত রোহিঙ্গা মুসলিমদের ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে বাস্তুচ্যুত করে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমদের আর এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা স্থায়ী ছিল কয়েকমাস ধরে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: এ বছরের ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বহুল আলোচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বান। নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী পেসিডেন্ট বারাক ওবামা পপুলার ভোট ও ইলেক্টরাল ভোটে বিশাল ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন।বারাক ওবামার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রিপাবলিক্যানের মিট রমনী।বারাক ওবামা পুননির্বাচিত হওয়াতে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছেন সারা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ কারন মানুষ আর যাইহোক নতুন কোন সংঘাত বা যুদ্ধ চায়না।

গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা: ১৪ নভেম্বর হামাস নেতা আহমদ জাবারিকে হত্যা করে ইসরাইল। জাবারি তখন কোনো সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করছিলেন না। তিনি তখন সশস্ত্র অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এমনও নয়। তিনি কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এর জবাবে হামাস রকেট হামলা চালিয়েছে। ব্যাস একটা ওজর সৃষ্টি করে নেয়া গেল। শুরু হয় ঝাঁকে ঝাঁকে বিমানের বোমা নিক্ষেপ অভিযান। নৌবাহিনীও শুরু করে গোলাবর্ষণ। ৮ দিন ব্যাপী ইসরায়েলী আগ্রাসনে প্রায় ১৬০+ গাজাবাসী নারী, শিশু ও নিরিহ মানুষ নিহত হয়েছে আর আহত হয়েছে সহস্রাধিক।এর প্রতিক্রিয়ায় সারা বিশ্বে ইসরায়েল বিরোধী তীব্র জনমত গড়ে উঠেছিল । অবশেষে মিসরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইসরায়েল হামাস যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হয়।

ফিলিস্তিন রাস্ট্রের জন্ম সনদ: ফিলিস্তিন এতদিন জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকের মর্যাদা ভোগ করেছিল কিন্তু ফিলিস্তিনিদের একটি রাস্ট্র পাওয়ার স্বপ্ন সেই বহুদিনের ।কিন্তু ফিলিস্তিনিদের এই ন্যায্য অধিকারের বরাবরই বিরোধী ইসরায়েল ও যুক্তরাস্ট্র।যুক্তরাস্ট্রের ভেটো ক্ষমতার কারনেই বর্তমান ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘ সাধারন পরিষদে ফিলিস্তিনকে অসদস্য পর্যবেক্ষক রাস্ট্রের মর্যাদার জন্য আবেদন করেন। মাহমুদ আব্বাস সাধারন পরিষদে তার ভাষনে বলেন ‘ফিলিস্তিন রাস্ট্রের জন্ম সনদ প্রদান করুন’ আর তার আবেদনে সাড়া দেয় বিশ্বের ১৩৮ টি দেশ আর ৯ টি দেশ বিরোধীতা করে এর মধ্যে যুক্তরাস্ট্র ও কানাডা অন্যতম।৩০ নভেম্বর ২০১২ জাতিসংঘের সাধারন পরিষদ থেকে 'State of Palestine' নামফলক পায় ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।


চীনের নতুন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

চীনের নতুন নেতা: ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়শিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, ব্রুনাইসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে চীনের রয়েছে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ। যুক্তরাস্ট্র তার মিত্রদের রক্ষার নামে এশিয়ায় বাড়িয়ে যাচ্ছে তার সামরিক উপস্থিতি।আর অন্যদিকে উদীয়মান একক পরাশক্তি চীনও বসে নেই । চীনের বিমানবাহী রণতরী নির্মানই তার প্রমান।
নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল চীনে ক্ষমতাসীন কম্যুনিস্ট পার্টির সম্মেলন আর এ সম্মেলনের মধ্যদিয়ে পার্টির সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শি জিনপিং ও উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন লে কেকিয়াং। আর এর মধ্যদিয়ে আগামী এক দশকের জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন শি জিনপিং আর প্রধানমন্ত্রী হলেন লে কেকিয়াং। নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব নিবেন ২০১৩ এর মার্চে।চীনের নেতৃত্বে এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে চীনের পররাষ্ট্রনীতিতে কী পরিবর্তন আসে তা দেখার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন বিশ্লেষকরা।তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন নেতৃত্বে এই পরিবর্তন ঢাকার সঙ্গে বেইজিং এর সম্পর্কে তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না।

মিয়ানমারে গণতন্ত্র:
প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকার ২০১১ সালের মার্চে দায়িত্ব নেওয়ার পর যে সব সংস্কার কর্মসুচি ঘোষনা করেছিলেন তার উল্লেখযোগ্য অংশ বাস্তবে রুপ নেয় ২০১২ সালেই । এই বছরে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী সুচি কারাবাসের ইতি ঘটাবার পর আমেরিকা, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশ সফর ছিল উল্লেখযোগ্য ঘটনা।


মালালা ইউসুফজাই

মালালা: পাকিস্থানের তালেবান নিয়ন্ত্রিত সোয়াত উপত্যাকার মালালা ইউসুফজাই এখন একটি পরিচিত নাম। এই প্রতিবাদী কিশোরী তালেবানদের গোড়ামী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে কলম ধরায় তালেবানরা এই বছরের অক্টোবরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সোয়াতের মিংগোরা এলাকায় তার স্কুল ভ্যানের ওপর এ হামলা চালালে মালালাসহ আরো দুই ছাত্রী আহত হয়। মালালার মাথায় গুলি লাগে। অন্য দুই ছাত্রী কাঁধ ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে মালালাকে উন্নত চিতিৎসার জন্য ফ্রান্সে নিয়ে যাওয়া হয় । সারা পৃথিবীবাসী তালেবানদের ধিক্কার ও ঘৃণা জানাতে থাকে আর মালালা হয়ে উঠে একজন নারী শিক্ষার প্রতীক।

মিশরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও গণভোট : মিশরের দুই পর্বের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, যেটি ২০১২ সালের মে ও জুনে অনুষ্ঠিত হয়, সে নির্বাচনে মুসরি (মুসলিম ব্রাদারহুড) ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (এফজেপি)মনোনীত প্রার্থী ছিলেন এবং উভয় পর্বেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।মিশরের প্রেসিডেন্ট মুরসি তার ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার জন্য ২২ নভেম্বর একটা ডিক্রি জারী করে গোটা মিশরকে করেছিলেন উত্তপ্ত। অবশেষে ডিক্রি বাতিল করার পরেও মিশরের সংবিধান নিয়ে গণভোট ছিল সারা বিশ্বে একটি আলোচিত বিষয়। এ গণভোট নিয়ে মিশরবাসীর মত সারা বিশ্বও দুইভাগ হয়ে পড়েছিল। অবশেষে জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মিশরের ব্রাদারহুড নেতৃত্বাধীন প্রেসিডেন্ট মুরসি কর্তৃক খসড়া সংবিধান মিশরের জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদিত হয়েছে।


দিল্লিতে গণধর্ষনের শিকার দামিনী। ইনসেটে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দিল্লিতে মেডিকেল ছাত্রী গণধর্ষনের শিকার:
ডিসেম্বরের সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ছিল ভারতের দিল্লিতে মেডিকেল ছাত্রী দামিনীকে চলন্তবাসে গণধর্ষন।দামিনীর এই একটি ঘটনা নাড়া দিয়েছে সারা ভারতবাসীকে, নাড়া দিয়েছে সারা বিশ্বকে। দামিনী মরেও যেন এখন আর মরেনি সে বেঁচে আছে এখন সবার মাঝে।


ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো চ্যাভেজ।

হুগো চ্যাভেজ ক্যান্সারে আক্রান্ত: বুশকে জাতিসংঘে প্রকাশ্যে ”শয়তান” বলা নেতা, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সোচ্চার কন্ঠ, আমেরিকার শত্রু আহমাদিনেজাদ ও ফিডেল ক্যাস্ট্রোর মিত্র ও ল্যাটিন আমেরিকার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের নেতা হুগো চ্যাভেজ যুক্তরাস্ট্রের মত পরাশক্তির কাছে নতি স্বীকার না করলেও তিনি বাস্তবে হয়তো ক্যানসারের কাছে অনেকটাই হার মেনেছেন। ডিসেম্বরের ১১ তারিখে কিউবার রাজধানী হাভানায় চ্যাভেজের চতুর্থবারের মত অপারেশন করা হয়। ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো জানিয়েছেন চ্যাভেজ এক জটিল সময় অতিক্রান্ত করেছেন। চ্যাভেজ ক্যান্সার অপারেশন করার পরেও নির্বাচনে অংশগ্রহন করে বিপুল ভোটে পুনর্বিচিত হয়েছেন। অপারেশনের জন্য চতুর্থবারেরমত কিউবা যাওয়ার আগে তিনি তার অনুপস্থিতিতে তার অনুগত ভাইস প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে নতুন নেতা হিসাবে বেছে নিতে ভেনেজুয়েলাবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন। সময় বলে দিবে এরপর কি হতে যাচ্ছে । তবে চ্যাভেজ চলে গেলে বিশ্ব হারাবে যেমন একজন সমাজতান্ত্রিক নেতাকে তেমনি মার্কিন বিরোধী দেশগুলি হারাবে তাদের একজন মিত্রকে।চ্যাভেজের গুরুত্বটা এখানেই।

বিশ্বের আরোকিছু আলোচিত ঘটনা আছে। যেমন রাখাইনের মত আসামে ১৯ জুলাই ২০১২ শুরু হয়েছিল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বোড়ো উপজাতি ও বাঙ্গালী মুসলিমদের মধ্যে আর এ দাঙ্গায় সরকারী হিসাবে প্রায় ১০০ জনেরমত নিহত হয়।পশ্চিম আফ্রিকার দারিদ্রপিড়ীত দেশ মালিতে ঘটে গেল সেনা অভ্যুত্থান ২২ মার্চ ২০১২। পশ্চিম আফ্রিকার গিনি-বিসাউয়েও সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে ১২ এপ্রিল ২০১২।আরব বসন্ত ইয়েমেনে ছড়িয়ে পড়ায় স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহ ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর করা চুক্তি অনুসারে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন ২২ জানুয়ারী ২০১২। ১৯ জুলাই ২০১২ ভারতের প্রথম বাঙ্গালি ও ১৩ তম রাস্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রণব মুখার্জি।ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ ২০১২ সালের ১৫ মে ফ্রান্সের ২৪ তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। মালদ্বীপের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ বিচারপতি গ্রেফতারের করার কারনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ২০১২ সালের ৭ মে পদত্যাগ করেন। এছাড়াও মিয়ানমারে আদিবাসী বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ও সরকারের মধ্যে ১২ জানুয়ারী ২০১২ যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর, গণতন্ত্রের পথে লিবিয়ার যাত্রা, কিউবায় পরিবর্তন ও ফিলিপাইনে বিদ্রোহী মুসলিম গোষ্ঠী মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্ট ও সরকারের মধ্যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর উল্লেখযোগ্য।

উৎসর্গ: ব্লগার যুবায়ের আহমেদ ভাই। যার অনুপ্রেরণায় আজকের এ ব্লগটি লিখেছি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:১১
২৩টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×