somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিরপুরের ফিরোজ মিয়াঁর ভুল গালি

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকার বেশীরভাগ এলাকার মত মিরপুরের ভেতরেও গড়ে উঠছে অনেক সুউচ্চ এপার্টমেন্ট-দালান। পুরনো অনুচ্চ যে বাড়িগুলো এখনো বিষণ্ণ দাঁড়িয়ে, সেগুলোর মালিকরাও খুব সম্ভব রিয়েল-স্টেট কোম্পানিগুলোর সাথে দরদামে ব্যস্ত। তারা একটি বাড়ির মালিক থেকে একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক বনে যেতে উদগ্রীব না হলেও, আগ্রহী। সেই নির্মাণাধীন দালানগুলোর কারণে এখানকার রাস্তাঘাটের অবস্থা করুণ! একই কারণে শুষ্ক সময়ে এখানকার বাতাস অত্যন্ত ধুলাময়। নির্মিত নতুন-পুরানো দালানগুলোও তাই দেখতে একই রকম; প্রায়-ধুসর। এলাকাটিতে গাছপালার জন্য এক চিলতে মাটিও স্বেচ্ছায় রাখেনি দালানকোঠা নির্মাণকারীরা। তবু সামান্য যা কিছু গাছপালা দাঁড়িয়ে আছে ইতস্তত, এদিক-সেদিক, অগোছালোভাবে, তারা অযাচিত-অনাহূত; ওখানে গজিয়ে উঠার কথা ছিল না ওদের। সরল বৃক্ষ, প্রাণের স্ফূর্তি নিয়ে সীমিত সম্ভাবনা থেকেও মাটি ফুড়ে বের হয়েছে সূর্যের আহবানে। এলাকাবাসীর উদাসীনতা, অবহেলার সুযোগে বড়ও হয়ে উঠছে।
ধুসর এলাকাটির এপার্টমেন্ট দালানগুলোর সাদাসিধা ঘরগুলোতে বাস করে শহুরে মানুষ। জীবিকা অর্জনে তারা এত ব্যস্ত যে তাদের প্রতিবেশ সবুজ নাকি ধুসর, বৃক্ষরাজি দ্বারা আবৃত নাকি ঊষর মরুভূমি, এ নিয়ে ভেবে দেখার অবকাশ নেই তাদের। এলাকাটিতে গড়ে উঠা এমনই অসংখ্য ফ্ল্যাট বাড়ির একটির নাম ‘নির্জন বসতি’। সাধারণত, ফ্ল্যাটবাড়িগুলো যেমনটা হয়ে থাকে- এই দালানটিও বেশ আধুনিক। ফ্ল্যাটগুলোর একেকটির দাম প্রায় কোটি টাকা। বেশ বড় বড় বদ্ধ রুম; লিফট, বাথরুম ফিটিংস, গ্যারেজ, দরজায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা- সব বেশ ভাল। সিঁড়িগুলোতেও দামী টাইলস লাগানো; যথেষ্ট আলোকসজ্জার ব্যবস্থা আছে দেয়ালে দেয়ালে। প্রতিটি কোণে “আমাকে ব্যবহার করুন’ লেখা বিন ও আছে রাখা। সৌন্দর্য বর্ধনে সদর দরজার বাইরে প্রাচীর-ঘেঁষে মাটি জমিয়ে বুনে দেওয়া আছে পাতাবাহার লতাগাছ।

এই দালানের প্রথম তলার ফ্ল্যাট দুটির সপ্ততীপর মালিক রফিক সাহেব পেশায় একজন ব্যবসায়ী। প্রথম যৌবনে একটি তৈরি-পোশাক কারখানায় মার্চেন্ডাইজার হিসেবে চাকরী করতেন তিনি। সাত-আট বছরের চাকরি জীবনে যখন মাত্র চল্লিশ হাজার টাকা বেতন পেতেন, তখনি কিভাবে কিভাবে যেন চল্লিশ লক্ষ টাকার গাড়ি কিনে ফেলেছিলেন তিনি- সবাইকে অবাক করে দিয়ে। তারপর একদিন তার ফ্ল্যাট কিনে ফেলার কথাও চাউর হয়ে গেলে কারখানায় তার সম-পদমর্যাদার সহকর্মীরা এ নিয়ে গিবত গাইতে শুরু করল। কিন্তু মালিকের কানে পৌঁছে তা তরঙ্গায়িত হওয়ার আগেই রফিক সাহেব, তার মতই আরেকজনকে অংশীদার করে নিজেই একটি ফ্যাক্টরি দিয়ে গার্মেন্টস মালিকে পরিণত হলেন। এর অল্প কিছুদিনের মধ্যে দাড়ি গজিয়ে সাদা করে, মাড় দেয়া ধবল টুপি-পাঞ্জাবী পরিধান করা শুরু করে পুরাদস্তুর মাওলানা হয়ে গেলেন রফিক সাহেব। তার কপালের উপরিভাগে দেখা দিল কালচে, থেঁতলানো দাগ।

‘নির্জন বসতির' তৃতীয় তলার দুটি ফ্ল্যাটের একটির মালিক আনোয়ার সাহেব এখন ঠিক কি করেন তা নিশ্চিত করে বলতে পারে না কেউ। তবে আগে নাকি তিনি একটি রিয়েলে-স্টেট কোম্পানিতে চাকরী করতেন। শোনা যায় সম্প্রতি তার সেই চাকরীটি চলে গেছে। কিন্তু চাকরী চলে যাওয়ার পর পরই তিনি একটি চকচকে ত্বকের, টানা টানা চোখের পাজেরো গাড়ি কিনেছেন। সকাল বিকাল সেই গাড়িতে গম্ভীর ভঙ্গিতে চড়ে বসে কোথায় যেন যান তিনি-সপরিবারে; মাথাটা গর্বিত, লড়াকু মোরগের মত খাড়া করে।

আনোয়ার সাহেবের পাশের ফ্ল্যাটটির মালিক তার আপন শালা, জনাব ফরিদুর রহমান। মাঝ বয়সী, আকারে ছোটখাটো ভদ্রলোক একজন সরকারি চাকুরে। জানা যায় এই ফ্ল্যাটটি তিনি কিনেছেন তার বোন, অর্থাৎ আনোয়ার সাহেবের স্ত্রীর নামে। একজন সরকারি চাকুরে আর কত টাকা বেতন পান? এই বাস্তবতায় গাড়ি-ফ্ল্যাট ইত্যাদি তো অন্তত নিজের নামে কিনতে পারেন না তারা; যদিও এর সবই তাদের থাকে!

চতুর্থ তলার পাশাপাশি দুটি ফ্ল্যাটের মালিক জনাব আবুল কালাম পেশায় একজন উকিল। ফ্ল্যাটবাড়িটি রিয়েল-স্টেট কোম্পানির কাছ থেকে মালিকদের হাতে হস্তান্তর হবার পরের একটি ঘটনা এই উকিল সাহেবের জীবিকা-নির্বাহ সম্পর্কে সবাইকে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিয়েছিল। ঘটনাটি হচ্ছে- পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার তিনটি ফ্ল্যাটের এবং এই জায়গার পূর্বের মালিক ফখরুল ইসলাম সাহেব ফ্ল্যাট মালিক কমিটির সম্মতিক্রমে গ্যারেজের একটি কোণে একটি ছোট ঘর তৈরি করে নিয়েছিলেন নিজ খরচে। একটি দরজা, জানালা আর ক্ষুদে দুটি রুমের একটি অফিস ঘর। কিন্তু কিছুদিন পর যখন ফখরুল সাহেব তার তিনটি ফ্ল্যাটের তিনটিই তিনজন ভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিয়ে তল্পিতল্পা সমেত অন্যত্র চলে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি সেই অফিস ঘরটির জন্য ফ্ল্যাট মালিকদের কাছে অর্থ দাবী করলেন। এদিকে ফ্ল্যাট মালিক-গন বা তাদের কমিটি অফিস-ঘরটি তৈরি করতে ফখরুল সাহেবকে সম্মতি দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু তার স্থায়ী-প্রস্থানে সেটি কিনে নেওয়ার কোনও অঙ্গিকার তারা করেন নি এবং তাই ওটা কিনে নিতে জোড় আপত্তিই শুধু জানালেন না, বরং যাওয়ার আগে ফখরুল সাহেবকে ঘরটি ভেঙে দিয়ে যেতে বললেন তারা। এভাবে, ঘোর দ্বন্দ্ব ঘোরতর হলে কিছুদিন পর এক হাত নেবার কালো উদ্দীপনা থেকে অহং এবং আকারে দীর্ঘ ফখরুল সাহেব হঠাৎ একদিন মালিকদের সবাইকে দম্ভ ভরে জানালেন- এই জায়গার হস্তান্তর নাকি সঠিক ভাবে হয়নি; আর তাই রিয়েল-এস্টেট কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করাবেন তিনি, যদি না, তার ছেড়ে দেয়া অফিস ঘরটি হাঁকানো দামেই কিনে নেয়া হয়। ফখরুল সাহেবের এই হুমকিকে প্রথমে কেউ পাত্তা না দিলেও, পরে দেখা গেল, মামলায় যথেষ্ট দুর্বলতা আছে বটে কিন্তু সেটা প্রমাণে হেপাও আছে বহু। ব্যস্ত ভদ্রলোকদের এসব করার সময় কোথায়? এবং কিছুদিন পর এরই জের ধরে ডাকা কমিটির জরুরি সভায় উদ্বিগ্ন মালিকদের সম্মুখে যখন সেই উকিল সাহেব, চতুর্থ তলার দুটি ফ্ল্যাটের মালিক জনাব আবুল কালাম প্রস্তাব করলেন যে তাকে যদি তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়, তবে তিনি সেটা দিয়ে বিষয়টি ফখরুল সাহেবের সাথে বুঝে নেবেন, তখনি সবার সামনে উন্মোচিত হয়ে গেল- মামলার মূল সুতাটি নাড়ছিলেন এই ব্যক্তিই এবং এই করেই জীবিকা নির্বাহ করেন ভদ্রলোক।

বর্তমানে তারা সকলে একসাথে নির্বিঘ্নে জীবনযাপন করছেন নির্জন বসতিতে। এমনকি পুরো এলাকার দেখভাল করার দায়িত্বে নিয়োজিত-নির্বাচিত যে মসজিদ কমিটি, তার গুরুত্বপূর্ণ পদেও এদের অনেকেই আসীন হয়েছেন। এলাকাবাসীর ভালমন্দ দেখার দায়িত্ব এখন এইসব লোকজনের উপর বর্তেছে! মেয়াদান্তে কমিটি-নির্বাচনের সময় ‘নির্জন বসতির’ গ্যারেজের কোণে অবস্থিত সেই অফিস ঘরটিতেই এখন চলে প্রচার প্রস্তুতি; বসে জরুরি সভা।

নির্জন বসতির সদর দরজার দায়িত্বে থাকা বয়স্ক কেয়ারটেকার ফিরোজ মিয়াঁ এখানে বেশ কঠিন চাকরী করেন। একটা ফাঁকা অফিস ঘর থাকা স্বত্বেও তাকে ঘুমাতে হয় দরজার সাথে দেয়াল ঘেঁষে তৈরি সরু, নিচু ছাদের আঁটসাঁট, জানালা বিহীন একটি ঘুপচি-ঘরে। গ্রীষ্মের অত্যন্ত তপ্ত দিনগুলোতে সদর দরজার পকেট গেটের কাছের ছাদ থেকে ঝোলানো সিলিং ফ্যানটিকে টিকিয়ে রাখতে তাকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয় ফ্ল্যাট মালিক কমিটির অর্থ সম্পাদকের সাথে। তিনি কিছুদিন ধরে কমন-লাইনে অত্যধিক বৈদ্যুতিক বিলের জন্য এই জীর্ণ ফ্যানটিকেই দায়ী করে আসছেন। তাছাড়া, বিদ্যুৎ-খরচ নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে ড্রাইভার, কাজের বুয়া কিংবা গৃহকর্মীরা যেন লিফট ব্যবহার করতে না করে- সে জন্য কড়া নির্দেশও দেয়া আছে ফিরোজ মিয়াঁকে। প্রবীণ কেয়ারটেকার ফিরোজ মিয়াঁ এইসব নির্দেশ বেশীরভাগ সময় মানেন না। কিন্তু যেদিন তার মেজাজ খারাপ থাকে- হয়ত মালিকদের কেউ যা-তা বলে গালি দিয়েছে তাকে কোনও কারণে- সেদিন কোনও কাজের বুয়া কিংবা দুর্বিনীত তরুণ ড্রাইভারদের কেউ লিফটে চড়তে উদ্যত হলে, ভীষণ রুক্ষ ব্যবহার করেন তিনি তাদের সাথে। আর ড্রাইভার, বুয়া কিংবা কাজের মেয়েরা হুকুম-পালনকারী ফিরোজ মিয়াঁর সেই রুদ্র মূর্তির কাছে নতি স্বীকার করে করুণ মুখে সচল লিফটের মুখ থেকে ফিরে সিঁড়ি ধরে দালানের ভেতর হারিয়ে গেলে ফিরোজ মিয়াঁ তাদের জন্য দুঃখিত বোধ করেন যদিও জানেন যে সিঁড়ি বাওয়া এমন কোনও বিষয় নয়। কিন্তু তবু, বিড়বিড় করে ফিরোজ মিয়াঁ আনমনে বকেন: “ছোটলোকের বাচ্চাগুলা ফ্ল্যাট কিনল ক্যামনে?” যেন উদার, বড় হৃদয়ের মানুষদেরই শুধু ফ্ল্যাট কেনার কথা ছিল!
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×