বীরাঙ্গনাদের কেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদা নয়: হাই কোর্ট 

একাত্তরের বীরাঙ্গনাদের কেন মুক্তিযোদ্ধাদের মতো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে না- সরকারের কাছে তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Jan 2014, 07:03 AM
Updated : 27 Jan 2014, 11:19 AM

একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. হাবিবুল গণির বেঞ্চ সোমবার এই রুল জারি করে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইন, অর্থ, মুক্তিযুদ্ধ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব এবং আইন কমিশনের চেয়ারম্যানকে চার সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে। 

২৬ মার্চের মধ্যে বীরাঙ্গনাদের তালিকা করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না এবং গত ৪২ বছর ধরে বীরাঙ্গনাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়ার বিষয়ে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ও নিরবতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে আরো দুটি রুল জারি করেছে আদালত।   

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী ও সালেহা ইশহাক গার্লস স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী সমিতির সভাপতি মিতালী হোসেন গত সপ্তাহে আদালতে এই রিট আবেদন করেন।

আদালতে আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেসুর রহমান।

ফাওজিয়া পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের বীরাঙ্গনাদের অধিকাংশই প্রান্তিক পর্যায়ের। এদেশের জন্মলগ্নে তাদের অবদানের বিপরীতে তারা যে অন্তত স্বীকৃতিটা পেতে পারেন সে বিষয়েও তারা সচেতন নন। বীরাঙ্গনাদের দুই একজনকে ১৬ ডিসেম্বর ও ২৬ মার্চে ডাকা হয়। রাষ্ট্র তাদের জন্য আর কিছুই করেনি।”

মোখলেসুর রহমান জানান, আদালত রিট আবেদনটি শুনে রুল দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের জবাব দিতে বলেছে।

রিটে বলা হয়, সরকার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদেরকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিলেও বীরাঙ্গনাদের কোনো ধরনের স্বীকৃতি দেয়নি। একাত্তরের ভয়াল দিনের স্মৃতি তারা নিরবে-নিভৃতে একাই বয়ে বেড়াচ্ছেন।

“তারা এই জাতির গর্ব। কিন্তু এরপরও তাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবন পার করতে হচ্ছে। তাদেরকে স্বীকৃতি দিতে অনেক দেরি হয়েছে। আর দেরি করা যায় না। বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার ও প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। তাই এই সময়েই বীরাঙ্গনাদের প্রতি ঋণ পরিশোধ করতে হবে।”