প্রয়াত বলিউডি অভিনেত্রী জিয়া খানের ‘আত্মহত্যা’ মামলা এবার নিল এক নতুন আন্তর্জাতিক মোড়। জিয়ার মা রাবিয়া খানের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) উদ্যোগ নিয়েছে তার ‘মৃত্যুরহস্য’ উদঘাটনের। ওই ঘটনায় ভারতীয় পুলিশের তদন্ত যথেষ্ট ছিল না দাবি করে এরমধ্যেই ওই প্রক্রিয়ায় এফবিআই-এর সংযুক্তির আবেদন জানানো হয়েছে দেশটিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের তরফ থেকে।
Published : 28 Jan 2014, 05:06 PM
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিল্লিতে অবস্থিত ইউএস অ্যাম্বাসির কর্মকর্তা রোজমেরি ম্যাকরে এই ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানিয়েছেন ভারতের সরাষ্ট্রমন্ত্রী রাওসাহেব রামরাও পাতিলের কাছে। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, জিয়ার ‘আত্মহত্যা’র ঘটনায় ফরেনসিক এবং টেকনিকাল দিকগুলো নিয়ে মুম্বাই পুলিশকে তদন্তে সহায়তা করতে চায় এফবিআই।
জন্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় জিয়ার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে সহায়তা চেয়ে ২০১৩ সালের অক্টোবারে ভারতে দেশটির রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি জে পাওয়েলের কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন তার মা রাবিয়া। সেই চিঠির প্রেক্ষিতেই এবার তদন্তে এফবিআই-এর সংযুক্তির আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাবিয়া বলেন, “কর্তৃপক্ষ সম্মত হওয়ামাত্রই, নতুন করে তদন্ত শুরু করবে এফবিআই।” তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে এক সপ্তাহের মধ্যেই হাইকোর্টে নতুন করে ওই মামলার তদন্ত করার আবেদন জানাবেন তিনি।
২০১৩ সালে বলিউডের অন্যতম চাঞ্চল্যকর ঘটনা ছিল জিয়া খানের ‘আত্মহত্যা’। ওই বছরের ০৩ জুন মুম্বাইয়ে জিয়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় জিয়ার ঝুলন্ত লাশ। পুলিশি প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রেমিক সুরাজ পাঞ্চোলির সঙ্গে বিচ্ছেদ এবং হতাশার কারণেই আত্মহত্যা করেছিলেন ওই অভিনেত্রী।
তবে শুরু থেকেই জিয়ার পরিবার ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে মানতে নারাজ। জিয়ার মা রাবিয়ার দাবি, এটি ছিল একটি হত্যাকাণ্ড।
রাবিয়ার দাবি, “যদি জিয়া আত্মহত্যাই করবে, তাহলে বাড়ির অন্য ঘরে কেন পাওয়া গেছে ওর রক্তের ছাপ? আমি জানতে চাই, জিয়াকে কেউ কোনো উদ্দেশ্যে খুন করেছিল কি না; আর সেই উদ্দেশ্যেই আমি যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছি।”
তিনি আরও জানান, বাড়ির দুটি ঘরে জিয়ার রক্ত পাওয়া কোন যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা দিতে পারেনি মুম্বাই পুলিশ। জিয়ার মৃতদেহে পাওয়া বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্নেরও কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি পুলিশি তদন্ত থেকে।
১৯৮৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া নাফিসা রিজভি খানের বলিউডি অভিষেক ঘটে ২০০৭ সালে। রাম গোপাল ভার্মার ‘নিশব্দ’ সিনেমার মাধ্যমে জিয়া খান নামে বলিউডে পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। পরবর্তীতে ‘গজনি’, ‘হাউজফুল’-এর মতো ব্যবসাসফল বলিউডি সিনেমার মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে বেশ ভালো অবস্থানেই নিয়ে যান জিয়া।
তবে ২০১০ সালের পরে তার ক্যারিয়ার জুড়ে ছিল ব্যর্থতা; সে কারণে বেশিরভাগ সময়ই হতাশায় পার করতেন জিয়া। পরবর্তীতে অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সুরাজ পাঞ্চোলির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তিনি। তার সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিনের মাথাতেই আসে জিয়ার মৃত্যুর খবর।