বিগত জোট সরকারের সময় চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় আদালতের দেয়া রায়কে ‘প্রহসনমূলক’ ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মনে করছে বিএনপি।
Published : 31 Jan 2014, 01:01 PM
চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণার পরদিন শুক্রবার ঢাকায় এক সংবাদ ব্রিফিঙে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রতিক্রিয়া দেন। দলের পক্ষে এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া।
তিনি বলেন, “এই রায় প্রহসনমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিএনপিকে ফাঁসাতে এবং হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এটি সরকারের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আমরা মনে করি।”
২০০৪ সালে চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটিঘাটে ওই অস্ত্রের চালান আটকের ঘটনায় সম্পৃক্ততার দায়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ও তখনকার জোট সরকারের শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৪ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত।
চালান আটকে যাওয়ার পর তখনকার প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘নিরবতা ও নির্লিপ্ততার’ কথাও উঠে এসেছে রায়ের পর্যবেক্ষণে।
বিএনপির শরিক জামায়াতে ইসলামী বৃহস্পতিবারই এক বিবৃতিতে এ রায়কে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছে জামায়াতে ইসলামী।
শুক্রবার সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে রিজভী বলেন, “যারা দশ ট্রাক অস্ত্র ধরলো, তাদেরই শাস্তি দেয়া হলো।”
নাশকতার মামলায় বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর এটাই রিজভীর প্রথম সংবাদ ব্রিফিং। গত ২৯ নভেম্বর বিএনপি কার্যালয় থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব দলীয় কার্যালয়ে এসে পৌঁছালে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপনসহ নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। রিজভীর অনুপস্থিতিতে রিপনই দলের দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন।
‘তিনি একাই তলোয়ার ঘোরাচ্ছেন’
বিফিঙে রিজভী দাবি করেন, ‘ভোটারবিহীন নির্বাচনে’ গঠিত বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের কোনো ‘ম্যান্ডেট’ নেই।
“স্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকতেই প্রধানমন্ত্রী নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। এখন ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতায় বসে তিনি একাই তলোয়ার ঘোরাচ্ছেন। এতে কোনো লাভ হবে না।”
‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে’ সরকার অনেক বহু জেলাকে ‘বধ্যভূমিতে’ পরিণত করেছে বলেও রিজভী অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “আমরা সরকারকে বলে দিতে চাই, কেউ অপরাধ করে থাকলে বিচার করুন। বিনা বিচারে হত্যা করবেন না। এটা বন্ধ করুন। নইলে দেশে যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে, এ থেকে উত্তরণে আন্দোলন তীব্রতর করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না।”
বিরোধী কণ্ঠ রুদ্ধ করতেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, “তারেক রহমানের শাশুড়ি বলেই তাকে হয়রানি করতে এ মামলা দেয়া হয়েছে।”
অন্যদের মধ্যে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, মহানগর সদস্য সচিব আবদুস সালাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক শিকদার ব্রিফিঙে উপস্থিত ছিলেন।