গত জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নিয়ে এখন উপজেলা নির্বাচনকে গুরুত্ব দেয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 08 Feb 2014, 04:21 PM
শনিবার রাজশাহীর সারদায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় তিনি বলেন, “গোপালগঞ্জের নাম শুনলে উনার মেজাজ খারাপ হয়। এজন্য গোপালগঞ্জের নাম শুনলেই উনি গালি দেন।
“এর জবাবে আমি বলেছি, গোপালীরা কপালি হয়। আর উনি গোলাপী শাড়ি পড়ে গোলাপী হয়ে থাকেন। গোলাপী এখন কই? জাতীয় নির্বাচনের ট্রেন মিস করে গোলাপী এখন উপজেলা নির্বাচনের ট্রেনে চড়ে বসেছে।”
গত ৫ জানুয়ারি বিএনপিবিহীন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে পাঁচ শতাংশ ভোটারও ভোট দেয়নি দাবি করে বিএনপি বলে আসছে- বর্তমান সরকার অবৈধ।
এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচন কমিশন আর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে ৪০ ভাগ মানুষ ভোট দিয়েছে। আর উনি ভাঙা রেকর্ডের মতো বলে যাচ্ছেন- মানুষ ভোট দেয় নাই।”
বিএনপি চেয়ারপারসনকে হরতাল-অবরোধ আর ‘মিথ্যে কথা বলা’ বন্ধ করার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।
“উনি মেট্রিকেও ফেল, আন্দোলনেও ফেল। ফেলু এখন ঘরে বসে কাঁদে-হায় হায় কি হলো। মানুষ উনার ডাকে সাড়া দেয় নাই। জনগণ তাকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। আমি উনাকে বলব, লজ্জা থাকলে এ কাজ আর করবেন না।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা উন্নয়ন করি, আর উনি ধ্বংস করেন। ধ্বংসের রানী হয়ে ধ্বংস করতেই আছেন। মানুষের শান্তি উনি পছন্দ করেন না।”
তিনি বলেন, “বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসা মানে দেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের রাজত্ব কায়েম করা। তারা ক্ষমতায় থাকতে রাজশাহীতে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।
“বিএনপির দুই গুণ- দুর্নীতি আর মানুষ খুন। তাদের হাত থেকে হিন্দু মুসলিম কেউ রেহায় পায়নি।”
খাদ্য ও বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতার এবং সারের দাম কমানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া দেশের শান্তি চান না। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকলে তিনি কষ্ট পান, তাই পুড়িয়ে মেরে মানুষকে হত্যা করে, কষ্ট দেন।
“৫৫ জন গাড়ির ড্রাইভার ও হেলপারকে খালেদা জিয়া পুড়িয়ে মেরেছে।”
সারদা পুলিশ অ্যাকাডেমিতে শিক্ষানবীশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সকালে রাজশাহী যান প্রধানমন্ত্রী।
ওই অনুষ্ঠান শেষে বিকালে তিনি চারঘাট উপজেলার সারদা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আসেন এবং একযোগে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন। এছাড়া রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭৭ জনের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন তিনি।
পরে বিদ্যালয়ের মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই জনসভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহম্মেদ পলক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা, দলের মহানগর সভাপতি অধ্যাপক বজলার রহমান ও জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আখতার জাহান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেসা তালকুদারসহ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।