somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসার লাল, নীল, গোলাপী (ভালোবাসার গল্প)

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৪:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আশা করি সবাই পড়বেন।
নতুন একটা "গল্প" শুরু করলাম।


১.
শুভ্র অনেক দিন ধরে একা সময় কাটাচ্ছে। মানে প্রেম বিষয়ক ব্যাপার স্যাপার নিয়ে।
গত চার বছরে একটা মেয়ের সাথেও রিলেশন হয়নাই।
কেমন যেন এলোমেলো সময় কাটছে ওর।

মনের মত পছন্দ হচ্ছে না কোন মেয়েকে। অপেক্ষায় আছে তার স্বপ্নের রাজকন্যার। কবে আসবে আর বলবে
"আই লাভ ইয়ু শুভ্র" নাহ এভাবে নিরামিষ সময় যে আর কাটেনা।


কিছু দিন পর...

মামাতো ভাইয়ের বিয়েতে যেতে হচ্ছে ওদের ময়মনসিংহ।
ট্রেনে যাচ্ছে শুভ্র আর শুভ্রর মা,বাবা। জানালার পাশের ছিট
টায় বসেছে শুভ্র। আর মনে মনে ভাবছে, শালা মামুন
(শুভ্রর মামাত ভাই) আমার ২ বছরের বড়! আর ওর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ?
আমার তো কপালে কিছুই জুটলো না।
হায়রে কপাল!

শুভ্র ট্রেনের বাথরুমের দিকে গেল, সেখানে আবার সিরিয়াল পড়েছে।
কিছুক্ষন ওয়েট করার পর যখন শুভ্র ঢুকতে যাবে
ঠিক সেই মুহূর্তে একটা মেয়ে দৌড়ে আসলো। শুভ্রকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে জলদি
বাথরুমে ঢুকেই, হড় হড় করে বমি করলো!
উফ কি বিশ্রি অবস্থা।
তারপর বেরিয়ে এসে শুভ্রকে যেতে বলল,
শুভ্রর ঘৃণা লাগছে। তবুও
কিছু করার নাই। যাওয়া তো লাগবেই। বাধ্য হয়েই টয়লেটে প্রবেশ করলো শুভ্র।
টয়লেট সেরে কিছুক্ষন পর বাইরে বের হলো। কিন্ত সেই মেয়েটি
টয়লেটের সামনেই দাড়িয়ে ছিল। শুভ্র বের হবার সাথে সাথে আবার
দৌড়ে টয়লেটে ঢুকলো মেয়েটি।
ঢুকেই আবার বমি করলো।
শুভ্র জিজ্ঞেস করলো কি কোন অসুবিধা হয়েছে?
আমাকে বলতে পারেন,
এত বমি হচ্ছে কেন?
মেয়েটি বলল, না ভাইয়া তেমন কিছু হয়নি।
আমার জার্নি করলেই এমনটা হয়।
আশ্চর্য! ট্রেন জার্নিতেও
আপনার বমি হয় ?
মেয়েটি হেসে দিয়ে বলল, হ্যাঁ,, হয়।
মেয়েটার হাঁসি দেখে শুভ্রর মনের মধ্যে কেমন যেন করে উঠলো।
নাহ সুন্দর তো, অনেক সুন্দর মেয়েটা।
একেই বোধহয়
খুজতেছিলাম মনে মনে। তোমার নাম কি?
জিজ্ঞাসা করল শুভ্র মেয়েটিকে।
চৈতি, আমার নাম চৈতি। তুমি করে বলে ফেললাম, মাইন্ড করলেন নাতো ?
মাইন্ড করবো কেন আপনি আমার থেকে অনেক বড়ই হবেন,
অসুবিধা নাই তুমি করে বলতেই পারেন। তা কোথায় যাচ্ছো ?
তুমি কি একা, নাকি কেউ আছে সাথে?..
আমি একা হবো কেন আম্মু আব্বু সবাই আছে।
তারা ঘুমাচ্ছে এজন্য ডিস্টার্ব করিনি, পাশের বগিতেই আছে।
আর যাচ্ছি ময়মনসিংহে, আমরা ওখানেই থাকি।
গেছিলাম আব্বুর এক বন্ধুর বাসায় বেড়াতে, সেখান থেকে আসলাম।
ওও আচ্ছা আচ্ছা।
ভালো খুব ভালো। আমরাও কিন্ত ময়মনসিংহ যাচ্ছি।
ও তাই নাকি বলে হেঁসে ফেলল চৈতি।
হুম তাই..
আচ্ছা তুমি কোন ক্লাসে পড়?
সামনে এস, এস, সি দেবো।
আপনি?
আমি?
হ্যাঁ আপনি কিসে পড়েন?

আমি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফাইনাল ইয়ারে আছি।
WoW! আপনি তো তাহলে একজন ইঞ্জিনিয়ার!
না এখনো হয়নি। তবে হবো।
ওই হলো, মানে.. হবেনই তো।
চৈতি, তুমি কি মোবাইল ফোন ব্যাবহার করো ?
হ্যাঁ করি..কিছু মনে না করলে, নাম্বারটা কি আমাকে দেওয়া যাবে?
কিছুক্ষন ভেবে..
হ্যাঁ দেয়া যাবে।
তাহলে দাও..
নেন...01758******ওকে?
হ্যাঁ ওকে।
কিছু মনে করলে না তো ?
কিজে বলেন আপনি!
খিলখিল করে হেঁসে উঠলো আবার চৈতি।

নাহ ওর হাঁসি মুখ দেখতে এত সুন্দর লাগে কেন?
মনে মনে বলতে লাগলো শুভ্র......

২.

শুভ্র ভেবে ভেবে অবাক হয়, এত সুন্দর হাঁসি কি করে হাঁসতে পারে
একটা মেয়ে মানুষ?
চৈতির হাসির মাঝে যেন একটা অন্যরকম কারু কার্য আছে যা
ওর চেহারার মাঝে ফুটে ওঠে।
সেটা প্রতিটা মুহূর্তে উপলব্ধি করছে শুভ্র।

আচ্ছা ভাইয়া আমি তাহলে এখন যায়?
আব্বু-আম্মু জেগে গেলে খোজ করতে পারে, এই বলে চৈতি শুভ্রর কাছ থেকে যাওয়ার অনুমুতি চাইলো।
হুম, তাহলে যাও..আচ্ছা কত নম্বর বগিতে আছো তোমরা?
"ঠ" নম্বরে..
এক ঝলক হাঁসি দিয়ে চলে গেল চৈতি।
এ কেমন ভালোলাগা,
যে যেতেই দিতে ইচ্ছে করছে না ওকে..আটকেও তো রাখতে পারিনা!

বার বার মন চাইছে বলতে আর কিছুক্ষন থেকে যাও,
কিন্ত পারছিনা বলতে..
ওর তো যাওয়া লাগবেই।

নাহ পরে তো আবার দেখা হবে, কি সব পাগলামো মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে,
যায় ওদিকে আমার বাবা-মাও চিন্তা করছে বোধহয়?

শুভ্র তার ছিটে গিয়ে বসলো।
কিরে এত দেরী করলি যে? কোথায় ছিলি?
এইতো বাবা, পাশেই ছিলাম।

জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে শুভ্র।
রাতের আকাশ টা বেশ সুন্দর লাগছে। বাইরের প্রকৃতিটাও বেশ চমৎকার।
ঝিরি ঝিরি বাতাস এসে চুল গুলো উড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে।
ট্রেনের ঝক, ঝক, ঝক শব্দটাও বার বার কানে এসে লাগছে।
সেই ছোটবেলার কবিতার কথা মনে পড়ছে,
ঝক, ঝকা ঝক ট্রেন চলেছে, ট্রেনের বাড়ি কোই?
ছোট বেলায় ভাবতাম, সবার যেহেতু বাড়ি আছে তাহলে
ট্রেনেরও নিশ্চই বাড়ি আছে!
কিন্ত বড় হলে বুঝলাম, কি ছেলেমানুষি
চিন্তা ভাবনা ছিল যে আমার!
তবুও ছেলেবেলাটা আসলেই খুব সুন্দর ছিল।
সাজানো গোছানো ছিল, এখনের মত এতো এলোমেলো ছিলোনা।
যাক সেসব কথা।
তবে এই সময়টা একেবারে খারাপ না, ভালোই লাগছে শুভ্রর।

চৈতিকে কি এখন একটা কল দেব?
নাহ থাক,, কি মনে করে..ফোন দিয়ে কি বলবো?
আব্বু-আম্মু ঘুমিয়ে থাকলে আরেকবার আসো গেটের কাছে,
হাতে ফোনটা নিয়ে নাড়াচাড়া করছে শুভ্র।
হঠাৎ একটা কল আসলো,
নাম্বার না দেখেই শুভ্র..
হ্যালো, আমি ভাবছিলাম তোমায় রিং দেবো..

তার আগেই তুমি...
আরে কি সব বলছিস?

মাথা ঠিক আছে তোর? কাকে কল করতে যাচ্ছিলি?
আমি মামুন..
ও তুই? আমি ভাবছিলাম..
থাক,
এখন বল কি অবস্থা তোর? বিয়ে তো করে ফেলতেছিস, খুব ভালো।
তা আমাদের কথাওতো একটু ভাবতিস?
হুম..ভাবি রে ভাই ভাবি,
তোর জন্যও একটা মেয়ে দেখে রেখেছি আই তারপর দেখবি..
তাই? ভালো। আসি আগে তারপর দেখা যাবে..
তোরা এখন কতদুর? এইতো আর ৫/৬ ঘণ্টা লাগবে আসতে..
ওওও তা,, মামা-মামী কি আছে পাশে?
হুম, আছে দেবো?..
না থাক, পরে কথা বলবো, জলদি আই সারপ্রাইজ আছে...
হুম, আসছি।
ওকে তাহলে রাখি,, ফোনটা কেটে দিল মামুন।

কি যে করি আমি নিজেই জানিনা, মাথাটা বোধহয় একেবারেই গেছে,,
মামুন কি মনে করলো?
ধ্যাত,

চৈতিকে তো আমার নাম্বারটায় দেওয়া হয়নি।
অবশ্য ওতো নিতেও চাইনি, দেবোই বাঁ কি করে?
যাবো, ওদের বগিতে..
আরেকটু কথা বলতে ইচ্ছে করছে।
যায় এক চক্কর মেরে আসি..

বগি পর্যন্ত যাওয়া লাগলো না, তার আগেই চৈতির সাথে দেখা হয়ে গেল শুভ্রর। কি তুমি এখানে দাড়িয়ে, দাড়িয়ে কি করছো? ও আপনি, না মানে বাহিরের প্রকৃতিটা দেখছিলাম। এখানে দাড়িয়ে দেখুন না কত সুন্দর লাগছে। দুরের ঐ ছোট ছোট ল্যাম্প পোষ্ট গুলো!..
খুব ভালো লাগছে দেখতে।
হুম, অনেক সুন্দর!
তার থেকে সুন্দর তোমার মুখের ঐ হাঁসিটা......

৩.
শুধু দাড়িয়েই কথা বলে যাবো নাকি?
চলো কোথাও বসি।
কোথায় বসবেন?
এখানে দাড়িয়েই তো বেশ ভালো লাগছে। বাহিরের ঝিরি ঝিরি বাতাস এসে
মনটা জুড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে।
ও তাই নাকি?
হুম, অনেক ভালো লাগছে।
এই চলন্ত ট্রেনে দরজার সামনে দাড়িয়ে আছো, ভয় করছেনা?
যদি পড়ে যাও?
না...ভয় নেই।
কেন ভয় নেই?
আপনি থাকতে আবার কিসের ভয়?

আমি যদি পড়ে যেতে লাগি আপনি ধরবেন না?
শুভ্র মনে মনে বলছে, তুমি যদি পড়ে যাও তবে আমার কি হবে?
আমিও ট্রেন থেকে
লাফ দেবো। বাঁচতে হলে তোমাকে নিয়ে বাঁচবো, আর মরলে তোমার সাথে মরবো!
কি হলো? কি চিন্তা করছেন?

..না কিছুনা, না না, তুমি পড়বেনা আমি আছিতো!
তোমার যতক্ষণ ইচ্ছা দাড়িয়ে থাকো। বাহিরের প্রক্রিতি দেখো।
তবে একটু সাবধানে, পায়ে যে হীল পরেছো আমার তো ভয় হচ্ছে।
স্লিপ খেয়ে আবার পড়ে না যাও!
কি বলেন এইসব? ভয় দিচ্ছেন?
নাহ, আর দাঁড়াবোই না এখানে।
চলেন কোই বসতে চেয়েছিলেন সেখানে যায়।

কেন আর দেখবেনা বাহিরের ঝিরি ঝিরি বাতাস?
নাহ, এখন আর ইচ্ছে করছেনা।
পরে দেখা যাবে।
ভয় পেলেন নাকি?
আরে নাহ, কিসের ভয়? কোন ভয় না এমনিই ইচ্ছে করছেনা।
চলেন অন্য কোথাও।
চলুন তাহলে সামনে রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসি। চা, কফি খেতে খেতে গল্প করা যাবে।
হ্যাঁ, চলুন। তবে একটা কথা আছে?
কি কথা বলুন?

আপনি কিন্ত আবার আমাকে আপনি আপনি করে সম্মোধন করে যাচ্ছেন।
আমি আপনার থেকে অনেক জুনিয়র।
তুমি করে বলবেন সবসময়।
তা না হলে আপনার সাথে আমি আর কথা বলবনা।
হা, হা...
ওকে ওকে তুমি করেই বলবো।
আসলে কি যে হয়েছে? সব কিছুই গুলিয়ে যাচ্ছি।
চলেন... সরি, চলো।।
ট্রেনের রেস্টুরেন্টে গিয়ে শুভ্র আর চৈতি মুখোমুখি একটা টেবিলে বসে পড়লো।
শুভ্র চৈতির দিকে তাকাচ্ছে।
চৈতি একটু একটু লজ্জা পাচ্ছে।
মুখটা নিচে করে বসে আছে চৈতি।
আশেপাশে লোকজন সব মরার মত ঘুমাচ্ছে।
দুইটা টেবিল চেয়ার বাদে সব টেবিল চেয়ারের উপর আর নিচ দিয়ে মানুষ উপুড় হয়ে চিত হয়ে মরার মত ঘুমাচ্ছে।
সকালের আলো এখনো ফুটেনি।
আলো ফুটবে ফুটবে অবস্থা।
কি চুপ হয়ে বসে আছো কেন?
চা, না কফি?
কোনটা অর্ডার করবো?
আপনি যেটা খাবেন সেইটা অর্ডার করেন।

আমি যেইটা অর্ডার করবো তোমারও তাই?
হ্যাঁ, একটা হলেই হলো...
শুভ্র একজনকে ডেকে...
এই ভাইয়া, দুইটা কফিদিয়েন তো এদিকে?
চৈতি চুপচাপ বসে আছে।
শুভ্র জিজ্ঞেস করলো, একটু পরই তো আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে যাবো।
এখান থেকে যাওয়ার পর তোমার কি আর আমার কথা মনে থাকবে?
থাকবেনা কেন?
অবশ্যই থাকবে।
আপনি হয়তোবা ভুলে যাবেন, তবে আমি ভুলবোনা! ছেলেরা খুব সহজেই সব কিছু ভুলে যায়, কিন্ত মেয়েরা প্রতিটা স্মৃতিই খুব মজবুত ভাবে মনে রাখে!

বাহ! তোমার তো দেখি ছেলেদের সম্পর্কে বেশ ভালোই ধারনা আছে!
এসব তো আগে লক্ষ্য করিনি?
আপনার সাথে, আমার পরিচয় তো মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যাবধান মাত্র।
কিছুদিন আমার পাশাপাশি থাকলে, আমাকে আরও অনেক বেশী
ভালো করে বুঝতে পারতেন।
শুভ্র মনে মনে বলছে, চৈতি আমি তো সারাজীবনই তোমার ছায়া হয়ে থাকতে চাই!
ওই মিষ্টি মুখের মায়া আড়াল করা আমার পক্ষে তো অসম্ভব!
কোন এক কবি হয়তোবা বলে গেছেন, কিছু কিছু মিষ্টি চেহারা আছে এমন যা তুমি
একবার দেখলে আবার দেখতে ইচ্ছে করবে! সামনে থেকে সরে গেলে তুমি পাগল
হয়ে যাবে। মনে হবে, আমার জগত টায় বুঝি গ্রহন' লেগেছে।
আধারে ডুবে গেছে!
কোন কবি' এসব বলেছে কিনা, জানা নেই। তবে আমার কাছে এখন যেটা
মনে হচ্ছে, চৈতি তুমি আমার এই ছোট্ট জগতের আলো!
কখনো সরে যেওনা, আড়াল হইয়ো না, যদি সরেও যাও তবে সূর্যের মত আলো হয়ে
রাত শেষে আবার ফিরে এসো!

কোথায় হারালেন?

হ্যাঁ? না, মানে কি যেন বলছিলে?
যাহ্‌ এখনি সব ভুলে গেলেন? বলছিলাম ছেলেরা সব কিছুই ভুলে যায়!

না না, চৈতি..এটা কিন্ত ভুল। জানিনা সব ছেলেরা কেমন হয়, তবে আমি এমন নয়!
শুধু এটুকুই বলবো,
ইম্পসিবল, চৈতি তোমাকে ভোলা সম্ভব না!

চৈতির মুখে এক চিলতে মিচকি হাঁসি ফুটে উঠলো।

মন ভোলানো এই হাঁসি দেখে শুভ্র আবার ভাবনার জগতে হারিয়ে গেলো।
শুভ্র ভাবছে, এটাই বুঝি ভালোবাসার প্রথম ধাপ!
ভালোবাসার লাল, নীল, গোলাপি আলোয় শুভ্র বারবার হারিয়ে যাচ্ছে।

চৈতির হঠাৎ এক ছুড়ে দেয়া অদ্ভুত প্রশ্ন শুভ্রকে আবার বাস্তব জগতে ফিরিয়ে
আনলো।

আচ্ছা আমরা যে এখানে বসে আছি, বা পরে গিয়ে মনে রাখার মত কথা
উঠছে তাহলে আমাদের মাঝে নিশ্চয় কোন না কোন সম্পর্ক হয়েছে? তাহলে সে সম্পর্কটা কি?
আর আমি আপনাকে কি বলে ডাকবো?

চৈতির এমন প্রশ্নে শুভ্র বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে গেলো।
কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছেনা।
আমাকে কি বলে ডাকবে?
আর আমাদের মাঝে কি সম্পর্ক এটা কি বলবো ওকে?
শুভ্র কিছুক্ষন ভেবে,

কঠিন প্রশ্ন করেছো!
তবে আপাতত তুমি আমাকে শুধু শুভ্র বলেই ডাকো।
আর আমাদের মাঝে কি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে সেটা কি করে বলবো?
না বাদ দাও, এসব আলোচনা তো পরেও করা যাবে, তাইনা?
হুম, এটাও তো ঠিক। আমি তাহলে আপনাকে ভাইয়া বলে ডাকি?
না না, কি বলছো, ভাইয়া বলে কেন ডাকবে? জাস্ট "শুভ্র" ওকে?
কিন্ত আপনি তো আমার থেকে অনেক বড়! আপনার নাম ধরে
কি করে ডাকি?

আহ.. হা, আমি কিছুই মনে করবোনা তুমি শুধুই শুভ্র বলবা।
আচ্ছা আমার নাম্বারটা তো তোমাকে দেয়া হলোনা,
নাম্বারটা কি দেবো তোমাকে?
অবশ্যই, দিন। আপনি না দিলেও আমি ঠিকই চেয়ে নিতাম।
আচ্ছা নাও ...০১৭১৭****** ঠিক আছে?

হ্যাঁ, এবার ঠিক আছে।
কফি চলে এসেছে। শুভ্র কফির গ্লাসে এক এক চুমুক দিচ্ছে আর চিন্তা করছে
আমাদের মাঝে তো ধরতে গেলে এখনো কোন সম্পর্কই হয়নি। আমিও ওকে প্রপোজ করিনি আর ওর থেকেও বুঝতে পারছিনা।
মেয়েটা আমাকে সত্যিই পছন্দ করে কিনা?

আচ্ছা চৈতি তোমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
আমার ইচ্ছা, আমি অনেক দূর পর্যন্ত পড়ালেখা করবো। অনেক শিক্ষিত হওয়ার ইচ্ছা।
মেয়েদের তো আসলে এমন স্বপ্ন সবার বাস্তবায়ন হয়না।
তবুও আমি আপ্রান চেষ্টা করে যাবো পড়ালেখাটা চালিয়ে যাওয়ার।
আমি বিয়ে করতে চায় তেমন ফ্যামিলিতে যারা আমাকে আমার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিবে।

আমার স্বামী আমাকে সাহস দিবে।
আমি আসলে,
ফিউচারে আমার নিজের কিছু
করারও পরিকল্পনা আছে। আমি নিজে কিছু করতে চায়।
গরীব দুঃখীদের পাশে দাড়াতে চায়।
সমাজ সেবা মুলক কাজ করার ইচ্ছা আছে।
মানুষের তো নানান রকমের ইচ্ছে থাকে,
আমারও তেমনি অনেক ইচ্ছে আছে।
তবে বাস্তবায়িত হয় কিনা জানিনা!

হুম, তোমার ইচ্ছা গুলো অনেক চমৎকার!
আমি সমর্থন দেই তোমায়, এতো সুন্দর ইচ্ছা গুলো তোমার মধ্যে আছে সেজন্যে। সত্যিই অনেক ভালো লাগলো।
আমি যদি তোমাকে বিয়ে করতাম তবে তোমার এসব ইচ্ছে গুলো
আমি পুরন করতাম।
শুভ্রর কথা শুনে খিল খিল করে হেঁসে উঠলো চৈতি। মায়াবি এই হাঁসি দেখার জন্য শত বছর বেঁচে থাকার স্বাদ জাগে শুভ্রর।

চলবে.
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×