জীবন একেবারে সন্যাসী হয়ে যাওয়ার জন্যও না, ঋষি হয়ে যাওয়ার জন্যও না। সবাই ঋষি আর সন্যাসি হয়ে গেলে তরকারি বেচবে কে? রিকশা চালাবে কে? ধান কাটবে কে?
জীবন ভোগ বিলাসের জন্যও না। কারন ভোগ করে তুমি পৃথিবীর ভোগ্য পন্যের 0.0000000000000000000000001 ভাগও শেষ করে যেতে পারবে না যদি একা ভোগ করতে চাও। অর্থাৎ এটা শুধু ভোগের জন্যও না। আর ভোগ বিলাস থেকে পৃথিবীর ভালো কোন কিছুর সৃষ্টি হয়নি। পৃথিবীর সমস্ত উপকারি ও অপকারি সমস্ত কিছুর সৃষ্টি তৈরি হয়েছে ত্যাগের মাধ্যমে। ভোগের মাধ্যমে না। তাই কোন আলেমকে, সন্যাসীকে, ঋষিকে তাদের ত্যাগের জীবন বাদ দিয়ে ভোগের জীবনে প্রবেশ করতে আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি।
কিন্তু হাজারও ভোগবিলাসী মানুষকে ভোগের জীবন বাদ দিয়ে ত্যাগের জীবন গ্রহন করতে দেখা গেছে।
জীবন নামাজ পরতে পরতে মাথায় কড় ফেলে দেয়ার জন্যও না। জীবন ধর্ম-কর্ম করে সময় নষ্ট করা জন্যও না। স্রষ্টার সান্নিধ্যের জন্য ধর্মের দরকার নাই।
জীবন কিসের জন্য আমি জানিনা। আমার মনে হয় জীবন অনুসন্ধানের জন্য। চিন্তা করার জন্য। খোজার জন্য। জ্ঞ্যান ও বিদ্যা অর্জনের জন্য। আর বাকি সবকিছু শুধু এই কাজে সহযোগিতা করার জন্য।
ইসলাম সবচেয়ে হাস্যকর যে তথ্য দেয় সেটা হচ্ছে, আল্লাহ নাকি কোটি কোটি নেয়ামত তৈরি করেছেন মানুষের ভোগের জন্য, মানুষের কল্যানের জন্য। কথা হচ্ছে, তাহলে ভোগ করার পরিপূর্ণ আধিকার দিলনা কেন? নেয়ামত দিলা, আর ভোগ করতে পারবোনা? এটা কোন যুক্তি হলো? খাবার পাঠালা আমার বাসায় আর বলছে খেতে না। এইটা কোন রকম কথা?
তাছাড়া ডায়নোসর বানিয়েছিলেন কি কল্যানের কারনে? আর সেই ডাইনোসর মারলেনই বা কি কারনে? নেয়মত বানিয়ে আবার নেয়ামত নষ্ট করার কি দরকার ছিল?
আর ডাইনোসরের চেয়ে তো ভয়ঙ্কর প্রাণী আমরা মানুষরা। পৃথিবীর সমস্ত ডাইনোসর যদি লাখো কোটি বাচ্চাও জন্ম দিত তারপরেও তারা একদিনে পৃথিবীকে কোনদিন ধ্বংস করতে পারতোনা। কিন্তু মানুষ তা কয়েক মুহূর্তেই করতে পারবে এবং আমার ধারনা একদিন করবে। কয়েক শ পারমাণবিক বোমা ফাটিয়ে।
তাহলে ডায়নোসরের মতো নির্বোধ প্রাণীকে বিলুপ্ত করে আমাদের মতো বুদ্ধিমান কিন্তু ক্ষতিকারক প্রাণী বানিয়ে কি এমন লাভ ছিল?
আমার কাছে এইসব প্রশ্নের উত্তর নাই। তাই এসব নিয়ে কথা বলেও লাভ নেই।জীবন নিয়েই কথা বলি।
জীবন কাকে বলে? আমরা কি এই প্রশ্নের উত্তর জানি? আমরা মানুষরা আসলে কিছুই জানিনা। কিন্তু আমরা এমন জটিল একটা ভাব নিয়ে পৃথিবীতে থাকি যেন আমরাই সবজান্তা। যেন আমরা সবকিছু জেনে হজম করে ফেলেছি। আসলে আমরা কি যে জেনেছি, সেটাই মনে হয় জানতে পারিনি।
জীবন কাকে বলে? এবং জীবন কিজন্য? জীবন কোথা থেকে আসে আর কোথায় চলে যায়? এই সহজ কয়েকটা প্রশ্নের উত্তরই আমরা জানিনা। অথচ এন্ড্রোমিডা দীপপুঞ্জে কটা প্রাণী বাস করে সেই খবর আমরা ঠিকই রাখি, পাঁচশো আলোক বর্ষ দূরে কি কি গ্রহ আছে তার খবর আমরা জানি।