somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফাগুনের কবি ফররুখ আহমদ

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফাল্গুনে শুরু হয় গুনগুনানি
ভোমরাটা গায় গান ঘুমভাঙানি
একঝাক পাখি এসে ঐকতানে
গান গায় এক সাথে ভোর
বিহানে...

ছোটবেলায় পড়া সেই ফাগুনের ছড়ার কবি ফররুখ আহমদ । ইসলামী রেঁনেসার কবি হিসেবেই তিনি পরিচিত । কখনো তিনি ঝিরিঝিরি মাতাল হাওয়ায় নিশিবকের মত ভেসে বেড়ান প্রকৃতির রুপে ...
গেয়ে উঠেন ..

বিষটি এল কাশ বনে
জাগল সাড়া ঘাস বনে,
বকের সারি কোথা রে
লুকিয়ে গেল বাঁশ বনে।
নদীতে নাই খেয়া যে,
ডাকল দূরে দেয়া যে,
কোন সে বনের আড়ালে
ফুটল আবার কেয়া যে।
গাঁয়ের নামটি হাটখোলা,
বিষটি বাদল দেয় দোলা,
রাখাল ছেলে মেঘ দেখে,
যায় দাঁড়িয়ে পথ-ভোলা।
মেঘের আঁধার মন টানে,
যায় সে ছুটে কোন খানে,
আউশ ধানের মাঠ ছেড়ে
আমন ধানের দেশ পানে।

আবার কখনো ডেকে ডেকে যান ঘুমন্ত জাতির কান্ডারীদের..

রাত পোহাবার কত
দেরি পাঞ্জেরি?
এখনো তোমার আসমান
ভরা মেঘে?
সেতারা, হেলাল
এখনো ওঠেনি জেগে?
তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড়
টানি ভুলে;
অসীম
কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।
রাত পোহাবার কত
দেরি পাঞ্জেরি?
দীঘল রাতের শ্রান্তসফর শেষে
কোন দরিয়ার
কালো দিগন্তে আমরা পড়েছি
এসে?
এ কী ঘন-সিয়া জিন্দেগানীর
বা’ব
তোলে মর্সিয়া ব্যথিত দিলের
তুফান-শ্রান্ত খা’ব
অস্ফুট হয়ে ক্রমে ডুবে যায়
জীবনের জয়ভেরী।
তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড়
টানি ভুলে;
সম্মুখে শুধু অসীম কুয়াশা হেরি।
রাত পোহাবার কত
দেরি পাঞ্জেরি?

কবি ফররুখ আহমদ খুব
সহজ সরল জীবনযাপন করতেন।
তাঁর পোশাক পরিচ্ছদের মধ্যে ছিল
মধ্যে দুটো পায়জামা,
দুটো পাঞ্জাবি, একটি গেঞ্জি,
একটি শেরওয়ানি, এক
জোড়া স্পঞ্জের স্যান্ডেল
ইত্যাদি। তিনি ছিলেন অত্যন্ত
ধার্মিক। তিনি সব সময় পাঁচ ওয়াক্ত
নামাজ আদায় করতেন। ইচ্ছাকৃত
ভাবে কখনো নামাজ
কাযা করেননি।নিজের
অবস্থানে শক্ত
থাকা স্পষ্টভাষী ব্যক্তিত্ববান
ফররুখকে সহ্য
করতে হয়েছে তদানীন্তন মুজিব
সরকারের অত্যাচারের স্টীম
রোলার।
মুক্তিযুদ্ধের পরপরই ফররুখের
চাকরী কেড়ে নেয়া হয়।
বিনা চিকিৎসায় মারা যায়
ফররুখের মেয়ে। বিষয়টি নিয়ে আহমদ
ছফার একটি হৃদয়স্পর্শী প্রবন্ধ আছে।
তৎকালীন গণকন্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত
হয়েছিল এটি।
মুজিব সরকারের
কোপানলে পড়ে ফররুখের শেষ জীবন
কাটে আর্থিক দৈন্যতা ও
নানা নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে।

কাব্যগ্রন্থ

সাত সাগরের মাঝি
(ডিসেম্বর, ১৯৪৪)
সিরাজাম
মুনীরা (সেপ্টেম্বর, ১৯৫২)
নৌফেল ও হাতেম (জুন,
১৯৬১)
মুহূর্তের কবিতা (সেপ্টেম্বর,
১৯৬৩)
ধোলাই কাব্য (জানুয়ারি,
১৯৬৩)
হাতেম তায়ী (মে, ১৯৬৬)
নতুন লেখা (১৯৬৯)
কাফেলা (অগাস্ট, ১৯৮০)
হাবিদা মরুর
কাহিনী (সেপ্টেম্বর, ১৯৮১)
সিন্দাবাদ (অক্টোবর, ১৯৮৩)
দিলরুবা (ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪)

শিশুতোষ গ্রন্থ

পাখির বাসা (১৯৬৫)
হরফের ছড়া (১৯৭০)
চাঁদের আসর (১৯৭০)
ছড়ার আসর (১৯৭০)
ফুলের জলসা (ডিসেম্বর,
১৯৮৫)

পুরস্কার

১৯৬০ সালে ফররুখ আহমদ
বাংলা একাডেমী পুরস্কার
লাভ করেন । কবি ফররুখ আহমদ
১৯৬৫ সনে প্রেসিডেন্ট পদক
"প্রাইড অব পারফরমেন্স" এবং
১৯৬৬ সালে পান
আদমজী পুরস্কার ও
ইউনেস্কো পুরস্কার । ১৯৭৭ ও
১৯৮০ সালে তাঁকে যথাক্রমে মরণোত্তর একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×