somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুয়েতে আমাদের দুতাবাস ও তার রাজ কর্মচারীবৃন্দ

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার জানামতে বিদেশে যেকোন দুতাবাসের কাজই তাদের দেশের লোকদের বিভিন্ন সমস্যা দেখাশুনা থেকে সবধরনের সাহায্য-সহযোগীতা করা। সাধারন মানুষদের সাথে থাকবে ভদ্র এবং সহযোগীতামূলক আচরন। (যাদের ট্যাক্সের টাকায় কর্মচারীদের বেতন আসে।)কিন্তু দেখা যাচ্ছে এইসব কর্মচারীদের সুসম্পর্ক শুধু কিছু ব্যাবসায়ী,বিভিন্ন দলীয় নেতা এবং যারা উচ্চবেতনের চাকুরীজীবি তথা প্রভাবশালী। তাইতো বিভিন্ন দলীয় প্রোগামে এদের বিভিন্ন হোটেলে দেখা যায় ফিতা কাটতে বা প্রধান অতিথী হতে। কিন্তু যেখানে বিরাট সংখ্যক শ্রমিক যারা নিম্নআয় করে থাকে,(স্বভাবতই কাপড়-চেহারা রুক্ষ) সহ সাধারন লোকেরা যে সহযোগীতার বদলে যেধরনের ব্যাবহারের শিকার হন,তা মধ্যপ্রাচ্যে চাকুরীরত যেকোন শ্রমিককের কাছেই খোজ নিলে জানা যাবে। ধমক,খারাপভাষা থেকে ধাক্কা দেওয়া পর্যন্ত এদের জন্য যায়েজ। কারন এইসব কর্মচারীদের জানা আছে এই বিরাটসংক্ষক লোকদের সমস্যা সমাধান একমাত্র দুতাবাসই করতে পারে। পাসপোর্ট বানানো,রিনিও,ড্রাইভিং লাইসেন্স সত্যায়িত থেকে বিয়ে কাবিন পর্যন্ত। পাসপোর্টে যদিও রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরসহ নির্দেশ থাকে যে বাহককে যেকোন ধরনের সহযোগীতা দিতে দুতাবাসগুলি বাধ্য। কিন্তু আমাদের দুতাবাস কর্মীরাতো বাংলাদেশী না। তারা ভিনগ্রহের বা অতি উচ্চ পরিবারের সদস্য। তাই তো সাধারনতঃ যারা যায় "বিশেষ শ্রেনী ছাড়া" তাদের সাথে ব্যাবহারতো দুরের কথা কথা যে বলে তাই যেন যথেষ্ট।
এতক্ষন তো ভুমিকায় ছিলাম,এবার আসি নিজের কথায়। আমার আসার প্রথমদিকেই এই অভিজ্ঞতা হওয়াতে আমি পারতপক্ষে দুতাবাসের দিকে পা বাড়াতাম না। পাসপোর্ট বানানো বা রিনিও দালালদের দিয়েই করাতাম। ৫১০ টাকা বেশী লাগতো। তবুও অযথা হয়রানী আর অপমান থেকে বাচার তাগিদেই এই পথ বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু সেদিন আর পারলাম না প্রোয়োজনের তাগিদেই নিজে গেলাম। শুধু দুতাবাসের একটা সীল লাগবে। বাংলাদেশের নোটারী পাবলিকের সাইন-সীল,বিচার বিভাগীয় সত্যায়ীত সাইনসীল,বাংলাদেশের কুয়েতী দুতাবাস সহ উভয়দেশের পররাষ্ট্র দফতরের সাইন-সীল সবই আছে শুধু নেই বাংলাদেশ দুতাবাসের। যাইহোক এরজন্যই গেলাম। লাইন শেষ হতেই আমার পেপার কাউন্টরের "ভদ্রলোকের" হাতে দিয়ে জানালাম কি চাই। উনি নেড়ে-চেড়ে আরেকজনের হাতে দিয়ে বললেন সেখানে যান। এই "ভদ্রলোক"ও জনতে চাইলেন কি চাই? জানালাম সবকিছু আছে শুধু আপনাদের একটা সীল লাগবে। উনি বললেন ঠিক আছে তবে আপনি যদি পিছনের অফিসে আরেক কর্মচারী আছে তার অনুমতি আনেন তাহলে ভাল হয়। গেলাম সেখানে। কাগজ দেখে উনি হঠাৎ করেই রেগে চিরবিড়িয়ে ফোন করে কাউন্টার প্রথমব্যাক্তির তর্ক-বিতর্ক করে কাগজপত্র আমার হাতে দিয়ে বললেন আমি শুধু মৃতদেহের বেলায় সাইন করি আপনি ফেরত যান। আবার কাউন্টারে লাইন শেষ করে পেপার জমা দেওয়ার পরে "ভদ্রলোক" জানতে চাইলেন ওহিদ সাব কি বললেন? দ্বিতীয় "ভদ্রলোক" ঠিক যা বলেছেন তাই জানালাম। উনি কম্পিটারে এন্ট্রি করে তিন দিনার ফি নিয়ে সমস্ত কাগজ ফিরিয়ে দিচ্ছেন দেখে আমি জানতে চাইলাম সীল কোথায়? জানালেন সেটা তার কাজ না। প্রশ্ন করতেই আবার পিছনে পাঠালেন।সালাম দিয়ে টেবিলের সামনে দাড়াতেই জিজ্ঞাসুনেত্রে তাকাতে সব খুলে বললাম। আবার প্রথম ব্যাক্তির সাথে তর্ক-বিতর্কের পর কেউ কাউকে পরাজিত করতে না পেরে সমস্ত দোষ আমার ঘাড়ে ফেলে আবার কাউন্টারে ফেরত। ততক্ষনে বুঝে ফেলেছি আমার কাজের পরিনতি কি হবে। যাইহোক কাঊন্টারের "ভদ্রলোক"ও আমাকেই দোষী করলেন। জনে চাইলাম এখন কি করা? জানালেন আমার কাগজের সীল-ছাপ্পড় যা আছে তার মেয়াদ শেষ। আবার নুতন করে সব করতে হবে,যা জীবনে প্রথম শুনলাম।বুঝলাম "ঝানু লোক" জবাবে বললাম আপনার থেকে বেশী বেতন এবং সন্মানজনক চাকুরী করেও লোকদের অনেক বেশী সাহায্য করে থাকি। আর বের হওয়ার পথে মহামান্য রাষ্ট্রদূতের মার্সিডিস গাড়ী দেখে ভাবলাম এদের পিছনে কিসের এতো জোর? সমাজিকতো নাই, কারন আমি নিশ্চিত বংশের মাঝে এরাই কম-বেশী শিক্ষিত হয়ে ঘুষ দিয়ে পররাষ্ট্র দফতরের মাধ্যমে বিদেশে বিভিন্ন দুতাবাসে চাকুরী। কারন আম গাছে কাঁঠাল ফলে না।। তা না হলে দুতাবাস প্রাপ্ত ফ্লাটের তিনরুমই ভাড়া দিয়ে ড্রয়িংরুমে নিজে থাকতো না।।
বিঃদ্রঃ কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে আমার এ লেখা নয়, তবু কারো আত্মীয়-স্বজন হয়তো চাকুরী করেন,তাদের জন্য আমি দুঃখিত।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×