somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাহিত্য কি? সাহিত্য কেনো? সাহিত্য কোথায়?

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোন কোন মানুষ সাহিত্যে কি সংজ্ঞা দিয়েছেন তা দিয়ে আমি সাহিত্যকে বিচার করতে জানি না।

আমার জানামতে, সাহিত্য হল কথা বলা। জাস্ট এটুকুই, “সাহিত্য হল কথা বলা”। এবার যদি আপনারা আর একটু বড় করে বলতে বলেন তাহলে বলবো, “সহিত্য হলো লেখা বা অন্যকোনো মাধ্যমে কথা বলা”

তাহলে কি পৃথিবীর সবাই সাহিত্যিক?

অবশ্যই। সবাই সাহিত্যিক। যারা বোবা তারাও সাহিত্যিক তারা মনে মনে কথা বলে।

বড় দুঃখ হচ্ছে সাহিত্য সাহিত্য কবি কবি করতে করতে মানুষ আজ কাজের কথা বলা মানুষদের বড় চুল, বড় গোঁফ বা বড় দাড়ী-গোঁফওয়ালা কিছু প্রাণী থেকে দুরে চলে যাচ্ছে। সাহিত্য দারি, চুল বা গোঁফের মধ্যে থাকে না। সাহিত্য থাকে মনে। মন থেকে ভাব কথা হয়ে লেখা হয়ে বেড় হয়ে অন্যের কাছে নিজের অস্তিত্বকে চিনতে শিখায়। আমরা সাহিত্যিকদের জ্ঞাণী ভেবে “ওসব আমি বুঝবো না” বলে শ্রদ্ধা নামক বাহানায় অন্যদিকে কোথাও চলে যাই।

ভাইজান!!! রবীন্দ্রনাথ যদি দাড়ি মোছ কামিয়ে চুলে স্পাইক কাট মেরে তারপও লিখতেন তাহলেও তিনি রবীন্দ্রনাথই থাকতেন। রবিন্দ্রনাথ থাকতেন ঐ বিশাল বড় দাড়ি-গোঁফওয়ালা ব্যাটার মনে। সব সাহিত্যিকই তাই। যার ভাষা ও ভাবের সমন্বয় সুন্দর সে সুসাহিত্যিক আর যার ভাষা আছে কিন্তু স্বভাব ভালো না বলে শুধু শুধু খারাপ খারাপ কথা বলে তিনি কুসাহিত্যিক।

আমরা আজ এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি যে মন খুলে একখানা কবিতা লিখতেও সাহস পাই না। অন্যরা যা তা বলে। আরে ভাই পরিবারই যদি অবজ্ঞা করে তাহলে ঐ মিষ্টি সুরের পাখি গানে ঝর তোলার ক্ষমতা থাকতেও চুপচাপ ভিরু ভিরু ভাবে কোনো রকমের লজ্ঝা সরম নিয়ে মরে যারার চেষ্টা করে। এখন থেকে আর কারও এই মরে যাওয়া চলবে না। এখন থেকে সবাই বেঁচে থাকতে চেষ্টা করবেন তার ভাব প্রকাশের মাধ্যমে। এই ভাব বিনিময় না হলে মানুষের স্বভাব কি করে ভালো হবে?

আমাদের বিশ্বসাহিত্যকে অনেক কিছু দেবার আছে। কোনো দিনও কথা বলার প্রয়োজন শেষ হয়ে যায় না। বানান ভুল হয়? অন্যরা খারাপ বলে? বন্ধু, আত্মীয়রা খারাপ নজরে দেখে? কবি হয়ে কবিতা লিখছেন দেখে আপনার পাশের বাড়ীর খালাম্মা তার মেয়েটিকে নিয়ে দুঃচিন্তায় ভুগছেন?

সব বাঁধা রোধ করে আজ আপনাকে সামনে এগোতে হবে। আগে অন্যরা কি বলে গেছেন তা পড়ুন। উপলব্ধি করুন। সাথে সাথে লেখাও শুরু করুন। দেখবেন আপনি অনেক কিছু শিখে গেছেন।

কি লিখবেন?
সবার আগে ডায়রী বা অটোবায়গ্রাফি। এক কলমে তাতে ক্বলবে ধার এসে যাবে। নতুবা ব্লগ বা অন্য যে কোনো স্থায়ী মাধ্যমে। আমাদের দেশে অটোবায়গ্রাফি লেখার অভ্যেস খুব কম। অটোবায়গ্রাফির প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশী। আপনার যদি কোনো বিশেষ বিষয়ে ইনস্টান্ট জানার ইচ্ছে। যেমন ধরুন অমুক দেশের রাজধানীর নাম কি? আয়তন কতো? তাহলে তা ইন্টারনেট বা বাসায় ফেলে রাখা দু’একটি বই থেকে অথবা কাউকে ফোন করেও জানতে পারবেন। এই জানা সাহিত্য না। এই জানা হলো তথ্য। তথ্য সাহেব একা আপনার মনকে বিকাশিত করার যোগ্যতা রাখেন না।

আমাদের মধ্যে কুসংস্কার হলো যে সাহিত্য পড়লে বাচ্চারা প্রেমিক হয়ে যাবে। আবোল তাবোল পথে হাঁটবে। ভাভুক হয়ে যাবে। আতেল হয়ে যাবে। যে সমাজে পড়লেই যদি এতো কিছু হয়ে যেতে হয় তাহলে বুঝুন লিখতে গেলে কি পরিমান ঠেলা খেতে হবে। এখন থেকে আর ঠেলা খাবেন না বরং আগের সব ঠেলা ফেরৎ দিয়ে দিন। দেখবেন আমাদের এই সমাজ আরো সুন্দর হয়ে গেছে।

সাহিত্য মানুষের মধ্যে যে জগত তৈরি করে দিতে পারে তা অন্য কোনো মাধ্যমের ভিউয়ার, অডিয়েন্স হয়ে এমন জগত তৈরি করা যায় না। মনের মধ্যে যদি জগত না থাকে তাহলে বাইড়ের জগত রাঙাবেন কি করে?

সব বিষয়ে সাহিত্য হয়। অংক, সমাজ, রসায়ন, গ্রামার, খেলা, প্রেম, পাগলামী ইত্যাদি ইত্যাদি সবকিছু নিয়েই সাহিত্য রচনা করা সম্ভব। আর এগুলো পড়লে বাচ্চাদের মেধা বিকাশিত হবেই। যার মধ্যে জ্ঞানের আলো থাকে তিনি কখনও নিঃসঙ্গতায় ভোগেন না। বরং নিঃসঙ্গতা কে অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে নিজে ফায়দা নিতে পারেন। সব কুট-কৌশল ত্যাগ করে আমাদের সামনে এগোতে হবে।

ভালো করে দেখুন বন্ধু! আজ যারা ধনী। কত সুন্দর প্রসাদ সম অট্টালিকায় থাকেন। কত শত ভালো ভালো খাবার খায়। তাদের বাসা সুন্দর বুকসেলফে কতো কতো বই। তারা তো বড়লোক তাই অনেক বই কেনার টাকা আছে তাই বই কিনে বিলাসিতা ও স্টাটাস দেখাচ্ছে। বইগুলো চকচক করে। কিসুন্দর করে লেখা উপরের প্রচ্ছদের নাম। “সঞ্চিতা----কাজী নজরুল ইসলাম” দেখা যাচ্ছে।

নজরুল তো ওদের মতো এতো টাকা পয়সার মালিক ছিলেন না। আমার গুরু নজরুল তো চির দ্বীন বেশে প্রেমিকা হারা, দুঃখ, গ্লানি, ক্ষুধা নিয়ে আমাদের স্বর্গের ও মানব মুক্তির পন রেখে গেছেন। আজ তো সেই অভিমানী বাঁধনহারা নজরুল নামক মানুষটি আমাদের সমাজে বেঁচে নেই তারপরও কেনো মানুষ কবিদের, সাহিত্যিকদের, প্রেমিকদের কু’নজরে দেখবেন?

আপনি কি কবিতা লিখবেন?
লিখুন। শুরু করুন। লেখা শুরু করুন দেখবেন আপনার ভিতরের কবি আপনা আপনি আপনাকে ভাষা দিয়ে দিবে। তিনি আপনাদের ফিরাতে জানেন না। আপনারা জগন্নাথের কাছে যা চাইবেন তাই আপনাদের দেয়া হবে। যদি কথা চান কথা। যদি সুর চান সুর। আর যদি ওদুটো একসাথে চান তাহলেও আপনি আপনার গানের তালে তালে নভমন্ডলে বিচরন করতে পারবেন। কবিতার ভেদাভেদ করবেন না। কবিতা মানুষের মনের ভাব। হোক না ছন্দহীন। তাতে কি? ভাব থাকলেই কবিতা হবে, ছন্দ লাগবে না। আবার হাজার ছন্দ থাকলেও যদি ভাব না থাকে তাহলে তো ওটা ছন্দও না আবার কবিতাও না। কবিতাদের মধ্যে কিন্তু সবল আর দুর্বলও আছে কিন্তু। সবাইকেই জানতে হয়। আমাদের সমাজে যেমন সব মানুষের বাস ঠিক তেমনি সব শ্রেণীপেষার জন্যই বিভিন্ন ভাব প্রকাশ করতে হয়। গরীব মায়ের সন্তান ও তার মায়ের কাছে রাজা। ঠিক কবির কাছে তার কবিতাই সেরা তাই বলে তিনি কিন্তু তার থেকে ভালো কে ভালো বলতে দ্বিধা বোঝ করেন না। তারপরও ভাই! যার নিজের জিনিস তার কাছে তো বড় মনে হবেই।

সবাই কি আর রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের মতো নিজের সবটুকু উজার করে দিতে জানে বলুন? ত্যাগ যত বড় ভাব ততো বড়। স্বভাব যত ভালো ভাবও ততো ভালো। কবিতা হলো নদীর মতো ইচ্ছে করলেই আপনি আপনার মতো খনন করতে পারবেন না। আবার খনন করতে চাইলেও পাড় ভেঙে চুরে একাকার। সেই নদীর পাড় ঠিক করতে গিয়ে এক পাইলিং দাও নতুবা অন্য পারের চর জেগে ওঠার অপেক্ষায় থাকো। কবে চর জেগে উঠবে এমন ভেবে বসে থাকলে তো আর কবিতাই লেখা হবে না। খাল কিন্তু মনের মতো করে কাঁটা যায়। তাই ছড়া গুলো খালের মতোই হয়। যাই হোক না কেনো মনের ভাব মনে রেখে কাজ কি তারচেয়ে দু’একজন হলেও দেখুক। “বিদ্রহী” এমন এক কবিতা যার মধ্য সব কালের, সব রকম ভাব আছে। নিশ্চই পড়বেন।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×