প্রেমের টান
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর উত্তরবঙ্গের গ্রামের বাড়ি থেকে মিলা ও মাসুদ একত্রে বের হলো।
বাস স্ট্যান্ডে দু’জনকে একত্রে দেখে যা আন্দাজ করার তা করে নিয়ে এলাকার এক বড় ভাই স্নেহের বশে ইয়ার্কি করে মিলাকে বললো, এক সাথে যাওয়া হচ্ছে? ঠ্যাং ভেঙ্গে দিব কিন্তু।
মিলা তার কথা শুনে খিল খিল করে হেসে উঠলো।
প্রথমে ওরা ঢাকা গেল।
সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে গাছের ছায়ায় বসে সুখ-দুঃখের কথা বললো। ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনলো।
মিলার সুন্দর, লাবণ্যময় মুখের দিকে চোখ রেখে এক সময় মাসুদ বললো, মিলা, আমার মা তোমারও মা হবে। আমার বাবা হবে তোমার বাবা। মাসুম হবে তোমার দেবর। এ কথা ভাবলে কেমন লাগে?
মাসুদের চোখের দিকে তাকিয়ে মিলার মুখাবয়ব লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো। মুখ লুকানোর ব্যর্থ প্রয়াসের মাঝে হেসে বললো, আমার লজ্জা করে।
চাঁন খার পুলের ওখানে নিরব হোটেলে দুপুরের খাবার খেল ওরা।
ঢাকায় বেশী সময় পার করার জন্য দেরী হয়ে গেল। তাই গাবতলী গিয়ে তাড়াহুড়া করে মানিকগঞ্জের যে গাড়িটি উপস্থিত মত সামনে পেল সেটাতেই সন্ধ্যার সময় ওকে তুলে দিল মাসুদ। মিলা মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজে অনার্সে পড়ে।
গাড়িতে উঠে মিলা জানালার কাছে বসে মাসুদের দিকে তাকালো। বিদায় জানাতে গিয়ে মাসুদের চোখ দুটো ছল ছল করে উঠলো। সে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রইলো। গাড়ি ছেড়ে দিলে ধীরে ধীরে মিলার মুখটা দূরে চলে গেল। গাড়িটা চোখের আড়াল না হওয়া পর্যন্ত সে রাস্তায় দাঁড়িয়েই রইলো।
বিষণ্ণ মন নিয়ে মাসুদ তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য গুলিস্তানের গাড়ির দিকে পা বাড়ালো।
হঠাৎ মাসুদের মনের মধ্যে খচখচ করে উঠলো। ছ্যাঁত করে উঠলো বুকের ভিতর। একটা বিষয় মনে পড়ায় দুশ্চিন্তায় নিমজ্জিত হলো। কারণ মিলা গাড়িতে চড়ার সময় গাড়ির লোকরা কেমন যেন চাতুর্যপূর্ণ আচরণ করছিল। তাছাড়া মানিকগঞ্জ পৌঁছুতে বেশ রাত হয়ে যাবে। সে একা যাচ্ছে। মিলা একজন মেয়ে। মাসুদ তাকে ভালোবাসে। ওর কোন বিপদ মানে তো মাসুদেরও বিপদ। মাসুদ স্থির থাকতে না পেরে দ্রুত মানিকগঞ্জের একটা ভালো স্পিডি গাড়িতে উঠলো যাতে রাস্তায়ই মিলার পুরনো ধরণের গাড়িটা ধরে ফেলতে পারে।
মাসুদ ছটফট করতে থাকলো আর সামনের দিকে তাকাতে লাগলো যে মিলার গাড়িটা দেখা যায় কিনা। খুব উত্তেজনা ও উদ্বিগ্নতা অনুভব করলো যে গাড়িটা ধরতে পারবে তো?
অবশেষে নবীনগরের ওখানে মিলার গাড়িটার নাগাল পাওয়া গেল।
মাসুদ গাড়িতে গিয়ে উঠলো। মিলা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হলো মাসুদকে দেখে।
জিজ্ঞাসা করলো, কি ব্যাপার তুমি?
মাসুদ লজ্জায় বলতে পারলো না যে সে তাকে ঘিরে উদ্বিগ্নতার কারণেই এসেছে।
বললো, তোমাদের কলেজটা তো কোনদিন দেখি নি। তাই ভাবলাম যে কলেজটা দেখে আসি।
অথচ মাসুদ চিন্তাও করলো না যে মানিকগঞ্জ গিয়ে মিলা তার হোস্টেলে থাকবে কিন্তু সে থাকবে কোথায়?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=
©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ফিরে দেখা - ১৩ মে
১৩ মে ২০০৬
দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাঁচা আম পাড়ার অভিযান
গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন