দেশে ‘সহিংসতা ও অস্থিরতা’ চায় না বলেই বিএনপি কঠোর কোনো কর্মসূচি দিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন।
Published : 15 Feb 2014, 03:17 PM
শনিবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আমরা বলতে চাই, এ সরকারকে চলে যেতে হবে। অবিলম্বে চলে যেতে হবে। আমরা দেশে সহিংসতা ও অস্থিরতা চাই না বলে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া চুপ করে বসে আছেন। নেত্রী ডাক দিলে এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।”
বিএনপি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে লাগাতার হরতাল-অবরোধ শুরু করলে সহিংসতায় উসকানির অভিযোগে দলের অধিকাংশ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এসব মামলায় বহু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়, বাকিদের অধিকাংশই গত নভেম্বর থেকে আত্মগোপনে চলে যান।
বিএনপিহীন ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকারগঠন করে আওয়ামী লীগ। এরপর দলের অধিকাংশ শীর্ষ নেতাকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়।
নির্বাচনের পর বিএনপি ঢাকায় সমাবেশ করলেও নতুন করে আর সারা দেশে কোনো হরতাল-অবরোধ দেয়নি। একবার কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দিলেও অনুমতি না পাওয়ায় রাজধানীতে সে কর্মসূচিও পালন করতে পারেনি।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসেনি। তারা সংবিধানপরিপন্থী একটি সরকার। এখন যতোই তারা আকাশে উড়ে বেড়াক না কেন, তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই।”
এ সরকারকে হটাতে বিএনপি শিগগিরই আবার মাঠে নামবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘অল কমিউনিটি ফোরাম’-এর উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ভূমিকা‘ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে সম্প্রতি কারামুক্ত সুপ্রিম কোর্টে বার কাউন্সিলের এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের সংবিধানে আছে, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবে। কিন্তু আমরা কি দেখলাম। বিনা ভোটে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। অন্য ১৪৭ আসনে ৯৫ ভাগ ভোটার ভোট দিতে যায়নি। ওই কথিত সংসদে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই।
একে ‘সংবিধান লঙ্ঘন’ আখ্যায়িত করে এজন্য একদিন সরকারকে ‘বিচারের মুখোমুখি’ হতে হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।
সরকারের জনসমর্থন নেই দাবি করে এই আইনজীবী নেতা বলেন, “পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান থেকে সরকার গণভোটের বিধান উঠিয়ে দিয়েছে। ওই বিধান থাকলে গণভোটে সরকারের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের দাবি উঠত।”
‘অল কমিউনিটি ফোরাম’-এর উপদেষ্টা আশরাফ উদ্দিন বকুলের সভাপতিত্বে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক সাংসদ সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।