অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার মজুদ ১৯ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে, যা পাকিস্তানের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
Published : 19 Feb 2014, 04:53 PM
রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স প্রবাহের ইতিবাচক ধারা রিজার্ভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহা ব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বুধবার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার।
মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ ১ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। আর গত সাড়ে চার বছরে রিজার্ভ বেড়েছে ৯ বিলিয়ন ডলার।
ছাইদুর বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ এই মাইল ফলক অতিক্রম করল। এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় সাত আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।”
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কোষাগারে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।
মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধের আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের উপরে থাকবে বলেই তিনি আশা প্রকাশ করেন।
২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের ৭ মে তা ১৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। আর গত ১৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের মত বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় ১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান রিজার্ভ সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারতের রিজার্ভ ২৭৫ বিলিয়ন ডলার; আর পাকিস্তানের ১০ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানামুখী পদক্ষেপের ফলে প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে অর্থ পাঠাচ্ছেন, ফলে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে।”
এছাড়া আমদানি ব্যয় কমে আসা, রপ্তানি উৎসাহিত করতে নগদ সুবিধা অব্যাহত রাখা, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের পরিমাণ ৮০ কোটি ডলার থেকে এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা এবং টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার পদক্ষেপও সুফল দিয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ১২৫ কোটি ডলারের বেশি রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
আর চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ১৪ দিনে দেশে এসেছে ৬৫ কোটি ডলারের বেশি রেমিটেন্স।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে প্রাবাসী বাংলাদেশিরা ১৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন, যা মোট জাতীয় আয়ের (জিএনআই) ১১ শতাংশের মতো।
অবশ্য অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের (জুলাই-জানুয়ারি) হিসাবে গতবারের চেয়ে এ অর্থবছরে ৮ শতাংশ কম রেমিটেন্স এসেছে। তবে এই সময়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।