somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাদীসের নামে জালিয়াতি গ্রন্থের কিছু দুর্বলতা

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসছে ২৩ ফেব্রুয়ারী দি এ টিম মাঠে ইসলামী সেমিনারের আয়োজন চলছে। ‘ইসলামী জ্ঞান চর্চা মিশন’-এর উদ্যোগে এ সেমিনারে ‘কুরআন সুন্নাহ’ শীর্ষক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর আলোচনা রাখবেন আমন্ত্রিত বক্তাগণ। কুরআন ও সুন্নাহকে রেখে গেছেন আখেরি নবী মহাম্মদ (স) তাঁর উম্মতের জন্য। তিনি মদীনার বুকে সমাজ ও শাসন ব্যবস্থা, অর্থনীতি যুদ্ধনীতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজ থেকে ১৪শ বছর পূর্বেকার নিয়মনীতি কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে, বিভিন্ন বক্তার মুখ নিসৃত ভাষণে আমরা জানতে পারব।
সেমিনারে আমন্ত্রিত হয়েছেন প্রধান আলোচক হিসেবে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ্য সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর। তিনি একজন লেখক। তিনি নামীয় হয়েছেন তাঁর একটি গ্রন্থের জন্য, যে গ্রন্থের নাম হাদীসের নামে জালিয়াতি। এ গ্রন্থে কোন কোন হাদীস জা’ল বা বানাওটি তা সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। আবার তাঁর অনেক উক্তিতে দুর্বলতাও রয়েছে বেশ কিছু। কিন্তু তার এ গ্রন্থে কুরআন সুন্নাহ আকড়ে ধরার জন্য কোন হাদীস দেখাননি। আশা করা যায় আসছে সেমিনারে তিনি উক্ত বিষয়ের উপর জোরালো ভুমিকা রাখবেন। তিনি প্রচলিত ৫ কলেমার বিরোধিতা করে বলেছেনÑ প্রকৃত পক্ষে একমাত্র কালিমা শাহাদতই হাদীস শরীফে ঈমানের মুল বাক্য হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ কথা বলার পরই আবার বলেছেন কালিমা তাইয়্যিবার দুটি অংশ পৃথক ভাবে কুরআন কারীমে ও হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে। উভয় বাক্যই কুরআনের অংশ এবং ঈমানের মুল সাক্ষ্যের প্রকাশ। উভয় বাক্যকে একত্রে বলার মধ্যে কোন প্রকারের অসুবিধা নেই। ড: সাহেব প্রথমে কালিমা শাহাদতকে সমর্থন করে কার ভয়ে শেষ পর্যন্ত কালিমা তাইয়্যিবায় কোন প্রকার অসুবিধে নেই বলে বসেছেন কেন তা জিজ্ঞাস্যই বটে। ড. সাহেব রছুল সম্পর্কে তাঁর গ্রন্থের ২৮৯ পৃষ্ঠায় লিখেছেন যে, রসুলুল্লাহ (স) কে হাযির নাযির হওয়ার দাবি করা সঠিক নয় যারা দাবি করেন তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, রসুলুল্লাহ (স) সর্বত্র বিরাজিত হতে পারেননা। কিন্তু রসুলুল্লাহর ক্ষেত্রে উপরক্ত মন্তব্য সঠিক করলেও আল্লাহর সংগে তুলনা করতে গিয়ে বলেছেন যে, আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান, এই গুণটি আল্লাহর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ড. সাহেবের আল্লাহর ক্ষেত্রে এ তুলনা সঠিক হয় নি কারণ আল্লাহ তায়ালা আরশের উর্ধে অর্থাৎ সমস্ত সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব থেকে পৃথক অস্তিত্ব।
ড. সাহেব ওলীগনের সঠিক পরিচয় দিয়ে নির্ধারিত ওলী আওলিয়া হওয়ার বুঝ নিরসন করেছেন। পারলৌকিক জীবন বিষয়ক আলোচনায় তিনি সিররুল আসরার কিতাবের উদ্ধৃতি দিতে গিয়ে হোচট খেয়েছেন নবীগণের ব্যাপারে। যেমন নবীগণ ও ওলীগণ তাদের কবরের মধ্যে সালাত আদায় করেন, যেমন তারা তাদের বাড়িতে সালাত আদায় করেন। ড. সাহেব একথার প্রেক্ষিতে বলেছেন আমরা ইতোপুর্বে দেখেছি যে, নবীগণের ক্ষেত্রে হাদীসটি সহিহ তবে এখানে ওলীগণ শব্দটির সংযোগ বানোয়াট।
ড. সাহেবের এ কথায় বুঝা যায় যে, নবীগণ মৃত্যুর পরেও নামায পড়েন তাদের কবরে। প্রশ্ন জাগে মৃত্যুর পরে নবীগণই বা কি করে বন্দিগী করবেন? কারণ মৃত্যুর পরে তো আলোমে বরযখে সকলেই নিদ্রায়িত থাকেন। অতএব, কিয়ামতের সিঙ্গা ফুক দেওয়ার আগে কোনো মানুষই তো জাগ্রত থাকতে পারেন না। নামাজ পড়তে হলে আযান-একামত দিতে হয়, পানি দিয়ে অজু করতে হয়।
ড. সাহেব নবী সংক্রান্ত বিষয়ে সুরা মায়েদার একটি আয়াতের ব্যাখ্যায় দুবর্লতা দেখিয়েছেন। তিনি রসুলুল্লাহকে মাটির মানুষ বলার প্রশংসনীয় উক্তি রেখে বলেছেন যে, আমরা বলতে পারি কুরআন ও হাদীসের নিদের্শনা অনুসারে নি:সন্দেহে রাসুলূল্লাহ (ছ) মানুষ। একথা বলার পর আবারও বলেছেন তবে উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় মানব জাতির পথ প্রদর্শনের আলোক বর্তিকা হিসেবে তাকে নুর বলা যেতে পারে। পৃ: ২৬৪
ড. সাহেব যে মানুষ প্রমান করার পরও রসুলুল্লাহ (স) কে আলোক বর্তিকা বলা যেতে পারে বলে উক্তি করেছেন, তাতে কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত আসেনি।
সেই যাই হোক, ড. জাহাঙ্গির ও আরোও যেসব আমন্ত্রিত বক্তা আসছেন তাঁরা কুরআন সুন্নাহ প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান যুগে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় তার উপর ব্যাপক আলোচনা রেখে শ্রোতাদের সচেতন করে তোলার সহায়ক হবেন। কারণ কোরআন সুন্নাহর পরিধি ব্যাক্তি থেকে পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র পর্যন্ত সু বিস্তারিত। আমাদের দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিমদেশ। জাতির জনক শেখ মজিবর রহমান এ ঘোষনা দিয়ে কোরআন ছুন্নাহ প্রতিষ্ঠার পথ সৃষ্টি করে গেছেন। ইসলামী সেমিনারের আলোচকগণ সেই নিরিখে আলোচনা রেখে সেমিনারকে সাফল্য মন্ডিত করবেন। আমরা সকলেই যাতে আলোচকগণের জ্ঞানগর্ভ আলোচনা হতে কুরআন সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার মত সঠিক বুঝ ও সিদ্ধান্ত নিয়ে রছুল (ছ)-এর আদেশ মান্য করার সুযোগ গ্রহণ করতে পারবো বলে আশা করি।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×