somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিল্লীর ধর্ষিত তরুণী: তাঁর এই চলে যাওয়া, ধর্ষকদরে নপুংসক করে দেওয়ার দাবি এবং আমার অপরাধবোধ...!!!

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তাঁর এই চলে যাওয়া মানে চিরদিনের প্রস্থান নয়, সমগ্র ভারতসহ উপমহাদেশে একটা নাড়া দিয়েছে নারীর নিরাপত্তায়...

বেঁচে থাকার নিদারুন এই চেষ্টার পর তার এমন চলে যাওয়া সত্যিই আমাদের অপরাধী করে দেয়। সহজেই মেনে নিতে কষ্ট হয়, ভয়ঙ্কর ও নিমর্ম এমন নির্যাতনের পরও মেয়েটি বেঁচে থাকার জন্য তীব্র লড়াই করেছিল। কিন্তু জীবনের কাছে যেন সে পরাজিত হয়ে গেল। এটা সত্যি যে, এমন অবস্থায় অনেকেই বাঁচতে চায় না। তীব্র অপমানবোধে এমন অনেকেই বরং মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে নেয়, স্বেচ্ছায়। এমনটা আমরা ভারত কিংবা বাংলাদেশে অনেক দেখেছি, দেখছি। এদিক থেকে দিল্লীর মেডিকেল ছাত্রী সবার থেকে আলাদা। সে বাঁচতে চেয়েছিল নিজে, বাঁচাতে চেয়েছিল আরো অনেক তরুণীকে, যারা সমাজের ঘৃণ্য নরপশুদের লালসার শিকার হয় প্রতিনিয়ত, ঘরে কিংবা বাইরে, হাটে-ঘাটে বা রাস্তায়।


দিল্লীর এই তরুণীটিকে দেশটির সরকার বীর হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তার মৃত্যুকে ‘বীরোচিত মৃত্যু’র আখ্যা দেওয়া হয়েছে। অথচ চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলা হচ্ছিল ধীরে ধীরে মেয়েটির অবস্থাুর উন্নতি হচ্ছে। তাহলে কি এসব ফাঁকা বুলি ছিল। এসব কি কেবল ভারত সরকারের ভিত নড়িয়ে দেওয়া আন্দোলন দমন করার জন্যই বলা হচ্ছিল। কেন মেয়েটিকে এতদিন পর বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হলো? কেন আরো আগেই আরো বেশি উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলো না? এসব প্রশ্ন এখন সহজেই সামনে এসে যায়।


গত ১৬ ডিসেম্বর দিন শেষে রাত গভীর হওয়ার আগেই ছেলে বন্ধুকে নিয়ে সিনেমা দেখে বাাড়ি ফেরার পথে ছয় নরপশুর নির্মম লালসার স্বীকার হয় তরুণীটি, সঙ্গে তার বন্ধুটিও। একথা এখন আর কারো অজানা নেই। তারপর থেকে মেয়েটির বেঁচে থাকার তীব্র আকাঙ্খা, দিল্লীর প্রতিটি সংবেদনশীল মানুষকে তীব্র নাড়া দিয়েছে। তাই এমন অনেকেই যারা কোনো গণ্ডগোল দেখে পাশ কাটিয়ে চলে যান, তারা আর বিবেকের তাড়নায় পাশ কাটাতে পারেন নি। রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন। দিল্লীসহ সর্ব ভারতে নারীর সর্বাগ্র নিরাপত্তার জোর দাবি উঠেছে। সাধারণ মানুষের ফুঁসে ওঠা স্বতর্স্ফূত বিক্ষোভে ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের ভীত নড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সরকার বিক্ষোভ দমনে চাতুরতার আশ্রয় নিয়েছে। একদিকে সোনিয়া গাণি¬ী, রাহুল গান্ধী বিক্ষোভকারীদের সমর্থন দিয়েছেন। আরেক দিকে সরকারের পেটোয়া বাহিনী নির্বিচারে পিটিয়েছে বিক্ষোভকারীদের। অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে বলছিলেন, ধর্ষকের বিচার চাইতে গিয়ে এ যেন পুলিশের হাতেই আবার ধর্ষিত হওয়া।

নির্মমতার শিকার মেয়েটি আমাদের ছেড়ে চলে গেছে


ভারতের দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমের বদৌলতে বিক্ষোভকারীদের অনেক ছবি দেখেছি। একটি প্ল্যাকার্ডে লেখাটা ছিল এমন, ‘পুলিশ তোমার গ্যাস বোমা বন্ধ কর। গ্যাস-বোমা দিয়ে আমাদের অশ্র“ ঝরানোর দরকার নেই। আমাদের চোখ এমনিতেই অশ্র“সিক্ত।’ আসলেই আমাদের আজ চোখ আজ আরো বেশি অশ্র“সিক্ত হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই অশ্র“কেই আমাদের শক্তি করে তুলতে হবে। এইসব ঘাতক-ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য জোর আন্দোলন করতে হবে। শুধু ভারত নয়, পৃথিবীর প্রতিটি দেশ নারীর বসবাসের জন্য নিরাপদ করতে হবে।


দিল্লীর যে তরুণীটি আজ আমাদের চোখে অশ্র“ ঝড়িয়ে চির দিনের জন্য জীবনের ওপারে চলে গেল, সে হয়তো আমার রক্তের সম্পর্কিত কেউ নয়। কিন্তু আমরা একই রঙের রক্ত মাংসের মানুষ, হতে পারত সে আমার বোন। আমার সে বোনের জন্য কি আমাদের কোনো কিছুই করার ছিল না? না আমরা কিছুই করতে পারিনি। সে কি কেবল ভারতীয় বলে। দেশ বিভাগের আগে আমাদের পূর্বপুরুষরা তো একই দেশের সন্তান ছিলেন। একজন তরুণীর ধর্ষিত হওয়ার মতো পৈশাচিক ঘটনা আমাদের হƒদয়ে কোনো নাড়া দেয়নি। ফেসবুক কিংবা ব্লগগুলোতে টুকরো টুকরো কিছু প্রতিক্রিয়া এসেছে, তেমন জোরালো নয় কিন্তু। এমন নয় যে আমাদের এই সোনার বাংলাদেশে এরকম ঘটনা ঘটেনা কখনো। সামনে যে ঘটবে না তাও কি নিশ্চিত করে বলতে পারি। আমরা কি নিশ্চিত যে আমাদের এই দেশে আমাদের মা-বোনদের সম্ভ্রমে আঘাত হানবে না কোনো নরপশু। তবে কি আমরা অপেক্ষা করব এমন একটি ঘটনার পুনরাবৃত্তির? না, তা নয়। তাই আমাদেরও জোর দাবি তোলা উচিত ধর্ষকদের নপুংসক করে দেওয়া।

প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের নির্মম পিটুনীর শিকারও হতে হয়েছে...
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৫০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×