সেক্টর আট এর ট্রেনটা নিঃশব্দে টানেল থেকে বের হতেই যান্ত্রিক গলায় ঘোষণা আসে, আপনারা এখন নিউক্লিয়ার যুদ্ধে ধংস হয়ে যাওয়া ত্রিটন শহর পার হচ্ছেন। তেজস্ক্রিয়তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জানালা খোলা থেকে বিরত থাকুন।ধন্যবাদ।
জানালাগুলো বন্ধ হয়ে যাবার আগে শেষবারের মত বাহিরে তাকায় রাতুল। দিগন্তরেখায় সবে মাত্র সূর্য উঠতে শুরু করেছে। ভাল করে দেখার আগেই জানালা বন্ধ হয়ে যায়।
আই গ্লাসে নীলার ছবি জ্বলতে নিভতে শুরু করেছে রাতুলের।নীলা ফোন করেছে ।রাতুল ইশারা করতেই নীলার গলা শুনতে পায়।
কোথায় তুমি?
-সেক্টর আটের ট্রেন এ, সময় মত পৌছে যাব।
ধন্যবাদ। নীলা লাইন কেটে দেয়।
সিটে হেলান দিয়ে পুরনো দিনগুলোতে ফিরে যায় রাতুল। রাতুল আর নীলা ওদের সেক্টরের সব থেকে পুরনো কাপল। কত মজাই না করেছে দুই জন মিলে এতদিন।স্কাই ড্রাইভ থেকে শুরু করে কান্সাস শহর কোথায় নিয়ে যায়নি রাতুল নীলাকে। নীলার সব আবদার পুরন করেছে। তারপরও নীলা রাতুলের সাথে সুখী না। কাল রাতে নীলা জানিয়ে দিয়েছে রাতুলের সাথে আর তার থাকা সম্ভব না। সে নতুন একটা পার্টনার খুজে নিয়েছে।
আজ রাতুল ও নীলার মেমরি সেন্টারে যাওয়ার দিন। আজকাল মেমরি সিনক্রনাইজ খুব জনপ্রিয় হয়েছে কাপল দের মাঝে। কাউকে আর পুরনো স্মৃতি বয়ে বেড়াতে হয় না। সবাই সুখী সবাই খুশি থাকতে চায়।
মেমরি সেন্টারের সামনে নীলাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে যায় রাতুল। সবুজ আর নীল মেশানো ড্রেসটায় কি অপরূপ না লাগছে আজ নীলাকে। রাতুল বলতে যায়, কিন্তু তার আগেই নীলা বলে ওঠে
সব সময় লেট করার অভ্যাস তোমার আর গেল না।
-সরি, আর সহ্য করতে হবে না আজই শেষ। মিনমিন করে জবাব দেয় রাতুল। শেষ মুহুর্ত নতুন করে ঝগড়া শুরু করার কোন ইচ্ছে নেই রাতুলের।
-চলো ভেতরে যায়।
হুম চলো।
রাতুলের খুব ইচ্ছে করে নীলার হাত ধরে হাটতে। নীলা সেই সুযোগ দেয় না।
মেমরি সেন্টার। ডক্টর মাথুর নীলার মাথায় হেডসেট বসায়। অল্পকিছু সময় পরেই নীলা এক অন্য মানুষ হয়ে যায়। ড . মাথুর রাতুল কে ডাক দেন।
এবার তোমার পালা, তুমি তৈরী তো?
- না, আমি তৈরী না । চিৎকার করে বলে রাতুল ছুটে বের হয়ে যায় মেমরি সেন্টার থেকে। নীলার স্মৃতি মুছে ফেলে বাঁচতে চায় না রাতুল। রাতুল ছুটছে আট নম্বর টানেল লক্ষ্য করে। সূর্য এখনো পুরোপুরি উঠেনি। আজ রাতুল সূর্যোদয় দেখবে। তেজস্ক্রিয় মাঠের প্রান্তরে দাড়িয়ে। খুব কাছ থেকে। রাতুল ছুটছে। দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই রাতুলকে পৌছাতে হবে ..