এশিয়া কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতকে হারানোয় ফাইনাল প্রায় নিশ্চিত পাকিস্তানের। শহীদ আফ্রিদির ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সুবাদে টান-টান উত্তেজনার লড়াইয়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা জিতেছে ১ উইকেটে।
Published : 02 Mar 2014, 02:07 PM
তিন খেলায় এটা পাকিস্তানের দ্বিতীয় জয়। বাংলাদেশকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে যাওয়ায় বিদায়ের পথে ভারত।
রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ২৪৫ রান করে ভারত। জবাবে ২ বল বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শারজিল খানের সঙ্গে আহমেদ শেহজাদের ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি চমৎকার সূচনা এনে দিলেও ১১৩ রানে চার উইকেট হারিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে যায় পাকিস্তান।
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে রান আউট হন অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচে শতক করা উমর আকমল ফেরেন ৪ রান করে।
পঞ্চম উইকেটে শোয়েব মাকসুদের সঙ্গে মোহাম্মদ হফিজের ৮৭ রানের জুটি ৪ উইকেটে ২০০ রানে পৌঁছে দেয় পাকিস্তানকে। কিন্তু ৩ রানের ব্যবধানে দুজনকেই বিদায় করে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত।
১১৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৭৫ রান করে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে ভুবনেশ্বর কুমারের হাতে ধরা পড়েন হাফিজ। আর রান আউট হন মাকসুদ।
উচ্চাভিলাষী শট খেলতে গিয়ে উমর গুল ও মোহাম্মদ তালহার বিদায় বিপদ আরো বাড়ায় পাকিস্তানের।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১০ রান। অশ্বিনের করা ঐ ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে দুটি বিশাল ছক্কা মেরে দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়ার কৃতিত্ব শনিবার ৩৪তম জন্মদিন পালন করা আফ্রিদির। ৩৪ রানে অপরাজিত আফ্রিদির ১৮ বলের ইনিংসে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা।
ভারতের পক্ষে অশ্বিন ৩ উইকেট নেন ৪৪ রানে।
এর আগে তৃতীয় ওভারেই শিখর ধাওয়ানের বিদায়ে শুরুটা ভালো হয়নি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের। তবে রোহিত শর্মার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং রান এনে দিচ্ছিল।
যদিও দশম ওভারে দারুণ ছন্দে থাকা অধিনায়ক বিরাট কোহলি বিদায় নিলে বিরাট ধাক্কা খায় ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
তৃতীয় উইকেটে অজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি গড়ে রোহিত আউট হয়ে গেলে চাপ বেড়ে যায় আরো।
অভিষিক্ত মোহাম্মদ তালহার প্রথম ওয়ানডে উইকেটে পরিণত হওয়ার আগে ৫৬ রান করেন রোহিত। তার ৫৮ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও দুটি ছক্কা।
এরপর রাহানেও রোহিতকে অনুসরণ করলে স্কোর দাঁড়ায় ১০৩/৪।
পঞ্চম উইকেটে দীনেশ কার্তিকের (২৩) সঙ্গে ৫২ ও ষষ্ঠ উইকেটে রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে ৫৯ রানের দুটো ভালো জুটি গড়ে ভারতকে লড়াইয়ে ফেরান আম্বাতি রাইডু।
সাঈদ আজমলের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৫৮ রান আসে রাইডুর ব্যাট থেকে। ৬২ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৪টি চার ও একটি ছক্কা।
দলকে আড়াই শ’র কাছাকাছি পৌঁছে দিতে ভালো অবদান শততম ম্যাচ খেলতে নামা জাদেজারও। ৫২ রানে অপরাজিত এই অলরাউন্ডারের ৪৯ বলের আক্রমণাত্মক ইনিংসটি ৪টি চার ও দুটি ছক্কায় সাজানো ছিল।
৪০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সেরা বোলার অফস্পিনার আজমল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫০ ওভারে ২৪৫/৮ (রোহিত ৫৬, ধাওয়ান ১০, কোহলি ৫, রাহানে ২৩, রাইডু ৫৮, কার্তিক ২৩, জাদেজা ৫২*, অশ্বিন ৯, সামি ০, মিশ্র ১*; আজমল ৩/৪০, তালহা ২/২২, হাফিজ ২/৩৮, গুল ১/৬০)
পাকিস্তান: ৪৯.৪ ওভারে ২৪৯/৯ (শারজিল ২৫, শেহজাদ ৪২, হাফিজ ৭৫, মিসবাহ ১, আকমল ৪, মাকসুদ ৩৮, আফ্রিদি ৩৪*, গুল ১২, তালহা ০, আজমল ০, জুনায়েদ ১*; অশ্বিন ৩/৪৪, মিশ্র ২/২৮, ভুবনেশ্বর ২/৫৬)
ম্যাচ সেরা: মোহাম্মদ হাফিজ।